জল্পনা সত্যি হল। শেষ পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরেই নাম লেখালেন দিনেশ ত্রিবেদী। দিল্লির বিজেপির সদর কার্যলয়ে সর্বভারতীয় সভাপতি দেপি নাড্ডার উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন রাজ্যসভার প্রাক্তন এই তৃণমূল সাংসদ।
ফুল বদল করেই তৃণমূলকে 'পরিবারিক দল' বলে কটাক্ষ করেন দীনেশ ত্রিবেদী। তৃণমূল 'আদর্শচ্যূত' হয়েছে বলেও তোপ দাগেন। সমালোচনা করে পিকে-র সঙ্গে তৃণমূল যোগের। তিনি বলেন, 'এতদিন একটি পারিবারিক দলে ছিলাম। এবার জনগণের দলে যোগ দিলাম। বাংলা ও গোটা দেশের সেবা করতেই বিজেপিতে যোগ দিলাম। আবারই বাংলায় আসল পরিবর্তন ঘটবে।'
এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দীনেশ ত্রিবেদীকে নেতিকতার উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেন। প্রশাংসা করেন তাঁর তৃণমূল ও সাসংদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পদ্ম শিবিরে নাম লেখানোর বিষয়টিকে। নাড্ডা বলেন, 'দীনেশ ত্রিবেদী ভাল মানুশষ। এতদিন ভুল দলে ছিলেন। কিন্তু এবার সঠিক দলে যোগ দিলেন।'
ফেব্রুয়ারিতে আচমকাই রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ঘোষণা করেন দীনেশ ত্রিবেদী। রাজ্যসভায় তিনি বলেছিলেন, 'আমার রাজ্যে অশান্তি হচ্ছে। আমরা সেখানে কিছু বলতে পারি না। কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না। দলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। দলীয় নেতৃত্ব আমাকে এখানে পাঠিয়েছে। আমার দমবন্ধ হয়ে আসছিল। রাজ্যে হিংসা নিয়ে কিছু করতে পারছিলাম না। আমার অন্তরাত্মা বলল, এখানে বসে যখন কিছুই করতে পারছি না তখন ইস্তফাই দেওয়া উচিত। বাংলার জন্য কাজ করতে থাকব।আমি আজ রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিচ্ছি।'
জোড়া-ফুল ছেড়ে তাহলে কী পদ্মমুখী ব্যারাকপুরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংদ দীনেশ ত্রিূবেদী? জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। তাঁকে প্রকাশ্যেই বিজেপিতে স্বাগত জানান, রাজ্য বিজেপি সভারতি দিলীপ ঘোষ, ১৯-এর লোকসভা ভোটে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাংসদ অর্জুন সিংরা। আনুষ্ঠানিকভাবে না বললেও ক্রমশ পরিষ্কার হতে তাকে যে গেরুয়া পতাকাই হাতে তুলবেন দীনেশ। শনিবার যা বাস্তবায়িত হল।
তবে, আজ থেকে দু'মাস আগেই রাজ্যসবাভার তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ দিনেশ ত্রিবেদী বিজেপি সভাপতির সঙ্গে দেখা করে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর আর্জি জানিয়েছিলেন। সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই দাবি করেন জেপি নাড্ডা।
দিনেশ ত্রিবেদী দল বদল প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'অর্জুন সিংয়ের আবেদন নাকচ করে দিনেশ ত্রিবেদীকে লোকসভার প্রার্থী করা হয়েছিল। উনি হেরে যায়। তারপরও দীনেশ ত্রিবেদীর সম্মান রক্ষায় ওনাকে রাজ্যসভায় পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও তাঁর বিবেক জাগ্রত হল না। এখন নীতি-নৈতিকতার কথা বলছেন। ওনার মুখে নৈতিকতার কথা শোভা পায় না।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন