রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কংগ্রেসের উপর 'আক্রমণ', অভিযোগ এনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝাঁঝ আরও বাড়াল কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীকে দিনের পর দিন ইডি-র জেরা ও দিল্লিতে দলের সদর দফতরে পুলিশি অভিযানের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস। রাজ্যে-রাজ্যে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষক্ষোভ কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের। রাস্তায় শুয়ে-বসে প্রতিবাদ। 'বিজেপির শেষের প্রধান কারণ হবে কংগ্রেস', হুঁশিয়ারি নেতাদের।
বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লির পাশাপাশি বেঙ্গালুরু, গুয়াহাটি, হায়দরাবাদ, জম্মু এবং চণ্ডীগড়ে বিক্ষোভে দেখায় কংগ্রেস। একাধিক রাজ্যে কংগ্রেসের বিক্ষোভ সামাল দিতে হিমশিম দশা পুলিশ কর্মীদের। বহু জায়গায় কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশ কর্মীদের। দেশজুড়ে শ'য়ে শ'য়ে কংগ্রেস কর্মী আটক।
বৃহস্পতিবার দিল্লিতে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। সেই বিক্ষোভের পর দলের শীর্ষ নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে গেলে আটকায় পুলিশ। বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে পুলিশি 'হামলা'য় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি নেতাদের। এব্যাপারে দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তাঁরা। যদিও তাঁদের এদিন লেফটেন্যান্ট গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
এদিন তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরের বাড়ির সামনে। কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে প্রবল ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায় পুলিশের। কংগ্রেসের কর্মীরা ব্যারিকেড সরিয়ে এগনোর চেষ্টা করে। বিক্ষোভ সামাল দিতে শেষমেশ জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
রাহুল গান্ধীকে 'হেনস্থা' ও দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতের পুলিশি 'হামলা'র প্রতিবাদে এদিন বেঙ্গালুরুতেও ব্যাপক বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের জেরে এদিন হাইটেক সিটিতে বেশ কিছুক্ষণ যানবহন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায়। বিজেপির বিরুদ্ধে স্মারকলিপি ও অভিযোগপত্র দিতে রাজভবন পর্যন্ত পদযাত্রা করে কংগ্রেস।
কর্ণাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডি কে শিবকুমার বলেন, ''বিক্ষোভ আমাদের অধিকার। ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করব। তাঁরা (ইডি) কোনও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে চলা মামলার তদন্ত করছে না। তাঁরা কেবল কংগ্রেসের নেতাদের হয়রানি করছে।'' হায়দরাবাদেও এদিন কংগ্রেসের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় কংগ্রেস কর্মীদের।
অন্যদিকে, মরুরাজ্য রাজস্থানেও এদিন প্রবল বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। রাজধানী জয়পুরে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে রজ্যের শাসকদল। সংবাদসংস্থা এএনআইকে রাজ্যের মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি খাচারিয়াওয়াস বলেন, "ওঁরা রাহুল গান্ধীর কণ্ঠস্বরকে দমন করতে চায়। ইন্দিরা গান্ধীর নাতিকে লাঠি দিয়ে ভয় দেখানো যাবে না। বিজেপির শেষের পিছনে কারণ হবে কংগ্রেস।''
আরও পড়ুন- ‘টাকা নেই, টাকা দাও’, তৃণমূলের দিল্লি দরবার
এরই পাশাপাশি এদিন চণ্ডীগড়েও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে কংগ্রেস। পরে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটকও করে পুলিশ। পঞ্জাব কংগ্রেসের প্রধান অমরিন্দর সিং ওয়ারিং বলেন, ''রাহুল গান্ধী এমন কী করলেন যে তাঁকে ৩ দিনের জন্য ডাকা হল? দিল্লি পুলিশ কংগ্রেসের দফতরে ঢুকে আমাদের সাংসদদের মারধর করেছে। এমন প্রতিহিংসার রাজনীতি আগে কখনও দেখিনি। প্রতিবাদের কণ্ঠকে দমনের চেষ্টা সরকারের, এটা অনুচিত।''