যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘চরম হেনস্থা’র ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শরণাপন্ন হলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যাদবপুরের ঘটনা নিয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতিকে চিঠি লিখেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। সূত্রের খবর, শাহকে চিঠিতে দিলীপ লিখেছেন, ‘‘যে কাজ পুলিশের করা উচিত ছিল, সে কাজ রাজ্যপালকে করতে হয়েছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’’। জানা যাচ্ছে, যাদবপুরে বাবুল সুপ্রিয়কে ‘নিগ্রহে’র ঘটনায় অমিত শাহের সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছেন দিলীপ।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, ‘‘এটা বাংলার গণতন্ত্রের নমুনা। একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে যেভাবে হেনস্থা হতে হল, এটা পশ্চিমবঙ্গ বলেই সম্ভব’’।
আরও পড়ুন: ‘বাবুলের গায়ে যারা হাত দিয়েছে, তাদের হাত ভাঙব’, ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি দিলীপের
উল্লেখ্য, এবিভিপি আয়োজিত একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চরম হেনস্থা’র শিকার হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁকে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘিরে মুহূর্তেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বাবুলের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বাবুল সুপ্রিয়কে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং চুলের মুঠি ধরে টানা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁর চশমা খুলে নেওয়া হয়। প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ে ক্যাম্পাসে আটকে পড়েন বাবুল। শেষমেশ বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপালও। প্রথমে গাড়ি থেকে নেমে এগোনোর চেষ্টা করলেও পরে বিক্ষোভের আঁচ বুঝে ফের গাড়িতে গিয়ে বসতে হয় রাজ্যপালকে। এরপর ফের গাড়ি থেকে নেমে কোনওরকমে বাবুলকে সঙ্গে নিয়ে নিজের গাড়িতে বসেন রাজ্যপাল। বেশ কিছুক্ষণ রাজ্যপালের গাড়ি ঘেরাও করে রাখেন পড়ুয়াদের একাংশ। পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও ‘ব্যর্থ’ হয়। শেষমেশ কোনওক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ে রাজ্যপালের গাড়ি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় র্যাফ নামানো হয়।
আরও পড়ুন: ‘শাড়ি ধরে টানা হয়েছে’, যাদবপুরকাণ্ডে থানায় অভিযোগ অগ্নিমিত্রার
এদিকে, বাবুলকে হেনস্থার প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ের ঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, গতকাল বাবুলের পাশাপাশি বিজেপি নেত্রী তথা ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালকেও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে খবর।