Advertisment

‘জানতাম না, তৃণমূল করতে গেলে বোরোলিন লাগে, এখন জেনেছি’

"আমাকে নেত্রী সকালে ফোন করেন সব বলেন। কিন্তু, আমি 'না' করি। এরপর উনি অমায় ডাকেন। দ্যাট ওয়াজ অ্যা সান ডে...।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kunal ghosh, কুণাল ঘোষ

অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস।

তিনি সাংবাদিক। একদা প্রভাবশালী 'গ্রুপ মিডিয়া সিইও'। দাবি করেন, বাংলা সাংবাদিকতায় সবচেয়ে বেশি জায়গা নিয়ে কাজ করেছেন। সেই জায়গা থেকেই তিনি কখনও তৃণমূলের শহিদ মঞ্চের সঞ্চালক হয়ে উঠেছেন, আবার কখনও রাজ্যসভার সাংসদ। সেখান থেকে জেলেও গিয়েছেন। তাঁর 'কণ্ঠরোধের জন্য' পুলিশ হারে রে রে রে রে রব তুলে প্রিজন ভ্যান বাজাত। দু' বছর দশ মাসের ঘটনাবহুল কারাজীবনে তিনি কখনও আত্মহননের চেষ্টা করেছেন, কখনও আবার মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি দাবি করেছেন। তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ধাঁধার মতো। কিন্তু, তাঁর সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল? জেলে তিনি কেমন ছিলেন? জেল থেকে বেরিয়ে কী দেখলেন? বর্তমান রাজ্য রাজনীতিতে তাঁর পর্যবেক্ষণ এবং অবস্থান ঠিক কী? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে সব প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দিলেন কুণাল ঘোষ

Advertisment

কেমন আছেন?

আমি এখন যুদ্ধে আছি। সেটা আইনি যুদ্ধ। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। পেশায় টিকে থাকার যুদ্ধ। নতুন প্রযুক্তিতে নতুন চেহারার মিডিয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার যুদ্ধ। সবমিলিয়ে একটা বড় যুদ্ধে রয়েছি এবং বেশ উপভোগ করছি।

আপনি তো বেশ কয়েকটা বছর স্বাভাবিক জীবনে থাকতে পারলেন না, কারান্তরালে কাটাতে হল। ফিরে এসে কী দেখলেন, পৃথিবী বদলে গেছে?

বদলে তো গেছেই...অনেকটা বদলেছে (দৃষ্টি দূরে...জানালার বাইরে)। জীবনের খুঁটিনাটি বদলেছে। চারপাশের মিডিয়া বদলেছে। তবে মারাত্মক বদল ঘটে গিয়েছে তা নয়। আসলে যে বদলটার একটা ঝোঁক ছিল, তা আরেকটু ত্বরান্বিত হয়েছে।

আচ্ছা, আপনি তো দীর্ঘ সময় আপনার পেশায় 'টপ বস' ছিলেন। ক্ষমতার অলিন্দেও আপনার নিত্য যাতায়াত ছিল। জেল খেটে আসার পর অতীতের সহকর্মী বা একদা অধঃস্তনদের ব্যবহারে কতটা পার্থক্য দেখলেন?

(প্রশ্নটি শেষ না হতেই মুখ হাসিতে ভরে গেল) ফারক তো ঘটে গেছেই। আমার কঠিন সময়ে অনেকে, সংখ্যায় কম হলেও, নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আগলে রেখেছিলেন বলা চলে। যেমন ধরা যাক, বহু দূরে জলপাইগুলি কোর্টে আমাকে প্রোডাকশন দেওয়া হয়েছে, সেখানে দেখছি আমার দুই সহকর্মী আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। তাঁরা যে সব সময় সেই জেলার বাসিন্দা তা কিন্তু নয়, হয়তো কলকাতা থেকে গিয়েছেন। আবার এমনও অনেককে দেখেছি, যাঁরা কোনও খোঁজও রাখেননি বা যোগাযোগ করেননি। মজার কথা হল, এই দ্বিতীয় গোত্রের অনেকের বাইলাইনগুলি (সাংবাদিকের স্বনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন), তাঁরাও প্রভাতী কাগজে পাঠকের সঙ্গেই প্রথম পড়তেন। কারণ, সেগুলি আমিই লিখে দিতাম (গোঁফের আড়ালে উপহাস)। তাঁরা হয়তো যোগাযোগ না করে ভেবেছেন, কোনও একটা প্রামাণ্য নথি মুছে দিলেন বা তাঁদের সৃষ্টি রহস্যটা জগতে অজানাই থেকে যাবে এরপর থেকে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমি এখনও রয়েছি। তবে আবার এটাও ঠিক যে পরিস্থিতির চাপে অনেকে ইচ্ছা থাকলেও যোগাযোগ রাখতে পারেননি।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস তখন সাংসদ। ছবি- ফেসবুক।

সাংবাদিক কুণাল ঘোষ বরাবর খবরের প্রয়োজনে প্রশ্ন করে এসেছেন। সেই তিনি যখন বিচারাধীন অভিযুক্ত, তাঁকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা, হয়তো অনুজপ্রতিম সাংবাদিকরাও। এই অভিজ্ঞতাটা কেমন?

(সহাস্য জবাব) এটা একটা দেখার মতো বিষয় ছিল, জানেন। এটা জীবনের পাওনাও বটে। আমি কোথাও গেলাম, তখন সাংবাদিক বৈঠকে দেখছি সবাই আমার মুখ চেনা। যেমন ধরুন, আমি হয়তো জলপাইগুড়ি যাচ্ছি। ট্রেন তখনও প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ায়নি, অথচ আমার কামরা ধরে জোর পায়ে হাঁটতে শুরু করেছেন জনা কয়েক স্থানীয় সাংবাদিক। আমি নামতেই বহুদূর পর্যন্ত তাঁরা আমার সঙ্গে কথা বলে চলেছেন, এই একটা কথাও কিন্তু বিচারাধীনের উদ্দেশে সাংবাদিকের প্রশ্ন নয়। মানে পরিস্থিতি এমনই যে তাঁরা নিজেরা পেশাদার প্রশ্নে যেতেই পারছেন না। কারণ, কুশল বিনিময় শেষই হচ্ছে না। খালি শুনছি, 'কিরে কেমন আছিস?', 'দাদা তুমি কেমন আছ?', 'দাদা তোমার ছেলেরা কেমন আছে?'...এইসব

এত বেশ ভাল অভিজ্ঞতা। তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই কিছু?

(একটু চুপ থেকে) মজার অভিজ্ঞতা আছে বলতে পারেন। মানে, আমার স্নেহধন্য এক নবীন সাংবাদিক হয়ত আমাকে কভার করতে এসেছেন। অথচ সে নিজেও জানে, আর আমিও জানি যে তাঁর অফিসে আমার অ্যান্টি খবর ছাপা হয়। মানে আমি যদি ভাল কথাও বলি বা সে যদি ভাল দিক থেকেও খবরটা করে তাহলে তা প্রকাশ করা হবে না বা দেখানো হবে না। ফলে, প্রশ্নত্তোরের আগে বা পরে আমরা আন্তরিকভাবেই মিশি, হয়তো একই সঙ্গে চা খাই...

নিজে সাংবাদিক বলেই কি এই পেশাগত বাধ্যবাধকতাটা ভাল বোঝেন?

হ্যাঁ, একেবারেই তাই।

আপনি জেলে থাকাকালীন আদালতে যাওয়ার পথে যখন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাইতেন, তখন অনেক সময় পুলিশ প্রিজন ভ্যান বাজাত বা মুখে অদ্ভুত আওয়াজ করত। ব্যাপারটা আসলে ঠিক কী হত?

আসলে আমার কণ্ঠরোধের প্রচেষ্টা। কিন্তু, মজাটা হত ওই ঘটনার ঠিক আগে বা পরে। যে পুলিশকে দেখতেন ওই কাজ করতে, তাঁরাই বাজনা বাজাবার আগে আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতেন।

আবারও সেই বাধ্যবাধকতা?

(সম্মতিসূচক চাহনি)। জানেন, এমনও হয়েছে যে ওইসব পুলিশকর্মীরাই তাঁদের কর্মজীবনের শেষ দিনে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে আমার বাড়িতে এসে দেখা করে গিয়েছেন।

সাংবাদিকের জেল জীবন কেমন ছিল?

৯টি জেলে ২ বছর ১০ মাস তীব্র শারীরিক-মানসিক চাপ নিয়ে কাটিয়েছি। মোট চার রকমের চাপ ছিল। এক, যে লাইফস্টাইলটায় অভ্যস্ত তা থেকে যে লাইফস্টাইলটায় থাকতে হচ্ছে, সেখানেই একটা বৈপরিত্য। ওটাই একটা বিরাট মানসিক চাপ। দুই, আমার আইনি যুদ্ধ। তারপরে থাকছে, আমার ঘনিষ্ঠ মহলের কী অবস্থা। কারণ, সেখানে ততক্ষণে ভাঙচুর চলছে। আর শেষ হচ্ছে, আমার পেশাগত কী অবস্থা। সুতরাঙ, এই চারটি জিনিস একসঙ্গে আমাকে হ্যামার করতে থাকত।

কিন্তু, বন্দি কুণাল ঘোষের আবার পেশাগত জায়গা নিয়ে চাপের কী আছে!

বাহ্, এটা কী করে হয়! একজন তাঁর কৈশোর থেকে তিল তিল করে কেরিয়ার তৈরি করে এমন জায়গায় পৌঁছেছিল যে অতখানি স্প্যানে কাজ করার সুযোগ বাংলা সাংবাদিকতায় দ্বিতীয় কেউ পায়নি। আবার সেখান থেকে সরাসরি কারাগারে নিক্ষেপ করা হল। যা অর্জন করেছি তা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হল। তবে এই সামগ্রিক পর্বটা যখন চলছে, তখন তার মধ্যেও আমি আশার আলো দেখেছি।

সেই আশার আলোটা কেমন?

আমি নিজেকে বোঝাতে পেরেছিলাম যে যদি অন্ধকারে কেবল অন্ধকারটা ধরেই বসে থাকি, তাহলে আমি আরও অন্ধকারে ডুবে যাব। আমি প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতাল ওয়ার্ডে বসে যে উপন্যাস লিখেছি তা একটি নামী সংবাদপত্র তাদের পুজো সংখ্যায় প্রকাশ করেছে এবং পরবর্তীকালে তাদেরই প্রকাশনা সংস্থা সেগুলিকে বই হিসাবেও ছেপেছে। আমি জেলে যাওয়ার আগে কখনও ফিকশন লেখার সুযোগ পাইনি। তাই জেলে গিয়ে যে চরিত্রগুলি দেখেছি তাদের নিয়ে লিখেছি।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস সামাজিক অনুষ্ঠানে কুণাল। উপস্থিত ববি হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি-ফেসবুক।

অর্থাৎ কলমই আপনার আশার আলো...

একেবারে, আমি কলম ছাড়িনি। আমি এসবের পাশাপশি পিটিশন লিখে গিয়েছি, আমার আইনজীবীর সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ করে গিয়েছি, প্রেস রিলিজ করেছি, আমি নিয়মিত ডাইরি লিখতাম। এখান থেকেই আমার বন্দির ডাইরি বইটা তৈরি হয়েছে। আমি অন্যান্য বন্দিদের সাক্ষাৎকারও নিয়েছি।

কিন্তু, আপনি যদি জেলের অন্ধকারে কলম দিয়ে আশার আলোর খোঁজই করে থাকেন, তাহলে হঠাৎ আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন কেন? এটা কি আপনার একটা কৌশল ছিল?

(মুখে স্মিত হাসি) আমি এ প্রশ্নের উত্তর এখনই দিতে পারব না। কারণ, বারাসতের বিশেষ আদালতে এ মুহূর্তে ঠিক এই মামলাটার বিচারই চলছে। শুধু বলতে চাই, একটা ঘটনা ঘটেছিল (চোখে-মুখে রহস্যের অভিব্যক্তি)।

আপনি দাবি করেছেন, আপনাকে জেলে যেতে হলেও অনেককেই শাস্তি পেতে হয়নি। সে বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছেন?

আমার ক্ষোভ আছে। এ কথা আমি শেষদিন পর্যন্ত কোর্টে গিয়েও বলব। আমি রাজ্যের মামলাগুলিতে রোজ শুনানি চেয়েছি। যদি দেখি আমাকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বা সেই রকম চেষ্টা হচ্ছে, তাহলে রাজীব কুমার যাঁদের বাঁচাতে চেয়েছিলেন, সে ক্ষেত্রে রাজীব-সহ তাঁদেরে সকলকে আদালতে টেনে আনব (চোখে মুখে ক্ষোভ)।

অনেকেই বলছেন, ধাঁধার চেয়েও জটিল আপনার রাজনৈতিক অবস্থান। আপনি কী বলবেন?

আমি পরিবর্তনের সময়কার কঠিন দিনের এক জন কর্মী। সেই অর্থে রাজনৈতিক নেতা ছিলাম না। বরং সাংবাদিকতা থেকে ঘটনাচক্রে রাজনীতিতে এসে পড়েছি। এবং ঈশ্বর সাক্ষী, যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভার সদস্য হতে বলেন, সেদিন কুণাল ঘোষ তাঁকে 'না' বলেছিল, নির্দিষ্ট কারণ দেখিয়েই 'না' বলেছিল। সে বলেছিল, দিদি আমি আমার পেশাটাই করে যেতে চাই।

কী সেই কারণ?

তা এখন আর বলা যায় না। তবে আমি কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমাকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি, আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দলের সঙ্গে আমার ইস্যুভিত্তিক মতপার্থক্য ছিল, কিন্তু আমার সাংসদ পদের মেয়াদ যেই না শেষ হয়ে গেল, তখনই আমি অন্যদলে যোগ দিলাম- এই ব্যাপারটা আমার রুচি বিরুদ্ধ লেগেছে। আমি এই দলটার কঠিন দিন থেকে আছি। ৯৩ সালের একুশে জুলাই ১৩টি মৃতদেহের সামনে তৎকালীন ডিসি, এসবি-র গাড়ি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যখন তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তখন একমাত্র সাংবাদিক এই কুণাল ঘোষই গাড়ি নিয়ে ফলো করেছিল। এরপর স্ট্র্যান্ড রোড থেকে মমতাদিকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে পিজি হয়ে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। এছাড়া, ২০০৪-এর ব্যর্থতা দেখেছি, ২০০৬-এর ব্যর্থতা দেখেছি, ২০০৭ থেকে আমি দলের পাশ ছাড়িনি। কিন্তু, এত কিছুর পরও পরবর্তীকালে দলের মধ্যে ইস্যুভিত্তিক ক্ষোভ, মতপার্থক্য আমার ছিল এবং আমি দলের মধ্যে লড়েছি। তবে, চারিদিকে যা দেখছি, একটু ক্ষোভ হলেই দল বদল, সামান্য ঝগড়া হলেই দলবদল, এটা আমি চাইনি।

দলের মধ্যে লড়ছেন মানে?

আমাকে সাংসদ করা হলেও, উন্নয়নের কাজে তহবিলের টাকা খরচ করতে দেওয়া হত না। সে জন্য আমি জেলের মধ্যে অনশন করেছি, হাইকোর্টে মামলা করে জিতেছি। সেই রায় নিয়ে জেলায় জেলায় কাজ করেছি এবং কোচবিহারে সেতু উদ্বোধন করে আমি তার নাম রেখেছি 'মমতা সেতু'।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস 'মমতা সেতু'-তে কুণাল। ছবি-ফেসবুক।

আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে সংসদ হওয়ার প্রস্তাব পেয়ে 'না' বলেছিলেন, কিন্তু আপনি সে জন্য আবার কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছেন। আপনি নিজেকে পরিবর্তনের কঠিন সময়ের কর্মী বলছেন, আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার গ্রেফতারিও দাবি করেছেন সোচ্চারে, আর এখন সেতু উদ্বোধন করে নাম রাখছেন 'মমতা সেতু'- এই গোটা ব্যাপারটার বাঁকে বাঁকে তো স্ববিরোধ, সুস্পষ্ট পরস্পর বিরোধী অবস্থান। কী বলবেন?

না, কোনও স্ববিরোধ নেই। যদি কারও বুঝতে অসুবিধা হয়, তাহলে তার অসুবিধা হচ্ছে। আমার অসুবিধা হচ্ছে না (এক রকম জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার ঢঙে বললেন)। আমার পরিষ্কার বক্তব্য, যে ইস্যুতে আপত্তি ছিল আমি তা জানিয়েছি। (হঠাৎ মেজাজ বদল, কিঞ্চিত হাসলেন) নাহ্, যে প্রশ্নটা আপনি করলেন, তা ইন্টালিজেন্ট প্রশ্ন।

ধন্যবাদ।

আপনার বক্তব্য, আমি বন্দি থাকাকালীন দলকে সমালোচনা করেছি। কিন্তু, এটা তো বলছেন না, যেদিন সমালোচনা করছি, সেই মাসেও আমি দলকে চাঁদা দিয়েছি। বন্দি দশায় অর্থাৎ ৩৪ মাস ১০ হাজার টাকা করে দলকে মোট আমি ৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা সদস্য চাঁদা দিয়েছি। এ বিষয়টা কেন ধরা হবে না? (চোখে-মুখে হাসির রেখা)

না, না, ধরা হবে। কিন্তু, চাঁদা দিলেই...

(প্রশ্ন শেষ করার আগেই) না, না। আসলে এটাও বুঝতে হবে (দলকে) যে এমন একটা লোক থাকুক যে ঝগড়া করলেও, জোরে বললেও (দলেই থাকবে), অন্যদের মতো কথায় কথায় দল বদলায় না। তবে ভবিষ্যতে কী হবে সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।

আচ্ছা, একটি রক্তদান শিবির থেকেই নাকি সমস্যার সূত্রপাত? ঠিক কী হয়েছিল?

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩। বৌবাজার এলাকায় সোমেন মিত্রর উদ্যোগে একটা রক্তদান শিবির ছিল। উপস্থিত ছিলেন সোমেন মিত্র, শতাব্দী রায়, তাপস পাল এবং আমি। সেখানে যে যার মতো দু-চারটি ক্ষোভের কথা বলেছিল। ব্যাস এই। এরপর আমি শুনেছি আমাকে শো'কজ করা হয়েছে। কিন্তু, আমার ঠিকানায় কোনও চিঠি আসেনি। আমি সব সময়েই বলেছি, আমাকে লিখিত দেওয়া হোক, জানতে চাওয়া হোক, দল তদন্ত কমিশন গড়ুক, আমাকে জেরা করুক। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য এগুলি কিছুই হয়নি।

আপনি একটু আগেই তিল তিল করে গড়ে তোলা কেরিয়ারের কথা বলছিলেন। আপনার কি আজ মনে হয়, রাজনীতিতে না ঢুকলেই ভাল হত?

বিশ্বাস করুন, সে দিন সেই পরিস্থিতি ছিল না।

যদি সেদিন নিজের 'না' বলার সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকতে পারতেন, তাহলে...

(প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে একটু নরম সুরে) ওভাবে ভেবে না লাভ নেই। ওই ভাবে আর ভাবি না। ওটা ভেবে আর কোনও লাভ নেই।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস অন্য মেজাজে...। ছবি-ফেসবুক।

আচ্ছা, আপনার পাঠক-দর্শক তো আপনাকে কাঠগড়ায় তুলবেই। আপনি সরাসরি রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে গেলেন! যে পেশার কথা এতক্ষণ বলছিলেন, তার প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার দায়বদ্ধতার কথা সেদিন মনে হয়নি?

নিশ্চই ধাক্কা খেয়েছিল (বিশ্বাসযোগ্যতা)। তখনই বুঝেছিলাম। কিন্তু, তখন এমন একটা পরিস্থিতি ছিল যাকে স্বাগত জানানো ছাড়া আমার কাছে আর কোনও উপায় ছিল না।

তা বলে সাংবাদিক আপনি সরাসরি তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চে সঞ্চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন!

শুনুন, ওটা তৃণমূল কংগ্রেস। নেত্রীর ইচ্ছা ছাড়া ওই রকম একটা মঞ্চে উঠে গিয়ে অ্যাঙ্কারিং করা যায় না। শুধু তৃণমূল কেন কোনও দলেই করা যায় না। তবে, সেদিন আমি অ্যাঙ্কারিং করায় তৃণমূলের অনেকের হিংসায় গা হাত পা জ্বলে পুড়ে গিয়েছিল। তখনও তো জানতাম না, তৃণমূল করতে গেলে পকেটে বোরোলিন রাখতে হয়, যাতে জীবনের ছোট-বড় ওঠা পড়া গায়ে না লাগে। তবে, এখন আমি জেনে গিয়েছি, ফলে সঙ্গে রাখি। (মুখে ব্যাঁকা হাসি)

আচ্ছা, অতীতে তৃণমূলের কয়েকজন প্রাক্তন এবং বর্তমান সাংসদকেও বলতে শুনেছি যে তাঁরাও সাংসদ হতে চাননি। কিন্তু, কোনও উপায় ছিল না। এই সাংসদরাও আপনারই মতো, অর্থাৎ রাজনীতি নয়, মূলত ভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ। কী মনে হয় এই ব্যাপারটা?

দেখুন, অন্যদের বিষয়টা আমি বলতে পারব না। তবে জানি, দেবও (ঘাটালের বর্তমান সাংসদ অভিনেতা দেব) রাজি ছিলেন না। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তাঁকেও হতে হয়েছিল। তবে এটাও ঠিক, এমন আনেক মানুষকে জানি, যাঁরা ভিন্ন ক্ষেত্রের হলেও সাংসদ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমি অন্যদের কথায় যাব না। আমি শুধু আমারটা বলতে পারি। আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই দিনটা। আমাকে নেত্রী সকালে ফোন করেন সব বলেন। কিন্তু, আমি 'না' করি। এরপর উনি অমায় ডাকেন। দ্যাট ওয়াজ অ্যা সান ডে। আমি বিকাল চারটে-সাড়ে চারটে নাগাদ নেত্রীর বাড়িতে যাই এবং সেখানে বিষয়টা শেষ পর্যন্ত ফয়সালা হয়নি। এরপর হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতির কন্যার বিবাহ ছিল নাগপুরে। একটি বিশেষ বিমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগপুরে যান। সেদিনই ফিরে আসেন। আকাশ পথে ছিলাম আমি, মমতাদি আর মুকুল দা (মুকুল রায় তখন তৃণমূলে)। আকাশ পথেই আমারটা ফাইনাল হয়েছিল। মমতাদি মুকুলদাকে বলেছিলেন, দ্যাখো কুণাল রাজি হচ্ছে না...। এই কথাগুলো বলে কিন্তু এটা বোঝাতে চাইছি না যে আমি মহান একটা নেতা। আসলে আমার কিছু গ্রাউন্ড ছিল যে কারণে রাজি হচ্ছিলাম না। আর তাছাড়া, পেশাগত কারণে খুব অল্প বয়স থেকে এমএলএ, এমপি, কাউন্সিলর দেখার ফলে, এ ব্যাপারে আমার বিরাট একটা আগ্রহ ছিল না। আরাকটা কথাও জানাই, শুধু সেবারই নয়, ২০০৬ সালেও (বিধানসভা নির্বাচনে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে দমদম থেকে দাঁড়াতে বলেছিলেন। অরুণাভদার (আইনজীবী ও বর্তমানে কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ) তখন মেয়াদ শেষ। সে সময় ওঁর ঘরে তখন ছিলেন মানিক মজুমদার, মুকুল রায় এবং খুব সম্ভবত অরূপ বিশ্বাস। ওখানে অরূপের টালিগঞ্জটাও ফাইনাল হয়েছিল। তখন আমি হাতে পায়ে ধরে বলি, দিদি না, এখন আমি সাংবাদিকতাটা করি। যার জন্য তখন আরেক জন সাংবাদিক দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু, আমিই ফার্স্ট অফারটা পেয়েছিলাম ২০০৬ সালে (মুখে হাসি)।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস সংসদে সতীর্থদের সঙ্গে কুণাল ঘোষ। ছবি- ফেসবুক।

মুকুল রায়ের সঙ্গে আপনার যোগাযোগ নিয়ে প্রায়ই চর্চা হয়। ব্যাপারটা এখন কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে?

মুকুলদার সঙ্গে আমার এক সময়ে খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল। এরকম দিনের পর দিন গিয়েছে যখন জেলা সফরে মমতাদির পাশের ঘরের রুম মেট হচ্ছি আমি আর মুকুল দা। আমি সাংবাদিকতা নিয়ে এগচ্ছি, মুকুল দা রাজনীতি নিয়ে। এমনও হয়েছে, কালিম্পং-এ দু'জনে ঘুমতে পারছি না ঘরে প্রচন্ড ঠান্ডা ঢুকছে বলে। এই অবস্থায় কম্বল গায়ে রুম হিটার জ্বালিয়ে দু'জন সারা রাত গল্প করে কাটিয়েছি। কিন্তু, পরবর্তীকালে আমার মনে হয়েছিল, আমাকে যে দুর্ভোগ, দুর্যোগ পোহাতে হয়েছে এবং চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম তা মুকুল রায় চাইলে অনেক কম হতে পারত বা নাও হতে পারত। এখানেই আমার মুকুলদার প্রতি কিছু অভিযোগ-অভিমানের জায়গা থাকে।

কেন মনে হয় মুকুল রায় চাইলেই পারতেন বা পারলেও করেননি?

আমি এর মধ্যে এখন ঢুকতে চাই না। তবে পরবর্তীকালে মুকুলদার সঙ্গে আবার আমার একটা মৌখিক সুসম্পর্ক তৈরি হয়। আমি যখন জামিনের শর্তে বাড়ি থেকে বেরতে পারি না, তখনও মুকুল দা এসেছেন আমার বাড়িতে। যে চেয়ারে আমি বসে আছি, সেখানেই বসেছেন। মুকুলদাকে তো আর আমি আমার ভিজিটর হিসাবে বসাতে পারি না। তবে আমার মনে হয়, আমার ক্ষেত্রে মুকুল দা যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি। সেই অভিমানটা থেকেই আমি বেরতে পারি না।

মুকুল রায়ের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা এবং অভিমানের বাইরে সাংবাদিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করতে চাই, জোড়াফুলের মুকুল বিয়োগ এবং পদ্মফুলের মুকুল লাভ, দুটি দলের জন্য কতটা তাৎপর্যপূর্ণ? উনি নাকি হাতের তালুর মতো তৃণমূল সংগঠনটা চিনতেন...

আমার মনে হয় এটা (সংগঠন চিনতেন) ঠিক না। দেখুন, মুকুলদা খুব সিরিয়াস কর্মী। যখন ২০০৪ বা ২০০৫, তখন তৃণমূল ভবনে লোকজন খুব কম, সে সময় কিন্তু মুকুলদাই দুর্গ আগলে বসে থাকতেন। তবে মুকুলদার কিন্তু সেই লিডারশিপ (বাক্যটি শেষ করলেন না)...মুকুল দা কাজ করেছেন যখন মমতাদির ওয়েভ রয়েছে তখন। কিন্তু, যখন মমতাদির ওয়েভ ডাউন, তখন মুকুল দা সাকসেস এনে দিতে পারেননি। তাহলে ২০০১-এ ক্ষমতায় এল না কেন, তখনও তো মমতা ব্যানার্জি রেলমন্ত্রী? সেই সময় জোট ছিল। ২০১১-তে যা যা ফ্যাক্টর, ২০০১ সালেও তাই ছিল, সেম। ২০০৪-এ পারেনি কেন? ২০০৬-এ পারেনি কেন? যদি মুকুল রায়ের সাংগঠনিক ক্যারিশ্মাই থাকবে, তাহলে যখন মমতাদির হাওয়া নেই তখন ফেল করছে কেন? মুকুলদার যদি এতই সাংগঠনিক দক্ষতা থেকে থাকে, তাহলে এই যে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময় শোনা গিয়েছিল যে ৭২ হাজার বুথের ৬ জন করে কর্মী যোগ দেবেন পদ্ম শিবিরে, তার কী হল? কোথায় সেসব কর্মী? আসলে মুকুল দা সিনসিয়র কর্মী। কিন্তু মুকুল দা 'জলসাঘর' সিনেমায় ছবি বিশ্বাসের ম্যানেজার হতে পারবেন না। বরং যখন জমিদার বাড়ি জমজমাট, তখন মুকুল দা সাকসেসফুল নায়েবমশাই।

এ মুহূর্তে বাংলায় বিজেপির যা অবস্থা, তাতে কি মুকুল রায় আপনার কথায় সাকসেসফুল নায়েবমশাই হয়েই থেকে যেতে পারবেন?

আমি বুঝতে পারছি না, এই কথাটা সব জায়গায় বারে বারে কেন বলা হচ্ছে! আরে বিজেপি তো আগে থেকেই ছিল। বিজেপিকে নিয়ে ইদানীং একটা হইহই রব উঠেছে। অথচ, অতীতেও যখন বিজেপি দিল্লিতে ক্ষমতায় থেকেছে, তখন এ রাজ্যেও বিজেপির কিছুটা উত্থান হয়েছে। জাতীয় স্তরে বিজেপির ক্যারিশ্মাটিক নেতা এলে, বাংলাতেও খানিকটা ভাল ফল করে ওরা। বাজপেয়ীজির আমলেও এটা হয়েছে। ২০০৪ সালে যেই না বাজপেয়ীজি সরলেন, ব্যাস বাংলা থেকেও বিজেপি হাওয়া। আর নেই। এবার যে লোকসভা ভোটটা হল, তা নরেন্দ্র মোদীর নামে হয়েছে। মানুষ লোকসভার ভোট দিয়েছেন স্থায়ী সরকারের জন্য। নরেন্দ্র মোদীর প্যারালাল কোনও মুখ মানুষের মনে আস্থা অর্জন করতে পারেননি। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ব্যর্থ। এই জন্যই বাংলায় বেশি আসন পেয়েছে। তাছাড়া, তৃণমূল কংগ্রেসেরও কিছু মাইনাস পয়েন্ট কাজ করেছে। ফলে, বিজেপি-র এই জয়ে মুকুল রায়ের কোনও ভূমিকা নেই। আর যদি থেকে থাকে তাহলে এটাও মানতে হবে লোকসভার পর রাজ্যের তিনটি উপনির্বাচনে বিজেপির হারের দায়িত্বও তাঁরই। বরং রাস্তায় সাংবাদিকতা করতে গিয়ে যা বুঝেছি তাতে আমি বলব, তপন সিকদারের পর বিজেপির বাংলায় মোস্ট এফেক্টিফ প্রেসিডেন্ট হলেন দিলীপ ঘোষ। উনি সচেতনভাবে মাঠের ভাষায় বিতর্কিত কথা বলেন। ওটাই ওর কৌশল। এতে হয়তো আমরা বিরোধীরা বা বুদ্ধিজীবীরা সমালোচনা করছি, কিন্তু আপামোর বিজেপি কর্মীদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।

Kunal Ghosh, কুণাল ঘোষ, Kunal Ghosh Journalist, Mukul Roy, মুকুল রায়, Mamata Banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, All India Trinamool Congress, তৃণমূল কংগ্রেস অতীত। ছবি-ফেসবুক।

বেশি ক্রেডিট দিচ্ছেন দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু, মুকুল রায়তো কৌশল রচনায় সিদ্ধহস্ত?

আরে, ভোট কুশলী তো পিকে। মুকুল দা তো নেতা। তা না হলে, পিকে আর এমআর-এ ফারাক কী থাকল? উনি তো বড় নেতা। তা একজন বড় নেতা একটা দল ছেড়ে অন্য দলে গেলেন, তাঁর সঙ্গে তো কিছু কর্মী যাবে। সে সব কোথায়?

একুশের ভোটে কী হবে মনে হচ্ছে?

বিজেপি যদি সিএএ-এনআরসি সামলাতে না পারে, তাহলে অভিষেক যেভাবে হাল ধরেছে তাতে এটুকু বলতে পারি তৃণমূলের আসন একটা হলেও বাড়বে।

তৃণমূলে এখন প্রতিশ্রুতিবান কারা?

অভিষেক, শুভেন্দুরাই তো ভাল কাজ করছে। সিনিয়রদের মধ্যে পার্থ দা। বিশেষ করে অভিষেকের কথা বলব। ও বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে দলটা করছে। কাগজে মিডিয়ায় নাম হচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের, কিন্তু আসল কাজটা করছে অভিষকই। প্রচুর সময় দিচ্ছে ছেলেটা। পিকের টিম যাতে কাজ করতে পারে সেই পরিসরটাই তৈরি করে দিচ্ছে ছেলেটা। নতুন যুগের ছেলে ও, একদম অন্য কায়দায় দলটা গোছাতে চাইছে।


ক্যামেরা- অরুণিমা কর্মকার

সাক্ষাৎকারের প্রায় শেষ পর্বে আমরা। এবার যে নামগুলি বলব, তাঁদের সম্পর্কে দু'টি করে বাক্য বলতে হবে।

(সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন...)

সুদীপ্ত সেন

রহস্যময় ব্যক্তি। সঠিক সময় সঠিক তথ্যগুলি দিলে উনিও বিপদে পড়তেন না, বহু মানুষকেও বিপদে পড়তে হত না।

রাজীব কুমার

উত্তম কুমার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। উনি ছয় বছর আগে একটু নিরপেক্ষ থাকলে আজকের এই দিনগুলো দেখতে হত না।

মুকুল রায়

চাণক্য, মেড ইন চায়না। (একটাই বাক্য বললেন)

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পূর্ণ মূল্যায়নটা ভবিষ্যতে হবে। আজও আমার নেত্রী।

(শেষ)

bjp Mamata Banerjee mukul roy Saradha Scam All India Trinamool Congress
Advertisment