ডেঙ্গি মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরামর্শ নিতে পারে উত্তর প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং-এর কাছ থেকে। সম্প্রতি এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন পর্যবেক্ষক তথা উত্তর প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং স্বয়ং। রবিবার কলকাতার রোটারি সদনে ন্যাশনালিস্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বিজেপির মেডিক্যাল সেল আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "বেশ কিছুদিন ধরেই সংবাদপত্রে দেখছি, পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর বেরোচ্ছে। গত বছর উত্তর প্রদেশেও ডেঙ্গি একটা বিরাট সমস্যার আকার নিয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেখানে ডেঙ্গিতে একজনও মারা যাননি। আমাদের রাজ্যে ২৩ কোটি মানুষ। আমরা যদি এটা পেরে থাকি, তা হলে ৯ কোটি মানুষের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ পারবে না কেন?" এর পরেই তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী চাইলে আমাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন।"
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেঙ্গিতে মৃত দুই, উল্লেখ নেই ডেথ সার্টিফিকেটে
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধিনস্থ NVBDCP-র একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৫ সালে এ রাজ্যে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৪ জন, উত্তরপ্রদেশে ৯। ২০১৬-তে যেখানে কলকাতায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫, সেখানে উত্তর প্রদশে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয় ৪২ জনের। এরপর ২০১৭-তে পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৬, উত্তরপ্রদেশে ২৮ এবং চলতি বছর উত্তর প্রদেশে ডেঙ্গিতে কারও মৃত্যু হয়নি। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গিতে মৃত্যু নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি রাজ্য সরকার। এই নিয়ে বিরোধিদের বক্তব্য, ডেঙ্গিতে মৃতের সংখ্যা কার্যত ধামা চাপা দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।
বলাই বাহুল্য, সিদ্ধার্থনাথের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁর মন্তব্যকে আক্রমন করে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বিজেপির নিজের মুখটা আগে আয়নায় দেখা উচিত, সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে অক্সিজেনের অভাবে যেভাবে শিশু মৃত্যু হয়েছে, সেই কারণে লজ্জা পাওয়া উচিত।" পাশাপাশি শোভনদেব আরও বলেন, "রাজনীতি করতেই এসব বলছে বিজেপি।" সিদ্ধার্থনাথের এই মন্তব্য আসলে "অজ্ঞতার পরিচয়" বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার নানা বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পুরস্কৃত করছে। উন্নয়নমূলক কাজে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলা অনেক এগিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকার সে কথা স্বীকারও করছে। এদিকে উনি আমাদের পরামর্শ দিতে চাইছেন। এটা হতে পারে রাজনীতির কারণে, অথবা অজ্ঞতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।"