প্রশান্ত ক্লোজড চ্যাপ্টার। ২০২৪-এর লক্ষ্যে ঝাঁপাতে এবার কংগ্রেসের টাস্ক ফোর্সে একদা পিকে-সহযোগী সুনীল কানুগোলু। মঙ্গলবার কংগ্রেস সভানেত্রী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের রণকৌশল নির্ধারণে একটি টাস্ক ফোর্স গড়েছেন। পি চিদম্বরম, মুকুল ওয়াসনিক, জয়রাম রমেশ, কে সি ভেনুগোপাল, অজয় মাকেন, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাদের সঙ্গে সেই টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন ভোটকুশলী সুনীল কানুগোলু।
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসকেই শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে মেনে নিয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছিলেন পিকে। কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয়েই সেই কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে কংগ্রেসে যোগ দিলে তাঁকে 'ফ্রি-হ্যান্ড' দেওয়ার আবদার জোড়েন পিকে। প্রশান্ত কিশোরের এই আবদারেই যাবতীয় আপত্তি ছিল সোনিয়া-রাহুলদের। শেষমেশ সেই কারণেই কংগ্রেস সখ্যতা আর বাড়েনি পিকে-র। প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক চ্ছিন্ন হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রাচীন এই দলে এন্ট্রি হয় কানুগোলুর।
একটা সময়ে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে জুটি বেঁধে নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণ করেছেন এই কানুগোলু। তবে পিকে-র চেয়ে বরাবরই লো প্রোফাইল মেইন্টেন করায় বিশ্বাসী তিনি। কখনও সেভাবে প্রচারের আলোয় আসতে চান না তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কানুগোলুর উপস্থিতি চোখে পড়ে না। প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিত্ত্বেরও আকাশ-পাতাল ফারাক। এহেন সুনীল কানুগোলুই এবার বাজি কংগ্রেসের? তিনি কি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন? এপ্রশ্নের উত্তরে দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ''হ্যাঁ, তিনি কংগ্রেসের একজন সদস্য।''
২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনে অবশ্য পিকে এই কানুগোলুকে সঙ্গে নিয়েই বিজেপির জন্য কাজ করেছিলেন। তবে তারপর আর পিকে-র সঙ্গে কাজ করতে দেখা যায়নি কানুগোলুকে। জানা গিয়েছে, কর্নাটকে আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে কংগ্রেস নিয়োগ করেছে এই কানুগোলুকে। কানুগোলুর সংস্থা মাইন্ডশেয়ার অ্যানালিটিক্সের ইনপুট মেনেই দক্ষিণের এই রাজ্যে এগোচ্ছে কংগ্রেস। কানুগোলুকে ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন এমন এক ব্যক্তি তাঁর সম্পর্কে বলেন, ''তিনি তাঁর সীমা জানেন। তিনি কখনই তাঁর ক্লায়েন্টদের পৃষ্ঠপোষকতা বা ক্ষমতায়নের জন্য বাধ্য করতে চেষ্টা করেন না। তিনি কৃতিত্ব নেন না বা তিনি তাঁর কানেকশনগুলিও প্রকাশ করেন না।"
আরও পড়ুন- আরও বড় ভাঙন বিজেপিতে? তৃণমূলে ফিরতে কী শর্ত দিলেন সৌমিত্র খাঁ?
জানা গিয়েছে, ভোট স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে কানুগোলুর এই লো-প্রোফাইল মানসিকতাই কাছে টেনেছে কংগ্রেসকে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, "সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর (কানুগোলু) ছবি হিসেবে যেটি রয়েছে সেটিও তাঁর ভাইয়ের। সুতরাং, তাঁর কাজের ধরন আপনারা বুঝতে পারছেন। তিনি পিছনে থাকতেই পছন্দ করেন। আমার ধারণা তিনি দলের উপর তাঁর মতামত ও ধারণা চাপিয়ে দেন না। প্রতিটি দলেরই শক্তি ও দুর্বলতা রয়েছে। প্রতিটি দলই আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে। তিনি সেটা বোঝেন এবং দলের সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেন।''
প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্ক চ্ছিন্ন হওয়ার পর কানুগোলু ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে DMK প্রধান এবং বর্তমানে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের হয়ে কাজ করেছিলেন। স্ট্যালিনের হয়ে তামিলনাড়ুতে তাঁর "নামাক্কু নাম" প্রচারাভিযান কার্যত ঝড় তুলেছিল। ২০১৬ থেকেই ফের একবার রাজনীতির মূল ধারায় ফেরেন কানুগোলু। এবার কংগ্রেসের মতো একটি প্রাচীন দলের রণকৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে।
Read full story in English