/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/09/cats-106.jpg)
এবার আর ‘ইন্ডিয়ার’ নয়, ২০টি দেশের নেতাদের মধ্যে বসেছিলেন ‘ভারতে’র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত!' G20-এর ভিত্তির ওপর গড়ে উঠছে বিজেপির হিন্দুত্বের ইমারত, সর্বত্র এখন ইন্ডিয়া হয়ে উঠছে ভারত, জেনে নিন এর পেছনের কৌশল।
G20 শীর্ষসম্মেলনএবংবিজেপিরকৌশল: G20 শীর্ষ সম্মেলনের সবচেয়ে বড় চমক। ২০টি দেশের নেতাদের সামনে মোদীর বিরাট কৌশল। ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী’ বলেই নিজেকে জাহির করলেন নরেন্দ্র মোদী।
এবার G20 শীর্ষ সম্মেলন ভারতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০টি দেশের নেতারা এসেছেন রাজধানী দিল্লিতে, প্রত্যেকের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সম্পর্কের ‘দারুণ রসায়ন’, যেমন তামাম বিশ্বের নজর কেড়েছে। ঠিক তেমনই জি-২০ –এর মঞ্চ থেকেই 'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’-এর বার্তা মোদীর। যা সামগ্রিক পরিবেশে এক অন্যরকম উষ্ণতা তৈরি করেছে। এর মধ্যেও রয়েছে বৃহত্তর রাজনৈতিক বার্তা।বার্তাটি হল ইন্ডিয়াকে ‘ভারতে’ বদলে ফেলা তৈরি করা। সেই সঙ্গে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী পিচকে শক্তিশালী করা।
আসলে, G20 শীর্ষ সম্মেলনের জন্য প্রগতি ময়দানে সাজানো কনভেনশন সেন্টারে একটি ছোট ঘটনা বিরাট তাৎপর্য বহন করেছে। এবার আর ‘ইন্ডিয়ার’ নয়, ২০টি দেশের নেতাদের মধ্যে বসেছিলেন ‘ভারতে’র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সামনে বসানো প্লেটে বড় অক্ষরে লেখা ছিল ‘ভারত’। এখন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ G20 শীর্ষ সম্মেলন শুধু দেশকে নয়, সমগ্র বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে ইন্ডিয়া থেকে ‘ভারত’ হয়ে ওঠার।
বিতর্কের শুরু রাষ্ট্রপতির পাঠানো নৈশভোজের আমন্ত্রণ পত্র দিয়ে। তাতে উল্লেখ ছিল ভারতের রাষ্ট্রপতির। সেই আমন্ত্রণপত্রের পরেই দেশে ইন্ডিয়া বনাম ভারত বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী তার মন্ত্রীদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন এ বিষয়ে কিছু বলা থেকে বিরত থাকুন। মন্ত্রীদের থেকে কোন বার্তা না মিললেও মোদী নিজেই স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন জি-টোয়েন্টি সভা মঞ্চে। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে ‘ইন্ডিয়ার’ নয়, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী’ বলেই বিশ্বের সামনে জাহির করেছেন।
Speaking at the Session-2 on 'One Family' during the G20 Summit in Delhi. https://t.co/tj1jrzelBA
— Narendra Modi (@narendramodi) September 9, 2023
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে ইন্ডিয়া নামের সঙ্গে বিজেপির হিন্দুত্ববাদ এক বড় সমস্যা। সরকার চাইলে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারত। কিন্তু তা না করে সারা বিশ্বের সামনে সুকৌশলে ইণ্ডিয়াকে ভারতে বদলে দিলেন মোদী।
এখানে একটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে জাতীয়তাবাদ এবং হিন্দুত্ব সবসময়ই বিজেপির কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে G20-এর সাফল্য বিজেপির জাতীয়তাবাদকে ইন্ধন জোগাবে এবং একই G20-এ ‘ভারতের’ উল্লেখ হিন্দুত্বকে আরও শক্তিশালী করবে। এই সময়ে বিজেপি জি-২০-এর সাফল্যকে পুঁজি করার জন্য সব রকম চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে সারা বিশ্বে ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখানোর চেষ্টা চলবে নিরন্তর। একই সময়ে, নিজেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলে সারা বিশ্বের কাছে বার্তা পৌঁছাবে যে বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের সংস্কৃতি ও নিরন্তর সনাতনের পক্ষে।
আরও পড়ুন: < G20 নৈশভোজে ব্রাত্য খাড়গে, চাঁচাছোলা আক্রমণ কংগ্রেসের >
যেহেতু বিরোধী জোটের নাম পরিবর্তন করে ইণ্ডিয়া রাখা হয়েছে, বিজেপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কীভাবে ইন্ডিয়ার মুখোমুখি হবে। প্রথমে ব্রিটিশ রাজের সঙ্গে ইণ্ডিয়াকে যুক্ত করে দেওয়ার কাজ করা হয় সুকৌশলে। এখন ইন্ডিয়াকে মোকাবিলা করতে ভিন্ন রাজনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। জি-২০-এর সাফল্যের সঙ্গে জাতীয়তাবাদকে জুড়ে হিন্দুত্ব এবং ভারতকে এক সুতোয় বাঁধতে চাইছে বিজেপি। বিরোধীদের আক্রমণের লক্ষ্যে বিরাট কৌশল পদ্মশিবিরের।