টিকিট না পেয়ে শাসক শিবিরের মাথা ব্যথার কারণ হতে পারেন বিক্ষুব্ধরা। শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনে দলীয় টিকিট না পেয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের অমতে মনোনয়ন পত্র তুললেন তৃণমূলের দুই প্রথম সারির নেতা। এদগের একজন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের যুব নেতা বিকাশ সরকার এবং অন্যজন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দুই বারের তৃণমূলের কাউন্সিলার নিখিল সাহানী।
বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য এলাকাবাসীর আবেগকে গুরুত্ব দিয়েই তাঁরা ভোটে দাড়াতে প্রস্তুত। তবে দল তাঁদের প্রার্থী করার বিষয়টি বিবেচনা করলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবে বলে দাবি বিকাশ সরকার ও নিখিল সাহানীর। আপাতত এই বিক্ষুব্ধদের নিয়েই শিলিগুড়ির রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা। সাময়িক অস্বস্থিতে রাজ্যের শাসক দল।
শিলিগুড়ি পুর নিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রাক্তণ কাউন্সিলার তৃণমূলের নিখিল সাহানীকে প্রার্থী করেনি দল। প্রতিবাদে শনিবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন নিখিল সাহানীর অনুগামী তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। নিখিলের বদলে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে এবার তৃণমূলের টিকিট পেয়েছেন সঞ্জয় শর্মা।
শনিবার দুপুরে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের শতাধিক তৃণমূল কর্মী সমর্থক নিখিল সাহানী প্রার্থী করার দাবীতে রাস্তায় নেমে প্রকাশ্যেই বিক্ষোভ দেখায়। সেই সঙ্গে ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সঞ্জয় শর্মার বিরুদ্ধে গো ব্যাক স্লোগান তোলেন। পরে বাগরাকোট বাস স্ট্যান্ডের সামনে পথ অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা। তাদের দাবী সঞ্জয় শর্মার বদলে প্রার্থী করতে হবে দু'বারের প্রাক্তন কাউন্সিলার নিখিল সাহানীকে। নিখিল সাহানীর কথায়, '১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল যাকে প্রার্থী করেছে সেই সঞ্জয় শর্মা বহিরাগত ও দু'বার পরাজিত। এমন প্রার্থীকে এলাকাবাসী চাইছে না। সময় কম দেখে মনোনয়ন তুললাম। বাকিটা দল বিবেচনা করুক। এলাকাবাসী চাইলে দলের টিকিট না পেলে নির্দল হিসেবে লড়ব।'
একই ছবি শিলিগুড়ির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডেও। এখানে প্রথম সারির নেতা বিকাশ সরকাররে প্রার্থী করেনি দল। ক্ষুব্ধ বিকাশ নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এদিন মনোনয়ন পত্র তুলেছেন। এরপর বিকাশ সরকার বলেন, 'আমি কোনদিনই দল বিরোধী কাজ করিনি। দলের জন্য সময় দিয়েও টিকিট পাইনি। এলাকাবাসী আমাকে জোর করছে টিকিট না পেলে নির্দল হিসেবে দাঁড়াতে। আমি এলাকাবাসীর কথা মাথায় রেখে, তাদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে মনোনয়ন পত্র তুললাম। বাকিটা দল বিবেচনা করুক।'
শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষনা হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে দলীয় কর্মীদের বিক্ষোভ। পছন্দের প্রার্থী না দাঁড় করানোয় প্রকাশ্যেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ কর্মী, সমর্থকরা। এতে যথেষ্টই অস্বস্থিতে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোন কথাই বলছে না জেলা নেতৃত্ব। তাদের একটাই বক্তব্য, প্রার্থীঠিক করেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, গত পাঁচ বছরের বেশি বিরোধীদের হাতে ছিল শিলিগুড়ি পুরনিগম। লোকসভা তো বটেই, একুশের ভোটেও শিলিগুড়িতে বিজেপির প্রভাব রয়েছে। পুরনিগম দখলে মরিয়া গেরুয়া বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে 'বিক্ষুব্ধ' কাঁটা জোড়া-ফুলের অন্যতম মাথাব্যথা হতে পারে।