আদর্শ আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ। মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমলনাথের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। কমলনাথের 'তারকা প্রচারকারী' মর্যাদা কেড়ে নিল কমিশন। এখন থেকে কমলনাথ প্রচারে গেলে তার সব খরচ বহন করতে হবে দলেরই সেই কেন্দ্রের প্রার্থীকে।
মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের বিরুদ্ধে 'মাফিয়া', 'মিলাওয়াতখোর' এবং বিজেপির মহিলা প্রার্থী ইমরাতি দেবীর বিরুদ্ধে কমলনাথ 'আইটেম' মন্তব্য করেছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতেই উপনির্বাচনের আগে কমলনাথের বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানায় বিজেপি। যার পেক্ষিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য 'আপত্তিকর' বলে জানিয়েছে কমিশন।
শুক্রবার জারি করা আদেশে কমিশন বলেছে, বারবার মডেল আচরণবিধি লঙ্ঘন ও তাঁকে পাঠানো অ্যাডভাইসরি বা উপদেশের প্রতি বিন্দুমাত্র কর্ণপাত না করায় কমিশন রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথের রাজনৈতিক দলনেতার (তারকা প্রচারকারী) মর্যাদা অবিলম্বে প্রত্যাহার করছে। তারকা প্রচারকারী বলে কমলনাথকে কোনও অনুমতি দেবে না কর্তৃপক্ষ। তবে যদিও এখন থেকে কমলনাথ কোনও প্রচার করেনও বা, তবে তাঁর যাতায়াত, থাকা, ঘোরাফেরা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে যে প্রার্থীর কেন্দ্রে তিনি প্রচারে যাবেন, সেখানকার দলীয় প্রার্থীকে।
সম্প্রতি কমিশন কমলনাথের তীব্র নিন্দা করে এক মহিলা প্রার্থীকে ‘আইটেম’ বলে কটাক্ষ করায়। কমিশন জানায়, একজন মহিলা সম্পর্কে এ ধরনের শব্দ প্রয়োগে তাদের জারি করা অ্যাডভাইসরি লঙ্ঘিত হয়েছে। কমিশন এরপরও অসন্তোষ প্রকাশ করে জানায়, একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসাবে কমলনাথ বারবার মডেল আচরণবিধির ধারা অগ্রাহ্য করে অনৈতিক, অসম্মানজনক আচরণ করছেন। মডেল আচরণবিধি বহাল থাকার মধ্য়ে উপনির্বাচনের প্রচারে একজন মহিলা সম্পর্কে ‘আইটেম’ জাতীয় শব্দ ব্য়বহার করতে বারণ করে কমিশন তাঁকে তিরস্কারও করে।
৩ নভেম্বরের উপনির্বাচনের প্রচারে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের দাবরা টাউনের এক জনসভায় বিজেপি প্রার্থী ইমারতী দেবীকে কটাক্ষ করে কমলনাথ বলেন, কংগ্রেস প্রার্থী সুরেশ রাজে একজন সামান্য, সহজ মানুষ, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর মতো নন, যিনি একটা ‘আইটেম’। কমলনাথের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বিজেপি।
পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান সম্পর্কে কমলাথের ‘মাফিয়া’, ‘মিলাবটকর’ মন্তব্যও কমিশন সুনজরে দেখেনি। বলেছে, তাদের রিপোর্টে নিশ্চিত, মডেল আচরণবিধি ভাঙা হয়েছে। কমিশনের আদেশে আরও বলা হয়েছে যে, ভোটপ্রচারে যাতে প্রার্থীরা পরস্পরের প্রতি নীতিনিষ্ঠ, সম্মানজনক আচরণ করেন, ভারসাম্য বজায় থাকে, সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলির ঐকমত্যের ভিত্তিতেই বহু দশক ধরে ধীরে ধীরে মডেল আচরণবিধি তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের ২৮টি আসনে ৩ নভেম্বর উপনির্বাচন হতে চলেছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন