নির্বাচনী ভরাডুবি হয়েছে। দলের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনা বিষাদের রূপ ধারণ করেছে। এই পরিস্থিতিতে দলের দুর্গাপুজোর আয়োজনের আগ্রহেও বিজেপিতে ভাটার টান। বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। কিন্তু ইজেডসিসি-তে আদৌ গেরুয়া উদ্যোগে পুজো হবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই দলীয় দুর্গাপুজো নিয়ে মহালয়ার সকালে মুখ খুললেন সর্বভারতীয় বিজেপির সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। সাউ জানালেন, 'পুজো করাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তা ভোট দেখে করা উচিত নয়। বিধি মেনেই পুজোর আয়োজন হওয়া প্রয়োজন।'
গত বছর ইজেডসিসি-তে মহাধুপধাম করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে ভার্চুয়ালি সেই পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পুজোর উদ্যোক্তা ছিল দলের মহিলা মোর্চা। এবার আর তেমন আয়োজন চোখে পড়ছে না। যা রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। পদ্ম শিবিরকে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না রাজ্যের শাসক শিবির সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি।
আরও পড়ুন- নিস্তার নেই মহালয়াতেও, কলকাতা সহ দঃবঙ্গে আজও বৃষ্টির ভ্রুকূটি
এবার কী তাহলে ভোট নেই বলেই পুজো নেই? এ প্রসঙ্গ উঠতেই ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে শেষে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'পুজোর বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে, পুজো বিধি অনুযায়ী হওয়া উচিত। ভোট দেখে পুজো করা ঠিক নয়। যারা পুজো করেছিলেন তাঁদের এটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিত। পুজো করতে আপত্তি নেই, কয়েকজন মিলে পুজো করতেই পারেন। যেহেতু এবার বড় বড় পুজো হচ্ছে না, একটা হলের মধ্যে পুজো হলে ভালোই হবে। লোকজন দেখতে পাবেন।'
আরও পড়ুন- এবারও দুর্গা কার্নিভালে ‘না’ নবান্নের, জারি ১১ দফা নির্দেশিকা
দলের উদ্যোগে দুর্গাপুজো নিয়ে বিজেপির অন্দরে মতপার্থক্য প্রকট। দলের একাংশ গতবছর ভোটের আগে সংগঠনগতভাবে পুজো করতে আগ্রহী হলেও তাতে সায় ছিল না তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তাঁকে দেখাও যায়নি। এই প্রসঙ্গে তাঁর অবশ্য যুক্তি, 'কোভিড হওয়ায় আমি গতবছর পুজোয় অংশগ্রহণ করিনি।'
কিন্তু, দলীয় উদ্যোগে পুজোতে যে দিলীপের সায় নেই তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন তিনি। দিন কয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন যে, 'পুজো করাটা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। আমি প্রথম থেকে পুজোর পক্ষে ছিলাম না। তবে, দলের কয়েকজন নেতা আগের বছর দুর্গাপুজো করেছিলেন, এবারও করবেন। দলের তরফে কোনও দুর্গাপুজো করা হয় না।'
দুর্গাপুজো নিয়ে বিজেপির অন্দরের এই ডামাডোলকে হাতিয়ার করে মুখ খুলছেন প্রতিপক্ষ শিবির। তাই এবার পুজো বন্ধ হলে তা দলের বিরুদ্ধে যেতে পারে। যার ফল ভুগতে হতে পারে পদ্ম বাহিনীকে। তাই যাতে পুজোটা অন্তত হয় সেই চেষ্টাই করছেন মুরলীধর সেন লেনের নেতৃত্বের একাংশ। শেষ পর্যন্ত আদৌ এই উদ্যোগ ব্সাতবায়িত হচ্ছে কিনা সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন