"সর্বত্র বিলুপ্তপ্রায় কমিউনিস্টরা এখন বিশ্বভারতীতে উৎপাত করছে। আর এতে পরোক্ষ মদত দিচ্ছে রাজ্য সরকার।" বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিয়ে এভাবেই বামেদের কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
প্রতঃভ্রমণের পর ইকোপার্কেশনিবার দিলীপ ঘোষ বলেছেন, "কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সারা জীবনের সাধনার প্রতীক বিশ্বভারতী। বাংলার মানুষের কাছে এটা জাত্যাভিমানের জায়গা। এটা আমাদের পরিচিতি। সেটাকে নিয়েও রাজনীতি হচ্ছে। যারা সব জায়গা থেকে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, সেই কমিউনিস্টরা, তাদের কিছু লোক এটা করছে। বিশৃঙ্খলাকারী শক্তি এখন ওখানে গিয়ে ঢুকেছে। আর তাদের পরোক্ষ সমর্থম দিচ্ছে এই রাজ্য সরকার।"
রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, "কেন্দ্রের দ্বারা যা কিছু পরিচালিত হবে, তার সবটাকেই বিরোধিতা করতে হবে। এই ভূত তৃণমূলের মাথায় চেপেছে। এতে কার ক্ষতি হচ্ছে তা বুঝতে পারছে না। বিশ্বভারতীর মতো ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বদনাম হয় তা তো সারা বাংলার বদনাম। সারা দুনিয়াতে এই বার্তা যাচ্ছে যে, বিশ্বভারতীতে কিছু লোক গিয়ে উৎপাত করছে। পড়াশোনা করতে দিচ্ছে না। উপাচার্যকে ঘিরে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক গিয়েছেন দেখা করতে, তাঁকে পর্যন্ত দেখা করতে দেওয়া হয়নি। খেতে দেওয়া হয়নি। আমি জানি না, এই ধরনের শিক্ষা, কালচার বাংলায় ক’দিন চলবে। এটা শুরু করেছিল যারা মানুষ তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে। কিন্তু তারা এখনও অল্পস্বল্প যা অবশিষ্ট আছে, তারাই বাংলাকে শেষ করে দিয়ে যাবে।"
আরও পড়ুন- ‘তালা ভাঙুন-বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে কোনও বিক্ষোভ নয়’, কড়া নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
দিলীপ ঘোষের কটাক্ষের জবাবে সিপিএম নেতা সূজন চক্রবর্তী বলেন, "উনি উস্কানি দিচ্ছেন। আসলে আরএসএস প্রভাবিত বিজেপি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতীকে নিজেদের আদর্শে চালনার চেষ্টা করছেন। কিন্তু পড়ুয়ারা তার বিরোধী। তাই ওনার গায়ে লেগেছে।" তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, "দিলীপবাবুদের বাংলা ছুঁড়ে ফেলেছে। এবার ভারত থেকে তাড়ানো হবে। উপাচার্য দলীয় নির্দেশ মেনে কাজ করছে। পড়ুয়ারা তার প্রতিবাদ করেছে। অন্যায় দেখলে আবারও নিন্দা হবে। ভয়ে ওঁরা সবেতেই আঁতাঁত দেখবে।"
বিশ্বভারতীর তিন সম্প্রতি তিন বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে গত সপ্তাহে প্রথমে বিশ্বভারতীর সেন্ট্রাল অফিস এবং পরে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। চলে ঘেরাও। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনের ৫০ মিটারের মধ্যে কোনও বিক্ষোভ দেখানো যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও কর্মীকেও ক্যাম্পাসের ভিতর প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না। উপাচার্যের বাসস্থান সহ যেসব প্রশাসনির ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে তাও ভেঙে দিতে হবে। দুপুর তিনটে তালা ভাঙার কাজ করবে পুলিশ। শান্তিনিকেতন থানাকে বাড়াতে হবে উপাচার্যের নিরাপত্তা। এছাড়াও নির্দেশে বলা হয়েছে যে, বিশ্বভারতীর সব এলাকায় সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরাকে কার্যকর করেতে হবে। মাইকিং করা যাবে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন