পাটশিল্পে সঙ্কট নিয়ে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের সুরবদল অর্জুন সিংয়ের। বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অর্জুন। এদিন তিনি বলেন, "ললিপপ দেখিয়ে লাভ হবে না। এই সব ললিপপ নিয়ে আমি রাজনীতি করি না। দাবি পূরণ না হলে লাগাতার আন্দোলন চলবে।"
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন অর্জুন সিং। পীযূষ গোয়েলের দিল্লির বাড়িতেই অর্জুন সেরেছেন নৈশভোজ। পাটশিল্প বাঁচানো নিয়ে তাঁর যাবতীয় আবেদন তিনি রেখেছেন বস্ত্রমন্ত্রীর কাছে। আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীকে পাশে নিয়ে ছবি তুলেছেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। টুইটে সেই ছবি পোস্ট করে বিজেপির এই দাপুটে সাংসদ লিখেছেন, ”বৈঠক খুব ইতিবাচক ছিল। আশা করি শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হবে।”
পাট নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ভ্রান্ত’ নীতির কারণেই গোটা একটি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বলে দিন কয়েক ধরেই সরব বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। পাট শিল্পকে বাঁচাতে এর আগে একাধিকবার কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে কথা হলেও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে সাংবাদমাধ্যমে সোচ্চার হন অর্জুন সিং। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে পথে নেমে আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন অর্জুন। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একটি বড় অংশে পাট শিল্পের এক সময় রমরমা কারবার ছিল। তবে বর্তমানে এই শিল্প ধ্বংসের পথে।
এরপর শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি এই ইস্যুতে চিঠি দেন বারাকপুরে বিজেপি সাংসদ। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ছাড়াও ওড়িশা, অসম এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দেন অর্জুন। বাংলার পাশাপাশি এই দুই রাজ্যেও পাটচাষ ও পাটশিল্পের বহু প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
অর্জুনের ক্ষোভের আঁচ পৌঁছে যায় দিল্লিতেও। এরপরই অর্জুন সিংকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী খোদ কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও অর্জুনকে ফোন করেছিলেন। শনিবার রাতে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। পাট শিল্প নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় দু’জনের মধ্যে। গোয়েলের বাড়িতেই নৈশভোজ সেরেছেন অর্জুন সিং।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের বেসুরো অর্জুন সিং। এদিন তিনি বলেছেন, "এই প্রথমবার ওঁকে বোঝাতে পেরেছি ৩ : ১ লড়াই চলছে। বস্ত্রমন্ত্রকের সচিবের সঙ্গে মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল কথা বলেছেন। বস্ত্রমন্ত্রকের সচিব আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ললিপপ নিয়ে আমি রাজনীতি করি না। বহু ললিপপ দেখেছি, বহু ললিপপ আমরা পেয়েছি। শেষ মূহূর্তে গিয়ে ধরাশায়ী হয়ে যায়। আমরা চটকলের লোক, ওখানে রাজনীতি শিখেছি।"