বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে চম্বলের ডাকাত বলে কটাক্ষ করলেন রাজ্য়ের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। পাল্টা হিসেবে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু মদন মিত্রকে চোর-ছ্যাঁচড় বলে সম্বােধন করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত রাজোয়ার পরিবারকে নিয়ে। পুরুলিয়ায় গিয়ে এই রাজোয়ারদের বাড়িতেই পা রেখেছিলেন অমিত শাহ। রাতারাতি তাঁদের কলকাতায় নিয়ে এসে ঘটা করে হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন মদন। জানালেন, কালীঘাটে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের দলীয় কার্যালয়ে ওই চার জন আশ্রয় নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া সফরকালে লাগদায় গ্রামবাসীর বাড়িতে ঢুকে যান অমিত শাহ। শিশুবালা রাজোয়ার, সঞ্জয় রাজোয়ার, অষ্টমী রাজোয়ার ও ফুচু রাজোয়ারের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে যান। শুক্রবার ওই চারজনকে নিয়ে কালীঘাটে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বাড়ির নীচে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন মদন মিত্র। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘হঠাৎ করে পুলিশ ও আধাসেনা নিয়ে ভয়ঙ্কর চেহারার লোক এঁদের বাড়িতে প্রবেশ করে। এদের বলেন, আমি এসেছি, তোমরা বিজেপিতে যোগ দাও। এরা ভাবতেই পারেনি ওটা খায় না মাথায় দেয়। এদের ওই সব নিয়ে কোন আগ্রহ নেই। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে নিয়ে ভাববার অবকাশ নেই। এর আগে উনি কর্মীর বাড়িতে গিয়েছেন। কলাপাতায় খেয়েছেন। এবার নিমন্ত্রণ দূরের কথা, ভালবেসে কেউ দুটো বসার চেয়ারও এগিয়ে দিল না। এরপর মানুষ ঢুকতে দেবে না।’’
মদন যাই বলুন, এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে দেখা গেল চারজনের মুখেই ভয়ের ছাপ। চারজনের মধ্যে দুজনের সারাক্ষণ ছিল হাত জড়ো করা। দিন মজুরের কাজ করেন ফুচু রাজোয়ার। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার জন্য কি জোর করেছিলেন অমিত? ফুচু মাথা নেড়ে না বলতেই, তাঁর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকান প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত মদন মিত্র। এরপরই চিত্রনাট্যের মত গড়গড় করে ফুচু জানিয়ে দেন, ধমকি দেওয়ায় তাঁরা রাতারাতি ট্রেনে চেপে কলকাতায় চলে এসেছেন।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে রাজোয়ার পরিবারের চারজনকেই কড়া বেষ্টনীর মধ্যে সাংবাদিক বৈঠকে নিয়ে আসা হয়। বৈঠক শেষে ফের কর্ডন করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের।
এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘আমরা জানি ওঁরা বিজেপি করেন না। ওঁরা বিজেপি-র সভাতেও যাননি। ওই বাড়িতে ঢুকে সাধারণ ভাবেই কুশল সংবাদ নিয়েছিলেন।’’ মদন মিত্র সম্পর্কে সায়ন্তনের বক্তব্য, কয়েকদিন পর সিবিআই যাঁকে জেলে ঢোকাতে পারে সেই চোর-ছ্যাঁচড়ের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বলা সমীচীন নয়।’’