Advertisment

'কলঙ্কহীন' জয়ে মহানাগরিক হাকিম, পরাস্ত পুরোহিত

এদিন নতুন ময়ের বলেন, “মেয়র নির্বাচনে বিজেপির নৈতিক পরাজয় হয়েছে। তারা ভেবেছিল ক্রশ ভোটিং হবে। কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। স্বাধীনতার পর প্রথম সংখ্যালঘু মেয়র করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল ধর্মে নয়, কর্মে বিশ্বাস করে।’’

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
firhad hakim

কলকাতা পুরসভার মেয়রপদে শপথ নিচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম। ছবি- শশী ঘোষ

প্রত্যাশিতভাবেই কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্বাচনে জয়ী হলেন ববি হাকিম। ববি হাকিমই যে কলকাতার মেয়র হবেন, এ বিষয়ে বিন্দু মাত্র সংশয় ছিল না কোনও মহলেই। তবে, ববির জয় কি 'কলঙ্কহীন' হবে? সোমবারের কলকাতা পুরসভা উন্মুখ ছিল এই একটি প্রশ্নের উত্তর জানতে। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, 'কলঙ্কহীন জয়'ই ছিনিয়ে নিয়েছেন হাকিম। আসলে, মেয়র পদে ববির বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিত সচেষ্ট হয়েছিলেন দলের বাইরে (পড়ুন, তৃণমূল থেকে) থেকে অন্তত একটি ভোট টেনে আনতে। আর তা পারলেই, তিনি 'নৈতিক জয়' পেয়েছেন বলে মন করবেন বলেও জানিয়েছিলেন কলকাতার দীর্ঘদিনের এই বিজেপি কাউন্সিলর। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পুরোহিত 'নৈতিকভাবে'ও পরাজিত হয়েছেন। ফলে, ববি হাকিমের এই জয়কে 'কলঙ্কহীন' বলাই চলে।

Advertisment

এদিন গণনা শেষে দেখা গেল, ১২১-৫ ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিতকে পরাজিত করেছেন তৃণমূল প্রার্থী ফিরহাদ হাকিম (ববি)। তৃণমূল কাউন্সিলর সুস্মিতা ভট্টাচার্য আসতে পারেননি শারীরিক অসুস্থতার জন্য। এদিন স্বাধীনতার পর কলকাতা পুরসভার প্রথম সংখ্য়ালঘু মেয়র ধুতি পাঞ্জাবী পড়ে শপথবাক্য পাঠ করলেন। বাম কাউন্সিলররা এই ভোট বয়কট করেছেন। তাঁদের দাবি, অনৈতিকভাবে পুর আইনে বদল এনেছে রাজ্য। ভোট বয়কট করলেও শপথে হাজির ছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়। ফল প্রকাশ হতেই পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ববিকে ফোন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- রাম মন্দির নিয়ে অর্ডিন্যান্স আনার কথা ভাবছে না বিজেপি

shabhon chatterjee সদ্যপ্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মুখে সেই পরিচিত হাসি উধাও। ছবি- শশী ঘোষ।

সোমবারের এই নির্বাচনের আকর্ষণের প্রথম কেন্দ্রবিন্দু যদি 'কলঙ্কে'র প্রশ্ন হয়, তাহলে বিদায়ী মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন দ্বিতীয় কেন্দ্রবিন্দুতে। তিনি কি সত্যিই শেষ পর্যন্ত আসবেন, এই প্রশ্নে আগাগোড়া দোলাচলে ছিলেন পুরকর্মী থেকে রাজনীতির কারবারিরা। কিন্তু, সব আশঙ্কা কাটিয়ে কথা মতো (গতকাল ববি হাকিম তাঁকে ফোন করে এদিন উপস্থিত থাকার অনুরোধ করেন)  তিনি এলেন। তবে, সারাক্ষণই রীতিমতো গম্ভীর মুখেই দেখা গিয়েছে সদ্যপ্রাক্তন মেয়রকে। 'দলের অনুগত সৈনিক' শোভন এদিন ভোট দিয়েই পুরভবন ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। ববির শপথ গ্রহণের সময় দেখা মেলেনি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের।

আরও পড়ুন- ‘ভগবানে ভাগাভাগি নয়’ বিজেপিকে বার্তা মমতার

অনেকেই ভেবেছিলেন শোভন আসবেন না। কিন্তু তিনি যে এখনও তৃণমূল কংগ্রেসেই আছেন, এদিনের আগমণর মাধ্যমে তারই প্রমান দিলেন তিনি, এমনটাই মত রাজনীতির কুশীলবদের। মেয়র হিসাবে পদত্য়াগ করার পর এ দিনই প্রথম পুরসভায় পা রাখলেন বিগত আট বছরের মেয়র। সদ্যপ্রাক্তন হয়ে যাওয়া মেয়র নতুন মেয়র সম্পর্কে বললেন, “তিনি অত্যন্ত যোগ্য ব্যক্তি। মেয়র হিসাবে ভালই কাজ করবেন।’’

firhad hakim pc শপথ নিয়ে মেয়রের দপ্তরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি ফিরহাদ হাকিম। ছবি- শশী ঘোষ।

মেয়র ছাড়াও এদিন শপথ নিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ-সহ অন্য মেয়র পারিষদরা। নতুন মেয়র পারিষদ হয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর বৈশ্বান্বর চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া, মেয়র পারিষদ হিসাবে শপথ নিয়েছন দেবব্রত মজুমদার, দেবাশিস কুমার, মঞ্জুর ইকবাল, সামসুজ্জামান আনসারি, তারক সিং, ইন্দ্রানী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন সমাদ্দার, আমিরুদ্দিন ববি, রতন দে, রামপেয়াারী রাম, অভিজিত মুখোপাধ্যায়।

minadevi purohit মেয়র পদে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী মনীদেবী পুরোহিত। ছবি- শশী ঘোষ।

আরও পড়ুন- উলট পুরাণ: জলপাইগুড়িতে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে শতাধিক

শপথ নেওয়ার পর মেয়রের ঘরে গিয়ে বসেন ফিরহাদ হাকিম। সেখানে কাউন্সিলররা তাঁকে স্বাগত জানান। এদিন নতুন ময়ের বলেন, “মেয়র নির্বাচনে বিজেপির নৈতিক পরাজয় হয়েছে। তারা ভেবেছিল ক্রশ ভোটিং হবে। কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। স্বাধীনতার পর প্রথম সংখ্যালঘু মেয়র করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল ধর্মে নয়, কর্মে বিশ্বাস করে।’’ মেয়র জানান, সেতু ভাঙা, রাস্তা-ঘাট খারাপ, জমা জল- যে কোনও অসুবিধায় পড়লেই শহরবাসী হোয়াটসঅ্য়াপ করতে পারেন। তাছাড়া কেউ যদি গৃহ নির্মাণের পর বাকি জায়গায় বড় গাছ লাগায়, সে ক্ষেত্রে কর-ছাড় মিলবে। ছাড়ের পরিমান হবে ৯০ শতাংশ। পাশাপাশি, শহরে বনসৃজন করার জন্য পোর্টের কাছে জমি চাইবে পুরসভা।

tmc KOLKATA CORPORATION
Advertisment