Advertisment

ফার্মহাউসের আড়ালে মধুচক্র! বিজেপির নেতার সম্পত্তিতে পুলিশি হানায় শাসক শিবিরে ফাটল

একটা রিসর্ট, একটা পুলিশি হানা আর একাধিক গ্রেফতার। এই ঘটনাই এখন মেঘালয়ে শাসক জোটে ফাটল ধরিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
meghalaya, Crime, BJP, brothel, honeytrao, Conrad Sangma, bangla news, bengali news

বিরাট বিতর্কে মেঘালয়ের বিজেপি সহ-সভাপতি বার্নার্ড এন মারাক ওরফে রিম্পু।

একটা রিসর্ট, একটা পুলিশি হানা আর একাধিক গ্রেফতার। এই ঘটনাই এখন মেঘালয়ে শাসক জোটে ফাটল ধরিয়েছে। শাসক জোট ন্যাশনাল পিপলস পার্টি আর বিজেপির মধ্যে এখন প্রবল অসন্তোষের পরিবেশ। কারণ, বিজেপির সহ-সভাপতি বার্নার্ড আর মারাকের তুরার ফার্মহাউসে হানা দিয়ে ৬ শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মধুচক্রের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৩ জনকে। তাতেই চটেছেন বিজেপি নেতা বার্নার্ড ওরফে রিম্পু।

Advertisment

গতচ শনিবার মেঘালয় পুলিশের বিশেষ অভিযান চলে নেতার ফার্মহাউসে। আগে জঙ্গি ছিলেন রিম্পু। বর্তমানে রাজ্য বিজেপির পদাধিকারী। আর তাঁর খামারবাড়ি-ই কি না মধুচক্রের আসর! গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম এক কিশোরীর যৌন হেনস্তার খবর পায় পুলিশ। তার পর অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর মধ্যে ২৩ জন মহিলা। ৬ শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারির ভয়ে পলাতক রিম্পু।

বর্তমানে গারো আদিবাসী স্বশাসিত জেলা পরিষদের সদস্য রিম্পু আগে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন গারো ইনসার্জেন্ট গোষ্ঠী অচিক ন্যাশনালিস্ট ভলান্টিয়ার কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। পৃথক গারো রাজ্যের জন্য তাঁরা লড়াই করতেন। তার পর অস্ত্র ফেলে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসেন। যুক্ত হন বিজেপির সঙ্গে। তাঁর দাবি, এই ফার্মহাউসে কোনও অনৈতিক কাজ হয় না। কিন্তু পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা রুজু করেছে।

আরও পড়ুন চরম পৈশাচিক, ৭ বছরের মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ বাবার

৮ ঘণ্টার পুলিশি হানা চলে। প্রচুর মদের বোতল, ৫০০ প্যাকেট অব্যবহৃত কন্ডোম এবং গর্ভনিরোধক বড়ি, ৩৭ হাজার টাকা নগদ, ৩৭টি গাড়ি, ৪৭টি মোবাইল ফোন এবং প্রচুর জাল নথিপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া শিশুদের মধ্য চারটি ছেলে ছিল। একটি বদ্ধ ঘরে তাদের বন্ধ করে রাখা ছিল। উদ্ধারের পর ওরা কথা বলছে পারছিল না। কারণ এতটাই ভয়ে ছিল তারা। অনেক অল্পবয়সী ছেলে-মেয়ে ফার্মহাউসে প্রকাশ্যে মদ্যপান করছিল। অনেকের গায়ে সুতো পর্যন্ত ছিল না।

পুলিশ জানিয়েছে, রিম্পুর বিরুদ্ধে অন্তত ২৫টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। জঙ্গি গোষ্ঠী ভেঙে দেওয়ার পরও অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত রিম্পু। তার মধ্যে তুরা মার্কেটে তোলাবাজি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, অস্ত্র কারবার, পতিতাপল্লি চালানো, বেআইনি মদ বিক্রি, অবৈধ লটারি টিকিট বিক্রি, জবরদখল, জমি মাফিয়া সবই রয়েছে। মেঘালয়ের ডিজিপি এল আর বিষ্ণোই জানিয়েছেন, ওঁর শেষ লোকেশন গুয়াহাটি দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ অসমেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছেন রিম্পু। মোবাইল সুইচড অফ রয়েছে।

আরও পড়ুন দেশের প্রথম আদিবাসী ও সর্বকনিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন দ্রৌপদী মুর্মু

রবিবার একটি ভিডিও বার্তায় রিম্পু বলেছেন, তাঁর প্রাণসংশয় রয়েছে। "আমি পলাতক নই, বা গ্রেফতারি থেকে পালাচ্ছি। আমি শুধু নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে দূরে রয়েছিষ আর শীঘ্রই সত্যিটা সামনে আনব।" তাঁর দাবি, এই ষড়যন্ত্র করে তাঁর চরিত্র হনন করা হচ্ছে। বিজেপির উত্থানে ভয় পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এসব করাচ্ছেন।

এদিকে., বিজেপি রিম্পুর পাশে রয়েছে। তারা বলেছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার রিম্পু। তাঁকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। কারণ গারো পাহাড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর্নেস্ট মাওরি বলেছেন, "তাঁর ফার্মহাউসে সম্মানীয় মানুষজন, পরিবার থাকতে আসে। সেটাকে পতিতালয় বলা বরদাস্ত করা হবে না। এই রিসর্ট তিন বছর ধরে চলছে। এতদিন কোনও অভিযোগ ওঠেনি কেন!" এই প্রসঙ্গে শাসকদল এনপিপি নীরব। আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই শাসকশিবিরে ফাটল ধরেছে।

bjp Meghalaya
Advertisment