কংগ্রেস ছাড়লেন একে অ্যান্টনির ছেলে অনিল, BBC তথ্যচিত্র নিয়ে সরব হন তিনি। গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে বিবিসি্র তথ্যচিত্রের বিষয়ে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা এবং কেরালার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির ছেলে অনিল অ্যান্টনির পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে বিজেপি। বুধবার তিনি কংগ্রেস থেকেও ইস্তফা দেন। এর আগে, অনিল অ্যান্টনি বলেন, বিবিসির মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করবে। বিবিসির এই ডকুমেন্টারিতে গুজরাট দাঙ্গার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির তথ্যচিত্রের দ্বিতীয় পর্ব গতকাল সম্প্রচারিত হয়েছে। এদিকে বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলি বিভিন্ন জায়গায় এই তথ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করে গতকাল। যা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। বহু জায়গায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। জেএনইউ-তেও তথ্যচিত্রকে কেন্দ্রকরে ধুন্ধুমার কাণ্ড হয়। এসএফআই আগামী ২৭ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তথ্যচিত্র দেখানোর আয়োজন করেছে বলেই খবর।
পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, "গতকালের ঘটনা বিবেচনা করে, আমি বিশ্বাস করি যে কংগ্রেস ছেড়ে যাওয়া আমার পক্ষে উপযুক্ত.. আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, বিশেষ করে কেরালা রাজ্য নেতৃত্ব এবং ডঃ শশীকে। থারুর আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।"
তথ্যচিত্র নিয়ে কী বললেন অনিল?
তিনি টুইটারে বলেছেন যে বিজেপির সঙ্গে সমস্ত মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, বিবিসি এবং প্রাক্তন ব্রিটিশ বিদেশ সচিব জ্যাক স্ট্রের মতামতকে যেভাবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে তা দেশের পক্ষে একটি ক্ষতিকর এবং এই ধরণের পদক্ষেপ দেশের সার্বভৌমত্বকে প্রভাবিত করতে পারে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা এ কে অ্যান্টনির ছেলে অনিল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। বুধবার সকালে কংগ্রেসের সব পদ থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন অনিল অ্যান্টনি। পদত্যাগপত্র টুইট করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে তৈরি বিবিসির ‘বিতর্কিত তথ্যচিত্রে’র বিরোধিতা করার একদিন পরই তিনি পদত্যাগ করেন।
অনিল অ্যান্টনি বিবিসির ‘বিতর্কিত তথ্যচিত্র’ নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করেছিলেন। অনিল বলেন, দলের তরফে আমাকে আমার টুইট মুছে দিতে বলা হয়েছিল, কিন্তু আমি তা প্রত্যাখ্যান করেছি। যারা মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেন, তারা আমাকে টুইট মুছে ফেলার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
অনিল অ্যান্টনি মঙ্গলবার বলেছেন ‘যারা ব্রিটিশ চ্যানেল এবং ব্রিটেনের প্রাক্তন বিদেশসচিব জ্যাক স্ট্রের মতামতকে সমর্থন করে এবং মেনে চলে তারা, দেশের পক্ষে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে চলেছেন। কারণ ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধের পিছনে ছিল জ্যাক স্ট্রে। তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে বড় মত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমি মনে করি এটি আমাদের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুন্ন করবে।
অন্যদিকে, বিবিসির বিতর্কিত এই তথ্যচিত্র দেখানোর কথা ঘোষণা কেরালা কংগ্রেস ইউনিট। ডিওয়াইএফআই, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) ছাত্র শাখা মঙ্গলবার তার ফেসবুক পেজে ঘোষণা করেছে যে এটি রাজ্যে প্রদর্শিত হবে। বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআইওই একই কথা জানিয়েছে। একইসঙ্গে তথ্যচিত্র দেখানোর সিদ্ধান্তকে ‘দেশদ্রোহিতা’ বলে অভিহিত করেছে বিজেপি। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীকে অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার এবং এই ধরনের প্রচেষ্টা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।