বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একের পর বিতর্কিত মন্তব্যে তোলপাড় বাংলার রাজনীতি। রবিবার যোগ দিবসে দিলীপ বললেন, "হিংসা ছাড়া পৃথিবীতে কোনও দিন সমাধান হবে না।" এর আগে বলেছেন, "বদল নয়, বদলাও চাই।" দিলীপবাবুর মন্তব্য নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতৃত্ব।
রবিবার যোগ দিবসে দিলীপ ঘোষ বলেন, "হিংসার প্রতিরোধে যদি কেউ ভাবে মন্ত্র জপ করলে হয়ে যাবে। লোকে তাঁকে কাপুরুষ ভাববে, নির্বোধ ভাববে। তাহলে ভগবান কৃষ্ণ ভুল করেছেন যুদ্ধ করে? ওঁনার হরিনাম কীর্তন বা প্যান্ডেল টাঙিয়ে রামকথা করা উচিত ছিল। যাঁরা কাপুরুষ তাঁরা ক্ষমার কথা বলে। হিংসা করব না। হিংসা ছাড়া পৃথিবীতে কোনও দিন সমাধান হয়নি। আজ চিনের বিরুদ্ধে হিংসা হয়েছে। আমরা আজকে যদি হিন্দী চিনি ভাই-ভাই বলি তাহলে আরও অনেকটা নিয়ে নেবে। যে যে ভাষায় কথা বলে সেই ভাষায় কথা বলাটাই দস্তুর। যে পারে না সে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।" বিরোধী নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রথমে বদলা, তারপর হিংসা নিয়ে উসকানি দিয়ে বাংলার রাজনীতি অশান্ত করতে চাইছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে বাংলার মানুষ এসব বরদাস্ত করবে না বলে তাঁরা মনে করেন।
করেছেন দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। কল্যাণবাবু বলেন, "নাথুরাম গডসের লোকেদের কাছে আমাদের জ্ঞান শিখতে হবে না। গুজরাটে হিংসা করে করেই ক্ষমতায় এসেছে। এখানেও হিংসার কথা বলছে। বাংলার মানুষ এদের ছুড়ে ফেলে দেবে। বাংলায় অশান্তির কোনও জায়গা নেই। মানুষ এখানে হিংসা চায় না।" খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "কোনও দায়িত্বশীল রাজনীতিক এমন মন্তব্য করতে পারেন না। তাছাড়া বাংলার সংস্কৃতিতে এসব চলবে না।" অন্যদিকে সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, "নিজের অপদার্থতা ঢাকতে শ্রীকৃষ্ণের কথা বলছেন। মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।"
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দলের নীচুতলার কর্মীদের চাঙ্গা করতেই এমন মন্তব্য করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ তাঁর মন্তব্যকে কতটা সমর্থন করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অন্য দিকে রাজ্যের শাসকদলের দিলীপের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন