Advertisment

মাস্ক দিয়ে যায় চেনা, রাজনীতির নয়া দেওয়াল লিখন

আপনার মাস্কই আপনার (রাজনৈতিক) পরিচয়- কতকটা এমনই যেন ধরে নিয়েছেন রাজনীতির কুশীলবরা। পোষাক-পরিচ্ছদ, মঞ্চ, বসার চেয়ার সর্বত্রই রাজনীতির রঙ দেখতে অভ্যস্ত চোখে মাস্ক নয়া আমদানি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

করোনা পরিস্থিতিতে রাজনীতি যেনও আরও চঞ্চল হয়ে উঠেছে। আর সেই চাঞ্চল্য থেকে ছাড় পায়নি করোনা প্রতিরোধী মাস্কও। আপনার মাস্কই আপনার (রাজনৈতিক) পরিচয়- কতকটা এমনই যেন ধরে নিয়েছেন রাজনীতির কুশীলবরা। পোষাক-পরিচ্ছদ, মঞ্চ, বসার চেয়ার সর্বত্রই রাজনীতির রঙ দেখতে অভ্যস্ত চোখে মাস্ক নয়া আমদানি। এখন চলছে মুখোশের পালা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ, বাড়ির বাইরে বের হলে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। মানুষ এখন তাই বাড়ির বাইরে মুখোশের আড়ালে। এই আবহে বিধানসভা নির্বাচন হলে হয়ত দেখা যাবে রাজনৈতিক দলের প্রতীক-রঙের মুখোশে বাজার ভাসবে। বাড়িতে বসেই হয়ত বিনা পয়সায় মিলবে মুখোশ, যা লকডাউনের সময় অন্যতম মহার্ঘ দ্রব্য।

Advertisment

লকডাউন শুরুর আগে ও প্রথম দিকে অষুধের দোকানে দড়জা দিয়ে মুখ বাড়াতেই দোকানী বলে দিতেন, ‘মাস্ক-তো, নেই’। এই ছিল রাজ্যে অধিকাংশ অষুধের দোকানের সামগ্রিক চিত্র। মুখোশের আড়ালে নয়, মুখোমুখি। অথচ এবার কিন্তু লড়াই সেই মুখোশের আড়ালেই। তাই বোধহয় মুখোশও রাজনীতির বাইরে থাকতে পারল না। মুখোশের রঙেই ধরা পড়ছে কে শাসক, কে বিরোধী। কে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত, আর কে পদ্ম শিবিরের।

করোনা পরিস্থিতি শুরু হতে লকডাউনের আগেই ৬, মুরলিধর লেনের সামনে মোদী নামাঙ্কিত মাস্ক বিলি করা হয়েছে। দিনটা ছিল ৪মার্চ। মাস্কে লেখা ছিল, 'সেভ ফ্রম করোনা ভাইরাস ইনফেকশন- মোদীজি'। নীচে লেখা বিজেপি(পশ্চিমবঙ্গ)। ছিল পদ্মফুল প্রতীক। দিন যত গড়িয়েছে গেরুয়া শিবির মুখোশ প্রতিযোগিতায় এগিয়েছে শুধু নয়, ঘাসফুল শিবিরকে বরং ছাপিয়ে গিয়েছে। এ বিষয়ে দলের অন্যান্যদের রীতিমতোন টেক্কা দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর পরিহিত মাস্কে দলের প্রতীক স্থান পেয়েছে ঠোঁটের উপরেই। কখনও কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে গেরুয়া রংঙের পদ্ম ফুল, বৃন্ত সবুজ। আবারও কখনও সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডে গেরুয়া রঙে পেনসিলে আঁকার ঢঙে পদ্ম। আবার সবুজ বর্ডারে গেরুয়া মুখোশ পড়তে দেখা গিয়েছে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহাকে। দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় অবশ্য মুখোশের আড়ালে নেই, তিনি গেরুয়া কাপড়ে মুখ ঢাকছেন সব সময়। এছাড়া বিজেপি নেতা-কর্মীদের গেরুয়া মুখোশ প্রায় সর্বত্রই।

শাসকদল তৃণমূল কিন্তু অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছে এই মুখোশের লড়াইয়ে। মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর সহযোগীদের প্রধানত এন৯৫ মুখোশ পড়তেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার পুর প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমকে অবশ্য অনেক সময় সবুজ রঙের মাস্ক পরতে দেখা গিয়েছে। যদিও এই রঙের সার্জিক্যাল মাস্ক বাজারে সহজলভ্য। তা বিশেষ ভাবে অর্ডার দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।

রাজনীতির সঙ্গে রঙের একটা আদিম সম্পর্ক আছে। শুধু পতাকার রঙের মধ্যেই দলীয় নেতা-কর্মীরা নিজেদের আবদ্ধ রাখেন না। রঙের কর্তৃত্ব চলে জনসভার মঞ্চ, চেয়ারের রঙ নির্ধারণের মধ্যেও। এমনকী অনুষ্ঠানে কার্পেটের রঙেও। তাছাড়া পোষাক পরিচ্ছদেও অনেকেই স্পষ্ট করে দেন তিনি এখন কোন শিবিরে রয়েছেন। এ সবের লড়াইতে ডান, বাম সকলেই আছেন। তবে মাস্কের রঙের লড়াইতে ময়দানে এখনও দেখা মেলেনি বামেদের।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus west bengal politics mask
Advertisment