শনিবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশে কারাগারে থাকা গ্যাংস্টার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আতিক আহমেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে তার ছেলে ১৯ বছর বয়সি আসাদ আহমেদ নিহত হওয়ার মাত্র একদিন পরে এই ঘটনা ঘটল। টেলিভিশনের ছবিতে দেখা গিয়েছে, আতিক আহমেদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই সময় কমপক্ষে দু'জন ব্যক্তি পিস্তল উঁচিয়ে তাদের ওপর পরপর গুলি চালায়।
আতিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা বারবার আদালতের কাছে সুরক্ষা চেয়েছিলেন। তারা হুমকির সম্মুখীন বলে আদালতের কাছে অভিযোগও করেছিলেন। আতিকদের অভিযোগ ছিল যে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আতিক উমেশ পাল হত্যা মামলায় পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন নিজের সুরক্ষার জন্য সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। গত মাসে উমেশ পাল হত্যা মামলায় আতিক-সহ দু'জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। আতিকের ভাই আশরফকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন- এনকাউন্টার নিয়ে ‘আষাঢ়ে গল্প’ ফাঁদছে যোগী পুলিশ? উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি
প্রয়াগরাজে মেডিক্যাল চেকআপে নিয়ে যাওয়ার পথেই আতিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হল। তার ভাই আশরফ আহমেদও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে গ্যাংস্টার-রাজনীতিবিদ আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ, বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝাঁসিতে উত্তরপ্রদেশের ১২ সদস্যের এসটিএফ দলের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়। আসাদের পাশাপাশি এনকাউন্টারে সহ-অভিযুক্ত গোলামও নিহত হয়। তাদের দু'জনের মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা।
আতিক আহমেদের ঘটনা সামনে আসার পর নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'কেউ আইন নিজের হাতে নিতে পারে না। এমনকী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও না। এমনকী, তা যদি কোনও মাফিয়ার বিরুদ্ধে হয়, তাহলেও নয়। এটা কোনও তালিবান রাজ নয়। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উচিত ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া।'
অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেছেন, 'বিজেপি মূল বিষয়গুলো থেকে সাধারণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছে। এই জন্যই ভুয়ো এনকাউন্টারের গল্প ফাঁদছে। এই এনকাউন্টার এবং সাম্প্রতিক এনকাউন্টারগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত, কোনটা সঠিক বা কোনটা ভুল, তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র আদালতের।'