উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণার আমফান ধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে কেন্দ্রীয় দল। ৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল হেলিকপ্টারের পাশাপাশি লঞ্চে করে বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা কথা বলেছেন সাইক্লোন দুর্গতদের সঙ্গে। প্রত্যক্ষ করেছেন ঝড়-জলের তান্ডবের চিত্র। ক্ষয়-ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করেছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে। দুই জেলা পরিদর্শনের পর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে শহরের এক পাঁচ তারা হোটেলে বিজেপি, কংগ্রেস ও সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব পৃথক পৃথক বৈঠক করেন।
সদ্য আমফানের দেওয়া কেন্দ্রের ১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমফান বিপর্যয়ে কেন্দ্র ইতিমধ্যে রাজ্যকে ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। সেই টাকা থেকে ৫ লক্ষ পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছে রাজ্য। আসলে ২-২.৫ লক্ষের বেশি বাড়িতে ওই টাকা যায়নি। সেটাও তৃণমলের লোকের বাড়িতে গিয়েছে। পাকা বাড়ির মালিকও টাকা পেয়েছে।পার্টিও কাটমানি নিয়েছে।" এই দুর্নীতি বন্ধ করতে বেশ কিছু দাওয়াইয়ের কথা বলেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি। তিনি বলেন, "সমীক্ষা করে পিড়িতদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র। এবার বাঁধ, রাস্তা, সেতু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা আসবে। সেই টাকা ঠিক মত ব্যবহার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের একজন নোডাল অফিসারকে নিয়োগ উচিত। কমপক্ষে ৬ মাসের জন্য বা একবছরের জন্য তিনি কাজ করবেন।"
শুধু সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বা নোডাল অফিসার নয় তিনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে কাজ করানোর কথাও বলেছেন। তাঁর অভিমত, "কেন্দ্রের কোনও এজেন্সি দিয়ে এই সব কাজকর্ম করানো হোক। আয়লার জন্য কেন্দ্র টাকা দিয়েছিল তা দিয়ে কাজ হয়নি। স্থায়ী বাঁধ হোক। স্থায়ী সমাধান করা হোক। তা না হলে রেশন কেলেঙ্কারি বা আয়লা, বুলবুল, ফনির মত একই অবস্থা হবে।" দিলীপের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন জাতীয় বিপর্যয়ের থেকে বড়। জাতীয় বিপর্যয় বলে কোনও টার্মস নেই সরকারের কাছে। তার চেয়ে কী বড় আমরা বুঝি না।" বিজেপি সভাপতির অভিযোগ, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বিধানসভার জন্য তৈরি হোন। অর্থাৎ টাকা পয়সা আসবে গুছিয়ে নিয়ে নির্বাচনে ফান্ড কর।" তাই কেন্দ্রকে দিলীপ ঘোষের পরামর্শ, "একটা ওয়েবসাইট বা অ্যাপ করুন যাঁরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না তাঁরা সেখানে অভিযোগ জানাতে পারবে।"
এদিন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্ব। কংগ্রেসের দাবি, ত্রাণ নিয়ে কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। আমফানকে জাতীয় বিপর্যয় হিসাবে ঘোষণা করার দাবিও জানিয়েছে কংগ্রেস।