বিজেপির যুব নেতা মণীশ শুক্ল খুনের পর বিহার ও উত্তরপ্রদেশের মাফিয়া রাজের সঙ্গে তুলনা করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার রাতে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের টিটাগর থানার সামনে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে অজ্ঞাত পরিচয় ৩-৪জন দুষ্কৃতী গুলি করে ঝঁঝড়া করে দেয় এই যুবনেতাকে। তারপর থেকেই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল উত্তপ্ত। সোমবার দিলীপ ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ধীরে ধীরে উত্তর প্রদেশ এবং বিহারের মতোন মাফিয়া রাজ্যে পরিণত হচ্ছে। একজন প্রাক্তন কাউন্সিলার ও আইনজীবীকে স্টেনগান দিয়ে ঝাঁঝরা করে দেয়া হচ্ছে। তার গায়ে বারোটা গুলি লেগেছে। মাথাতেই লেগেছে চারটে গুলি। একজন জনপ্রিয় যুবনেতা এভাবে প্রকাশ্যে গুলি করে মারা হল তাতে এটা পরিস্কার পশ্চিমবঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই।
রবিবার এবং উত্তরপ্রদেশ- এই দুই রাজ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে রয়েছে পদ্ম শিবির। যখন, হাথরাসে দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল দেশ। বিরোধী নিশানায় বিজেপি। প্রশ্ন উঠছে উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে তখনই পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে শেষমেশ উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের সঙ্গে তুলনা করে ফেললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। অভিজ্ঞমহলের মতে, নিজের মন্তব্যের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে যে মাফিয়ারাজ চলে তা একপ্রকার স্বীকারই করে নিলেন দিলীপ ঘোষ।
পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'এভাবে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হলে রাজ্যে নির্বাচন ঠিকভাবে হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ সন্দেহ রয়েছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, পুলিশ ঘটনার সমস্ত কিছু জানে। থানার সামনে যেভাবে স্টেনগান নিয়ে ফায়ারিং হয়েছে তাতে পুলিশ জানে না এমনটা হতেই পারে না। বরং পুলিশ সুপারি কিলার পাঠিয়েছে তাকে খুন করবার জন্য। এর আগেও অনেকবার আমাদের সাংসদ অর্জুন সিং এবং অন্যদেরও হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল।'
দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় এ দিন ব্যারাকপুর-টিটাগড় অঞ্চলের একাধিক জায়গায়া বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি কর্মীরা। টায়ার জ্বালিয়ে, রাস্তা অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ।
নিহত দলীয় নেতার বাড়িতে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়।
এই ঘটনায় সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। এ দিন সকালে টিটাগড় পুরসভার প্রয়াত প্রাক্তন কাউন্সিলরের বাড়িতে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাতি মুকুল রায় ও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেনন।
এই ঘটনাকে 'তৃণমূলের অমানবিক ও রাজ্য সরকারের নৈরাজ্যের মুখ' বলে টুইট করেছেন মুকুল রায়।
অন্যদিকে কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের অভিযোগ, 'বাংলায় আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। থানার পাশে বিরোধী দলের জননেতা খুন হয়ে যাচ্ছে। সিবিআি তদন্তের দাবি করছি। কমিশনার মনোজ ভর্মা ও আইপিএস অজয় ঠাকুরের ভূমিকা খতিয়ে দেখার অনুরোধ করব।'
রবিবার বিজেপির যুব নেতা ও প্রাক্তন কাউন্সিলর খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির ডাকে ১২ ঘণ্টার বনধ চলছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন