লোকসভাতে দারুন ফল। সাতে সাত। কিন্তু, শত চেষ্টাতেও বিধানসভা ভোটে দিল্লির মসনদ অধরাই থাকল বিজেপির। প্রচারে দলীয় নেতৃত্বের অনেকেই বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। হারের কারণ হিসাবে এই বিষয়টিকেই দায়ী করেছেন অমিত শাহ। অনেকেই আবার রাজধানীর ভোটে বিজেপির পতনের জন্য দুষেছেন দলের দিল্লি সভাপতি মনোজ তিওয়ারিকে। কেন দলের হার? কী বলছেন মনোজ তিওয়ারি? সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংবাদিক অভিনব রাজপুত, রাহুল সাভারওয়াল ও লিজ ম্যাথু।
প্রশ্ন: 'গোলি মারো', 'বোতাম টিপলেই কারেন্ট মারবে' এই সব বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যকেই দিল্লির হারের জন্য দায়ী করেছেন দলীয় নেতৃত্ব। আপনার কী প্রতিক্রিয়া?
উত্তর: শাহিনবাগ নিয়ে গতকালও দলের যা অবস্থান ছিল আজও তাই রয়েছে। সিএএ নিয়ে নিরিহ মানুষদের ভুল বুঝিয়ে যারা বিক্ষোভ করার জন্য উস্কচ্ছেন তাদের সঙ্গে বিজেপি সহমত নয়।
প্রশ্ন: সিএএ বাতিলের দাবি করছে শাহিনবাগ। তারা বলছেন আলোচনার জন্য সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না। বিজেপি কেন প্রতিবাদীদের সঙ্গে কথা বলছে না?
উত্তর: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবীশঙ্কর প্রসাদ প্রথম শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের কথা বলার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারা আসেননি। এটা স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, ১০,০০০ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা অসম্ভব। আন্দোনকারীদের প্রতিনিধি নির্ধারণ করতে হবে কথা বলার জন্য। এই কাজটিই তাঁরা করে উঠতে পারেননি। প্রতিবাদীরা আলোচনায় আসেননি। পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রস্তাব দেন আলোচনার জন্য। সেক্ষেত্রেও তারা এমন পদক্ষেপ করলেন যে, কার্যত আলোচনা সম্ভব নয়।
হ্যাঁ, তাঁদেরকে নিশানা করে কিছু বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করা হয়েছে। যা আমরা সমর্থন করি না। আমাদের দলের যাঁরা ঘৃণ্য মন্তব্য করেছেন, দল তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলেছে। তবে, মানতেই হবে যে, শাহিনবাগ থেকেও বেশ কিছু কটূ মন্তব্য করা হয়েছে। আমরা সেগুলোরও নিন্দা করি।
প্রশ্ন: বিজেপি সাংসদ পরভেশ ভর্মা কেজরিওয়ালকে সন্ত্রাবাদী বলেছিলেন। আপনার পাশে বসেই সেই মন্তব্যের পক্ষে কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
উত্তর: আমি তার নিন্দা করি। ভোটের আগেই নিন্দা করেছিলাম। যারা দেশ বিরোধী তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার সব সংস্থান ভারতীয় সংবিধানে রয়েছে। আর আমার সংমবিধানের উপর আস্থা রয়েছে।
আপনি ঠিক বলেছেন। অবশ্যই জাভড়েকরজি ওই কথা বলেছিলেন। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমার দুটি কথা রয়েছে। বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জন্য ভোটে দলের ক্ষতি হয়েছে এবং সেদিনের মত আজও সেসব কথায় আমরা সমানোচনা করছি।
প্রশ্ন: ডিসেম্বরে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র কনট প্লেসে সিএএ-র পক্ষে ব়্যালি করেছিলেন। সেখানেই তো 'গোলি মারো' স্লোগান দিয়েছিলেন।
উত্তর: এটা ঘটার সময় আমি জানতাম না। আমি চাই, কেউ বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করলেই এবার থেকে তাঁকে আর ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে না। আইন করে এই বিষয়টি করতে হবে। আমানাতুল্লা খান থেকে ওয়েইসি সবার এটা মেনে চলা উচিত। মনে রাখবেন, আমাদের দেশ খুবই সুন্দর।
প্রশ্ন: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সমন্ধে মানুষকে বোঝাতে বিজেপি ব্যর্থ হয়েছে বলে কী আপনি মনে করেন?
উত্তর: আপনি ঠিক বলেছেন। বহু চেষ্টা সত্ত্বেও মানুষকে আমরা বোঝাতে পারিনি। আমি বহু জনের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি যে সিএএ নিয়ে অধিকাংশের আপত্তি নেই। কিন্তু, এনআরসি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যদিও এনআরসি এখনই লাগু হবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন সেই কথা। আমরাই বোঝাতে পারিনি। ফলে ভোটেও তার লাভ তোলা যায়নি।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন