একুশে বাংলায় কি পালাবদল ঘটবে? লোকসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে অন্তত তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একাংশ। ২০২১ সালে বাংলার ভার বিজেপির হাতে উঠলে, মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে কে বসবেন? বঙ্গ বিজেপির এমন মুখই বা কে? এ প্রশ্ন ঘিরে ইতিমধ্যেই চর্চা চলছে বঙ্গ রাজনীতির অলিন্দে। এই প্রেক্ষাপটেই এবার সরাসরি এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন দিলীপ ঘোষ। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে কি বসবেন দিলীপ ঘোষ? জবাবে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘দল আমাকে বিধানসভায় লড়তে বলেছিল, লড়েছি। লোকসভায় লড়তে বলেছে লড়েছি। যদি দল আর কোনও দায়িত্ব দেয়, তখন সেই কাজ করব, আপাতত সংসদে যাচ্ছি’’। দিলীপ আরও বলেন, ‘‘বাংলার ভবিতব্য বিজেপির হাতে’’।
একুশে বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে কি মুখ্যমন্ত্রী হবেন দিলীপ ঘোষ? কী বললেন দেখুন pic.twitter.com/VuieZhRCh4
— IE Bangla (@ieBangla) June 4, 2019
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দিলীপ ঘোষ
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে এবার বাংলায় উত্থান ঘটেছে বিজেপির। ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টিতেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। অমিত শাহর ২৩টি আসনে জেতার টার্গেট পূরণ না হলেও, যেভাবে শাসকদলের কান ঘেঁষে রয়েছে গেরুয়াবাহিনী, তাতে বাংলায় এবার অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে বঙ্গ বিজেপি। উনিশের লোকসভার লড়াইকে কেউ কেউ ‘সেমিফাইনাল’ বলেও বর্ণনা করেছেন। সেমিফাইনাল ম্যাচে বঙ্গ বিজেপির এমন ‘চমকপ্রদ’ পারফরম্যান্সের পর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফাইনাল ম্যাচ জিততে মরিয়া দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা। ইতিমধ্যেই ২০২১ সালে বাংলায় বঙ্গ বিজেপিকে ১৮০টি আসনে জেতার টার্গেট বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে, এই একটা প্রশ্নেরই কোনও উত্তর নেই মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির দফতরে। মুকুল না দিলীপ নাকি অন্য কেউ জল্পনা-বিতর্ক ক্রমশ দানা বাঁধছে।
আরও পড়ুন: মুকুল-দিলীপ কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে চান না! কারণ কী?
এবার লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় পদ্মবাহিনীর সাফল্যের অন্যতম কারিগর মুকুল রায়। তাঁর হাত ধরে রাজ্যের শাসক দল থেকে হেভি ওয়েটরা একে একে ভিড় জমাচ্ছে পদ্ম শিবিরে। এদিকে, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর উনিশের লোকসভা নির্বাচনেও জয়ের ধারা অক্ষুণ্ণ রেখেছেন দিলীপ। এমনকি দলীয় সংগঠনকে মজবুত করার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সূত্রের খবর, এই দুই হেভিওয়েট নেতার কেউই এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে পা বাড়াতে চাননি। কারণ একটাই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হলে রাজ্যে রাশ অনেকটাই আলগা হয়ে যেতে বাধ্য। কারণ, মন্ত্রীমশাইকে ব্যস্ত থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক নিয়ে। ফলে আগামী দিনে রাজ্যের প্রধান দায়িত্ব (পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি) পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যেতে পারে। তাই, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী না হলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। রাজ্য বিজেপির দুই প্রধান নেতার ঘনিষ্ঠ মহল অন্তত এমনটাই মনে করছে। সেই প্রেক্ষাপটে দিলীপের এদিনের মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।