মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী বদলাতে দিল্লিতে বৈঠক চলছে, গোপন খবর ইতিমধ্যেই ফাঁস করেছেন সঞ্জয় রাউত। মুখ্যমন্ত্রী পদে একনাথ শিণ্ডেকে বিজেপি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। আর, শিণ্ডেকে সরাতেই বিজেপি নেতারা দিল্লিতে গিয়েছেন। এবার এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন শিবসেনার উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে (এসইউবিটি) সংগঠনের নেতা তথা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। এর আগে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) নেতা ছগন ভুজবল দাবি করেছিলেন, মহারাষ্ট্র সরকারে কোনও সংকট নেই।
তবে, দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে রদবদল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে। ছগন ভুজবলের এই মন্তব্যের পরবর্তী অংশ হিসেবেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন উদ্ধব ঠাকরের ঘনিষ্ঠ নেতা সঞ্জয় রাউত। তাঁর দাবি, বিজেপি মনে করছে মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের জেরে দলের ক্ষতি হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে শিণ্ডেকে সরাতে মরিয়া বিজেপি। এর পাশাপাশি অজিত পাওয়ারের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে চূড়ান্ত জল্পনা চলছে। গত সপ্তাহেই এক সাংবাদিক সম্মেলনে অজিত পাওয়ারের মুখে শোনা যায় মোদীর ঢালাও প্রশংসা।
পাশাপাশি তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশও করেছেন। এনসিপি নেতা এবং শরদ পাওয়ারের ভাগ্নে অজিত পাওয়ার মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নিয়মিত আলোচনায় রয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে অজিত পাওয়ার বলেন, মোদীর ক্যারিশ্মাই দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। তিনি বলেন, ‘যে কাজটি অটল বিহারী বাজপেয়ী, এলকে আডবানি, মুরলি মনোহর যোশীর মতো নেতারা করতে পারেননি, তা নরেন্দ্র মোদী করে দেখিয়েছেন’। অজিত পাওয়ারের মতে, নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশ্মাতেই বিজেপি ২০১৪ এবং ২০১৯ লোকসভা ভোটে জয়লাভ করে। ১৯৮৪ সালের পর, ২০১৪ সালে, নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশ্মাতেই পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করতে পেরেছে বিজেপি।
অজিত পওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তো মোদী দেশের জনগণের ভোটে জিতে এসেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়ে নয়। এটা ওঁর ক্যারিশ্মা। ওঁর একটা ব্যক্তিত্ব রয়েছে, সেই সাহায্যেই বিপুল জয় পেয়েছে।’ অজিত পাওয়ার আরও বলেন, যে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এনসিপি সর্বদাই দ্বিতীয় পজিশনে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, সুযোগ পেলে তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতেও প্রস্তূত’। এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারের বিজেপিতে যোগদানের খবর জোরালো হচ্ছে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে তিনি রাজনৈতিক মহলে এই গুজব আরও জোরদার করেছেন।
তিনি ২০০৪ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, সেই নির্বাচনে এনসিপি ৭১টি আসন পেয়েছিল এবং কংগ্রেস ৬৯টি আসন পেয়েছিল। আর আর পাটিলকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করা হয়। তবে তিনি বলেন, ২০২৪ কেন, এখন বললেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে প্রস্তুত। অজিত পাওয়ারের এই বক্তব্য এমন সময়ে এল যখন মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বিজেপির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়ে জল্পনা জোরদার হচ্ছে। এর মধ্যে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) মুম্বইতে এনসিপির একদিনের সম্মেলনেও যোগ দেননি তিনি। এসবের মাঝেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা গেল উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নাভিস গলায়।
তিনি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মলেনে দাবি করেন রাজ্যে যাই ঘটুক না কেন, ২০২৪ বিধানসভা নির্বাচন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কোমর বেঁধে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে চলেছে। তিনি বলেন, “এই সরকার পুরোপুরি স্থিতিশীল। ২০২৪ সালের নির্বাচন এই সরকারই শিন্ডের নেতৃত্বেই লড়বে। একনাথ শিন্ডে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন থাকবেন এবং তাঁর নেতৃত্বে দল নির্বাচন লড়বে”।
শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপিতে বিরোধ সম্পর্কে একটি প্রশ্নের উত্তরে ফড়নবীস বলেছিলেন, “আমার কোনও ধারণা নেই। আমি এনসিপির মুখপাত্র নই এবং অজিত পাওয়ারের মুখপাত্রও নই। ভবিষ্যতে বিজেপি এবং এনসিপি জোট নিয়ে করা প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, "এই ধরনের প্রশ্ন অলীক কল্পনা”।