নাগরিকত্ব বিল নিয়ে উত্তাল ত্রিপুরা। এর মাঝেই বিলের বিরোধিতা করে মঙ্গলবার বিজেপির সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন বিধায়ক রাজেশ্বর দেব বর্মণ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় গত ৮ জানুয়ারি পশ্চিম ত্রিপুরার মাধববাড়িতে পুলিশের গুলিতে আহত হন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তিনজন।
দলত্যাগের কথা জানিয়ে ত্রিপুরার বিজেপি প্রধানমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে লেখা চিঠিতে রাজেশ্বর দেব বর্মণ জানিয়েছেন, "ত্রিপুরার বিজেপি সরকার নাগরিকত্ব বিল পাশ করার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছে, রাজ্যের সাবেক বাসিন্দাদের প্রতি সরকার কতটা নির্মম, এবং বর্ণ বৈষম্যে বিশ্বাসী।"
রাজেশ্বর দেব বর্মণ অভিযোগ করেছেন, মাধববাড়ির ৮ জানুয়ারির ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। রাজ্যে বিজেপি-আইপিএফটি-র জোট সরকার বিভাজনের রাজনীতি করছে, এমনটাই জানিয়েছেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক।
আরও পড়ুন, মমতা, মহাভারত ও বিপ্লব কুমার দেব
"মাধববাড়ির ওই ঘৃণ্য ঘটনা পরিকল্পিত। রাজ্যের শান্তি এবং স্থিতাবস্থা নষ্ট করেছে ওই ঘটনা," ইস্তফাপত্রে জানিয়েছেন ত্রিপুরার তাকারজালা-জাম্পুইজালার প্রাক্তন বিধায়ক।
ভারতীয় সংবিধানের ২৮০ নম্বর ধারার ষষ্ঠ তফশিল সংশোধনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে 'রাজনৈতিক চমক' বলেও অভিহিত করেছেন রাজেশ্বর দেব বর্মণ।
বিগত ১০ মাসে রাজ্যে সুশাসন জারি রাখতে অপারগ হয়েছে বিপ্লব দেবের সরকার। রাজ্যের আদিবাসীদের জীবন এবং তাঁদের স্বাধীনতা রক্ষাও করতে পারেনি ত্রিপুরা সরকার, অভিযোগ দেব বর্মণের।
রাজেশ্বরবাবুর এই অভিযোগ শুনে ত্রিপুরার বিজেপি মুখপাত্র অশোক সিনহা জানিয়েছেন, বেশ কিছু মাস আগেই নাকি দল ছেড়েছেন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সিনহা জানিয়েছেন, "কয়েক মাস আগে বিজেপিতে এসেছিলেন রাজেশ্বর। দলীয় অনুষ্ঠান বা কাজে তিনি আসতেন না। অন্য দলের হয়ে সাংবাদিক বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বেশ কিছু মাস আগে কিছু না জানিয়ে দল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন তিনি। কোনোভাবেই উনি বিজেপি-র কেউ নন এখন। খুব সম্ভব (বর্তমান মহারাজা) প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্য দেব বর্মণ রাজেশ্বরকে দল ছাড়তে উৎসাহ দিয়েছেন। কিন্তু মহারাজা কখনও এমন কিছু করবেন না, যাতে রাজ্যের ক্ষতি হয়।" বর্তমানে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রদ্যোত কিশোরের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি।