করোনাভাইরাস লকডাউন আবহে জেরবার দেশবাসী। নিজামুদ্দিনের জমায়েত অংশগ্রহণকারীদের থেকে সংক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা। এই পরিস্থিতে দলীয় নেতা, কর্মীদের সতর্ক করলেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা। করোনা সংক্রমণ ইস্যুতে কোনভাবেই যাতে 'সাম্প্রদায়িক রং' না লাগে তা নিয়ে দলীয় নেতা,কর্মীদের গেরুয়া দলের প্রধান কড়া নির্দেশ দিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। এমনকী এই বিষয়ে 'বিভেদ' বা 'মতপার্থক্য'ও যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা বলা হয়েছে।
গত মাসেই দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিঘি জমায়েতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চারশো জনের শরীরে করোনার জীবাণু মিলেছে। এদের মধ্যে ১৫ জন ইতিমধ্যেই মৃত। জমায়েতকারীদের অনেককেই চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। এই ঘটনার পর পরই দলের নেতা, কর্মীদের বিজেপি সভাপতির এই সতর্ক বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপি জাতীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার জে পি নাড্ডা দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেখানেই সভাপতির নির্দেশ, করোনা ইস্যুতে যেন কোনওভাবেই বিজেপি নেতা, কর্মীরা উস্কানিমূলক বা বিভেদকামী মন্তব্য না করেন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্যোগকে সমর্থন করতে বলা হয়েছে। দল-মত নির্বিশেষে রাজ্যে সরকারগুলিকেও সহায়তার করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- LIVE: তিন দিনে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুন
ওই বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, 'এই পরিস্থিতিতে দেশ পরিচালনার গুরুভার রয়েছে দলের উপর। করোনাভাইরাস বিশ্বজুড়ে ত্রাসের সঞ্চার করেছে। তাই এই সময় কারোরই এমন কিছু বলা উচিত নয় যা উস্কানিমূলক।' তাঁর সংযোজন, 'নিজামুদ্দিন পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এই ইস্যুটি উঠে এসেছে। তারপরই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে, এই বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িবক রং দেওয়া চলবে না। প্রয়োজনে এ বিষয়ে দলের সংখ্যালঘু নেতারা মন্তব্য করবেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের একজোট থাকতে হবে।'
উল্লেখ্য যে, নিজামুদ্দিনের ঘটনার পরেই বিজেপির বহু সমর্থক সোশাল মিডিয়ায় #CoronaJihad, #Markaz Conspiracy প্রচার শুরু করেছেন। করোনা লকডাউন পরিস্থিতিতে যা দেশে বিভেদের সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা। তাই তড়িঘড়ি দলের নেতা, কর্মীদের নাড্ডার কড়়া বার্তা বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
গত ১লা এপ্রিলই বিজেপির আইটি সেলের প্রধান নিজামুদ্দিনের জমায়েত নিয়ে টুইট করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নাকভিও ওই ঘটনাকে 'তালিবানী অপরাধ' বলে মন্তব্য করেন। তালিকায় রয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজজেপি নেতা প্রমোদ সাওয়ান্তও। তিনি বলেছেন, 'নিজামুদ্দিনের ঘটনা ভারতের বড় ক্ষতি করে দিল।' কিন্তু, নাড্ডার নির্দেশেই স্পষ্ট, করোনা আবহে এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্যে দল রাশ টানতে চাইছে। একজোট হয়ে করোনা মোকাবিলার বার্তা দিতে মরিয়া গেরুয়া শিবির।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন