রবিবার গভীর রাতে নির্বাচনী প্রতীকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে এক গুরুত্বপুর্ণ বৈঠকে বসেন একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী। বৈঠকে আসন্ন উপনির্বাচনে দলের প্রতীক নিয়ে বিভিন্ন 'বিকল্প' নিয়ে আলোচনা হলেও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এই বিষয়ে দলের এক সিনিয়ার নেতা বলেন, 'যেহেতু দল হিন্দুত্বের আদর্শ নিয়ে চলে, তাই তলোয়ার এবং গদার মতো প্রতীকগুলি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সোমবার সকালেই দলের তরফে চূড়ান্ত সিধান্ত নেওয়া হবে এবং দুপুর ১ টার মধ্যে নির্বাচন দফতরে সেই বিকল্প প্রতীকগুলি দলের পক্ষ থেকে জমা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ' শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে বা দলের অন্যতম নেতা আনন্দ দীঘের নাম ব্যবহার করার বিষয়েও চিন্তাভাবনা করছে দল'৷
অন্যদিকে পুরোনো প্রতীকের প্রতি মায়া ত্যাগ করল শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠী। বদলে তিনটি বিকল্প প্রতীক বেছে নিলেন উদ্ধবরা। এর আগে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, তারা শিবসেনার তির-ধনুক প্রতীক বিবাদমান কোনও গোষ্ঠীকেই দেবে না। বদলে বিকল্প প্রতীক বেছে নিতে হবে শিবসেনার বিবাদমান গোষ্ঠীগুলোকে।
সূত্রের খবর, উদ্ধব গোষ্ঠী ত্রিশূল, উদীয়মান সূর্য ও মশাল প্রতীক বেছে নিয়েছে। এর মধ্যে তারা একটা প্রতীক পাবে। উদ্ধব গোষ্ঠীর তরফে এই ব্যাপারে দক্ষিণ মুম্বইয়ের শিবসেনা সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি যে আমাদের কোন প্রতীকগুলো পছন্দ।’
উদ্ধবরা পছন্দসই প্রতীকের তালিকা বানিয়ে ফেললেও একনাথ শিণ্ডে গোষ্ঠী এখনও কমিশনকে তাদের পছন্দের তালিকাটা দেয়নি। কারণ, শিণ্ডে গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা এখনও তির-ধনুক প্রতীক পাওয়ার ব্যাপারে অনড়। এই ব্যাপারে শিণ্ডে গোষ্ঠীর তরফে মন্ত্রী তথা মুখপাত্র দীপক কেশরকর বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা আমাদের প্রতি অবিচার ছাড়া কিছু না। আমরা এখনও তির-ধনুক প্রতীক চাইছি। কারণ, এটা আমাদের অধিকার। আমরাই প্রকৃত শিবসেনা। প্রতীক বাজেয়াপ্ত হওয়ায় তাই সত্যিই দুঃখ পেয়েছি।
৩রা নভেম্বর মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি পূর্ব বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন। আসন্ন উপনির্বাচনের জন্য আগামী ১০ই অক্টোবরের মধ্যে নিজেদের নতুন প্রতীক ও চিহ্ন বেছে নেওয়ার জন্য সময় সীমাও বেঁধে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে আসন্ন উপনির্বাচনের আগে কমিশনের জারি করা নির্দেশ অনুসারে, শিবসেনার প্রতীক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ঠাকরে গোষ্ঠীর জন্য একটি বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। মহারাষ্ট্র সংকটের মাঝেই উপনির্বাচনে ভিন্ন প্রতীকে লড়তে হবে ঠাকরে শিবিরকে।
শিণ্ডে গোষ্ঠীর অভিযোগ, উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার গোষ্ঠী সময়মতো কমিশনকে তাদের বক্তব্য জানায়নি। সেই জন্যই কমিশন প্রতীক বাতিল করেছে। এই ব্যাপারে কেশরকর বলেন, ‘ওরা সময়মতো নিজেদের বক্তব্য জানায়নি। ওরা আরও সময় চেয়েছে। তার জন্যই নির্বাচন কমিশন প্রতীক বাজেয়াপ্ত করেছে। এখন ওরা আমাদের আর নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করছে। ওরা স্রেফ জনগণের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। তবুও আমরা কমিশনকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাব।’