Advertisment

গৌরী লঙ্কেশ মৃত্যুবার্ষিকী: তদন্তে সাফল্যের মুখ, গুলি চালিয়েছিল ওয়াগমারেই

এই গোষ্ঠীটি, যারা নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারে, এম এম কালবুর্গী এবং গৌরী লঙ্কেশের মত চারজন পরিচিত ব্যক্তিকে খুন করেছে, তাদের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছিল ৯ বছর আগে, মালেগাঁও বিস্ফোরণের পর। 

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
গৌরী লঙ্কেশ মৃত্যুবার্ষিকী: তদন্তে সাফল্যের মুখ, গুলি চালিয়েছিল ওয়াগমারেই

গৌরী লঙ্কেশ মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে তদন্তে সাফল্য

গতবছর এই দিনে আততায়ীর গুলিতে মারা গিয়েছিলেন গৌরী লঙ্কেশ। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীর প্রাক্কালে তদন্ত প্রক্রিয়ায় বড়সড় সাফল্য পেল বিশেষ তদন্ত দল। গুজরাটের ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি জানিয়েছে, পরশুরাম ওয়াগমারেই গৌরী লঙ্কেশের উপর গুলি চালিয়ে তাঁকে হত্যা করেছিল।

Advertisment

বিশেষ তদন্তদলের একটি সূত্র জানিয়েছে, গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে সেই ভিডিও এবং ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজ ডিরেক্টরেট অফ ফরেন্সিক সায়েন্সের কাছে পাঠানো হয়েছিল। এই দুই ফুটেজ খতিয়ে দেখে ফরেন্সিক ল্যাব জানিয়েছে দুটি ফুটেজেই একই ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন, গৌরী লঙ্কেশসহ চার বুদ্ধিজীবীর হত্যা: গোলোকধাঁধার মধ্যে কী রয়েছে?

নাম গোপন রাখার শর্তে বিশেষ তদন্তকারী দলের এক অফিসার জানিয়েছেন, "ফরেন্সিক ল্যাব নিশ্চিত করে বলেছে, দুটি ভিজুয়ালেই যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে তারা একই লোক।"

প্রগতিশীল এবং নির্ভীক লেখনীর জন্য পরিচিত গৌরী লঙ্কেশ ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নিজের বাড়ির সামনে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীর খুব কাছ থেকে ছোড়া গুলিতে মারা যান।

ইতিমধ্যে গৌরী লঙ্কেশ হত্যা মামলায় আরও কয়েকজনের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করেছে বিশেষ তদন্তদল। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, "মহারাষ্ট্র এটিএস তাদের খোঁজ শুরু করার পর এরা গা ঢাকা দিয়েছে। এরা সকলেই মহারাষ্ট্র এবং গোয়ার লোক।"

বিশেষ তদন্তদল ইতিমধ্যেই কর্নাটকে নামহীন এই গোষ্ঠীর  অন্তত ৫০ জনকে চিহ্নত করেছে। মহারাষ্ট্রেও ওই গোষ্ঠীর সমসংখ্যক কর্মী রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশেষ তদন্তদল।

ওই ইফিসার এও বলেছেন, "এই গোষ্ঠীটা বিশালাকৃতির এবং এদের নেটওয়ার্ক সারা ভারতে ছড়ানো রয়েছে। আমরা এদের চিহ্নিত করেছি এবং এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের নাম ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়ে দিয়েছি। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা সেটা তাঁরা ঠিক করবেন।"

এই গোষ্ঠীটি, যারা নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারে, এম এম কালবুর্গী এবং গৌরী লঙ্কেশের মত চারজন পরিচিত ব্যক্তিকে খুন করেছে, তাদের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছিল ৯ বছর আগে, মালেগাঁও বিস্ফোরণের পর।

আরও পড়ুন, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাতদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য: বুদ্ধিজীবীদের খুন করতে ২২ জনকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ

এরা মোট ২৬ জনের হিটলিস্ট বানিয়েছিল, এবং তাঁদের মধ্যে চারজনকে খুন করেছিল। শুধু তাই নয়, আরও বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ওপরেও এরা নজর রাখতে শুরু করেছিল, যার মধ্যে রয়েছেন জ্ঞানপীঠ পুরস্কারে সম্মানিত নাট্যকার গিরিশ কারনাড, কে এস ভগওয়ান, কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও ধর্মীয় সন্ন্যাসীর উপরেও।

"কর্নাটকে এই গোষ্ঠীতে লোক নিয়োগ করত মনোহর এবং সুজিত। অমোল কালে ছিল এই গোষ্ঠীর মাথা এবং গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডের চাঁই।" বলেছেন ওই আধিকারিক।

এই গোষ্ঠীর লোকজনের বাড়ি এবং গোপন আস্তানায় হানা দিয়ে পুলিশ জয়ন্ত বালাজি অটোয়ালের লেখা বই উদ্ধার করেছে। এই অটোয়ালেই ১৯৯৯ সালে সনাতন সংস্থা নামের দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

নরেন্দ্র দাভোলকর, গোবিন্দ পানসারে, এম এম কালবুর্গী ও গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এদের মধ্যে যোগাযোগ রাখার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে সনাতন সংস্থা। মহারাষ্ট্রে এটিএস বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করার ঘটনায় যাদের গ্রেফতার করেছে, তাদের সঙ্গেও সনাতন সংস্থার যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

তবে সনাতন সংস্থার তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা কেউ সংস্থার সদস্য নয়।

gauri lankesh
Advertisment