সম্মানহানির অভিযোগে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে নোটিশ পাঠালেন দেবেন্দ্র ফড়নবিস। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন অনিল দেশমুখ। এই দাবি করে পাঠানো হয়েছে নোটিশ। এই বিষয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিরোধী দলনেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেন, ‘মঙ্গলবার অনিলজি অভিযোগ করেছেন ২০১৮ সালের অন্বয় নায়েক আত্মহত্যা-কাণ্ড আমি নাকি ধামাচাপা দিয়েছি।‘ ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গত বছর গ্রেফতার হয়েছিলেন সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী। সেই গ্রেফতারি নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর।
এদিন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট জামিন মামলার শুনানিতে বলেছে মুম্বাই পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ অর্থাৎ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে যে এফআইআর করেছে, সেটা ভুল। তাই দেশমুখজি যে দাবি করেছেন, সেটা আদালত অবমাননার সমান। এমনকি, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিধানসভায় আমার দায়িত্ব পালনের অন্তরায়।‘
এদিকে, এই বিষয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার নরহরি জিরওয়াল বলেছেন, ‘তিনি ফড়নবিসের নোটিশ পরীক্ষা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।‘ এদিকে, মনসুখ হিরন রহস্যমৃত্যু মামলায় মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তকারী অফিসার শচিন ভাজেকে সরিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। চাপে পড়েই এই সিদ্ধান্ত। এমনটাই বিধানসভায় দাবি করেন ফড়নবিস।
অপরদিকে, ম্বইয়ের ব্যবসায়ী মনসুখ হিরেনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ আধিকারিক শচীন ভাজের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠতেই বুধবার তাঁকে পদ থেকে অপসারিত করল মহারাষ্ট্র সরকার। মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসারের বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ এনেছেন বিমলা হিরেন। প্রসঙ্গত, রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানির বাড়ির সামনে উদ্ধার বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ির মালিক ছিলেন মনসুখ। কয়েকদিন আগে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরই নতুন করে রহস্য দানা বাঁধে।
এদিন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বিধানসভায় জানিয়েছেন, ক্রাইম ব্রাঞ্চের বর্তমান পোস্টিং থেকে সরানো হয়েছে শচীন ভাজেকে। যতদিন না এই ঘটনার তদন্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে বিরোধীদের দাবি মেনে শচীন ভাজেকে তদন্ত থেকে দূরে রাখা হবে। যদি অফিসারের যোগসাজশ প্রমাণিত তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবারই বিমলা হিরেন মুম্বই পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখাকে বয়ান দেন যে, ওই পুলিশ আধিকারিক গত বছর নভেম্বর থেকে এবছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত স্করপিও গাড়িটি ব্যবহার করেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, শচীন তাঁর স্বামীকে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দেন এবং আশ্বস্ত করেন জামিন পাওয়ার।
গত শুক্রবার মনসুখের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হয় বিরোধী দল বিজেপি। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মনসুখের স্ত্রীর বয়ান পড়ে শোনান দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ। দাবি করেন, যদি এটা খুন না হয়েও থাকে তাহলেও গ্রেফতার করা উচিত শচীন ভাজেকে। তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারে আশঙ্কায় পুলিশ আধিকারিকের দ্রুত গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছেন ফড়ণবিশ। তাঁর দাবি, কেউ শচীনকে সুরক্ষা দিচ্ছে।
এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন শচীন। মুম্বই পুলিশের এনকাউন্টার স্পেশ্যালিস্ট শচীন প্রায় ১৬ বছর সাসপেন্ড ছিলেন। ২০০৩ সালে ২৭ বছরের খোয়াজা ইউনুস নামে এক যুবকের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড হন শচীন। গত বছর জুন মাসে সাসপেনশন ওঠে তাঁর। কিছুদিন আগে ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইনচার্জ পদে বসেন শচীন।