বাংলা ছাড়িয়ে ত্রিপুরা ও অসমে সংগঠন বিস্তারে ঢালাও কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল। এবার ঘাস-ফুলের নজরে গোয়া। রবিবার, ভবানীপুরের নির্বাচনী প্রচার সভায় তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই সংগঠন গড়তে সে রাজ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন দলের দুই সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা কথা বলেছেন গোয়ার নানা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও নাগরিক সমাজের ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে। এবার শুরু হবে তৃণমূলে যোগদানের পালা। এক্ষেত্রে গোয়ার কংগ্রেসের কোনও বড় নেতাকে যোগদান করিয়েই নজর কাড়তে মরিয়া বাংলার শাসক দল। সম্ভব আজ, সোমবারই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিধায়ক লুইজিনো ফেলেইরো।
৭১ বছর বয়সী লুইজিনো ফেলেইরো গোয়ার অন্যতম কংগ্রেস নেতা। ১৯৯৮-৯৯ সালে সামলেছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব। ছিলেন দলের প্রদেশ সভাপতি। বর্তমানে তিনি দক্ষিণ গোয়ার নাভেলিম বিধানসভার বিধায়ক। এমনকী এআইসিসি-র সম্পাদক ফেলেইরো উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির দলীয় সংগঠন দেখভালের দায়িত্বেও ছিলেন। ফলে আগামী বছর ভোটের আগে এই বর্ষীয়ান এই নেতার তৃণমূলে যোগদানের খবর নিঃসন্দেহে হাত শিবিরের কাছে বড় ধাক্কা হতে চলেছে।
যদিও গোয়ার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গিরিশ চোদারকার লুইজিনো ফেলেইরোর দলত্যাগের খবর গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
গোয়ায় দলের সংগঠনকে গড়ে তুলতে বিশ্বাসযোগ্য নেতাদের দলে নেওয়া হবে৷ তৃণমূলের তরফে এই ইঙ্গিত ছিল। সে রাজ্যে ক্ষমতায় বিজেপি। ফলে বিরোধী দল কংগ্রেস ভাঙিয়ে নেতাদের তৃণমূলে যোগদান করানোই যে জোড়া-ফুলের লক্ষ্য ডেরেকের হাইকম্যান্ড সংস্কৃতিকে খোঁচা তা স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন- ভবানীপুরে প্রিয়াঙ্কা জিতলে বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়বেন শুভেন্দু
সর্বভারতীয়স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে উদ্যোগী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সনিয়া-রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী দলের নেতৃত্বের সঙ্গে এই ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, বিরোধী জোট হলেও যে নেতৃত্বের প্রশ্নে টানাপোড়েন থাকবে তাও প্রায় পাকা। কারণ ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচারে গত কয়েকদিনে কংগ্রেসকে বিঁধছেন দিয়েছেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বলছেন, বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেস ব্যর্থ। একই সঙ্গে ত্রিপুরা,অসম থেকে গোয়া- সুস্মিতা দেব, লুইজিনো ফেলেইরো দলে টেনে হাত শিবিরকে ঝটকা দিচ্ছে তৃণমূল। ফলে ২০২৪ সালের ভোটকে মাথায় রেখে জাতীয়স্তরে বিরোধী জোট আদৌ সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
উল্লেখ্য, গোয়ায় তৃণমূলের বিস্তার কতটা সম্ভব তা আগেই রেইকি করেছে প্রশাসন্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাক। তিন মাস আগেই সংস্থার প্রতিনিধিরা গোয়ার রাজনৈতিক জমি জরিপের কাজ করে গিয়েছিলেন। এরপরই আরব সাগরের তীরে এই ছোট্ট রাজ্যে সংগঠন তৈরিতে মনোনিবেশ করল তৃণমূল।
৪০ আসনের গোয়া বিধায়নসভায় বর্তমানে কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ৫। ২০১৯ সালে ১০ বিধায়ক হাত শিবির ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আগামী বছর ভোট, তার আগেই লুইজিনো ফেলেইরো তৃণমূলে গেলে আবারও বিধানসভায় ক্ষমতা কমবে কংগ্রেসের।
বর্ষীয়ান কংগ্রেস ছাড়ার জল্পনার মধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেসসভাপতি চোদানকার ও পরিষদীয় দলের নেতা দিগম্বর কামাত গত শনিবার রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন। কথা হয় জলের তরফে গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পি চিদাম্বরম ও কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালের (সংগঠন) সঙ্গেও।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন