দলছুটদের দলে ফেরানোর অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানে নব্য ও আদি তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাথা ফাটলো এক যুব নেতার। কোতোয়ালি থানায় হলো অভিযোগ দায়ের। কোতোয়ালি থানার আই সি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কারণে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, বা নির্দল হয়ে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, এমন সবাইকে নিয়ে উত্তরের কেষ্ট দা (কৃষ্ণ দাস) এর নেতৃত্বে জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর এলাকার গোমস্ত পাড়ায় গত সন্ধ্যায় তৃণমূলের একটি 'জয়েনিং' অনুষ্ঠানের মাঝপথে লুতফর রহমান যখন সভা পরিচালনা করছিলেন, তখন তাঁকে হাতের মাইক জমা দিয়ে বসতে বলেন কৃষ্ণ দাস। কৃষ্ণবাবু বলেন, "এই অনুষ্ঠানের আয়োজন আমি করেছি। তাই আমি যেভাবে বলবো, অনুষ্ঠান সেইভাবে চলবে।"
এতেই অপমানিত হন যুব নেতা লুতফর রহমান।সভামঞ্চে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। পরে মূল পার্টি ও যুবর দুই গোষ্ঠীর সদস্যরা একে অপরের বিরুদ্ধে লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র, এমন কি ৯ এম এম পিস্তল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: দুর্দিনের কর্মীদের দলে টেনে আনুন, নাহলে আমি আনব: মমতা
ঘটনায় যুব তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির মাথা ফাটে। তিনি একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। বাকিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কৃষ্ণ দাস, প্রধান হেমব্রম সহ সাতজন তৃনমূল নেতার নামে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চ্যাটার্জি বলেন, "কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বেই যুবকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এই হিংসার রাজনীতির ফলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি (তৃণমূল যুব সভাপতি) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবো সব কথা। থানায় অভিযোগ হয়েছে। এতো আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে আসছে তা পুলিশকে দেখতে হবে।"
অন্যদিকে আদি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী মহম্মদ গনিখান জানান, "দিদির পুরোনোদের নিয়ে চলার নির্দেশের পরেও আমরা আজ আক্রান্ত। আমরা কোথায় যাবো? কৃষ্ণ দাসের দাদাগিরির বিহিত চাই।"
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে কৃষ্ণ দাস জানান, "যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে গিয়েছিলেন, আজ তাঁদের জয়েনিং ছিল। এই বুথে আজ ৪৫০ জন জয়েন করলেন।"
উল্লেখ্য, গত ১৭ নভেম্বর কলকাতায় তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির সভায় মমতা বলেছিলেন, "যাঁরা দুর্দিনে তৃণমূলের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের টেনে আনবেন। এখন তাঁরা মাথা নিচু করে বসে আছেন। আর নতুন যাঁরা ভাল কাজ করছেন, তাঁদের সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে দিন। শুধু আমি করব আর আমি ভোটে দাঁড়াব, এটা হতে পারে না। ঘরটাকে বড় করতে হবে, ছোট করলে চলে না। আপনি নিচ্ছেন না তাই অন্য দল গুন্ডামি করছে।"