নির্বাচনী বিধি আবহে প্রশাসন চালানো কমিশনের কাজ নয়। তারা আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রক মাত্র। মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত প্রসঙ্গে তৃণমূলের তোলা অভিযোগের জবাব এভাবেই দিল নির্বাচন কমিশন (ECI)। বুধবারের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার কমিশনের সিইও দফতরে গিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছে রাজ্যের শাসক দল। রাজ্যের ডিজি এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-কে অপসারণের পরেই এই ঘটনা। অর্থাৎ তৃণমূল সুপ্রিমোর আঘাত পাওয়ার ঘটনায় কমিশনেরও দায় বর্তায়। খানিকটা এই ভাষায় সরব হয়ে পরোক্ষে কমিশনকে দায়ী করে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। সেই অভিযোগের জবাবও কড়া ভাষায় দিয়েছে কমিশন।
তারা বলেছে, ‘রাজ্যের বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের করা অভিযোগ পরোক্ষে দেশের স্বশাসিত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। পাশাপাশি সেই প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষ পরিচালন পদ্ধতিকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে দার করানো। নির্বাচনী বিধির মধ্যে বাংলা-সহ কোনও রাজ্যের প্রশাসন পরিচালনা করার কাজ কমিশনের নয়। তারা আইনশৃঙ্খলার নিয়ন্ত্রক মাত্র।‘
এমনকি রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রকে অপসারণ করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত দুই পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে আর অজয় নায়েকের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত। এমনটাও পরোক্ষে তৃণমূলকে কংগ্রেসকে জানিয়েছে কমিশন।
এদিকে, নন্দীগ্রামে কী ভাবে আহত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর (সিইও)-এ রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় আহত হন মমতা। তাঁর বাঁ পা, কাঁধ এবং কোমরে চোট লাগার কারণে তিনি এখন এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনা হালকা ভাবে নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তা পান। ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা ভেদ করে কেউ ‘হামলা’ করেছিল, নাকি এটা নিছক দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখতেই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বস্তুত, ভিআইপি-দের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখেন রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তা অধিকর্তা বিবেক সহায় (ডিরেক্টর সিকিউরিটিজ)। কমিশনের নজরে রয়েছেন তিনিও।