গোটা আফগানিস্তান কার্যত তালিবানি দখলে৷ এদেশে পড়াশোনা করতে আসা আফগান ছাত্রছাত্রীরা পরিজনদের নিয়ে ঘোর আতঙ্কে রয়েছেন৷ আফগানিস্তানের তালিবানি জঙ্গিদের হামলার নিন্দায় সরব পড়ুয়ারা৷ চণ্ডীগড়ে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কিছু আফগান পড়ুয়া৷ একইসঙ্গে আফগান মুলুকে পড়ে থাকা তাঁদের স্বজনদের নিয়েও উদ্বেগ ধরা পড়েছিল তাঁদের চোখে-মুখে৷
আফগানিস্তানে মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে ভারত৷ এই বিশেষ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বহু আফগান ছাত্রছাত্রী৷ এই কর্মসূচিতে ভারত আফগানিস্তানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি স্কলারশিপ চালু করেছে৷ প্রতি বছর ১ হাজার স্কলারশিপ দেওয়া হয় আফগান পড়ুয়াদের৷ গত ২ বছর ধরে ভারত সরকারের দেওয়া স্কলারশিপ পেয়ে এখানে পড়াশোনা করছেন ২৫ বছরের ফারহাদ হাকয়ার৷ কাবুলের বাসিন্দা ফারহাদ এখন চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য৷ কাবুল ঘিরে ফেলেছে তালিবান৷ কাবুলের উপকণ্ঠে থাকা জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই তালিবানি-রাজ কায়েম হয়েছে৷ এই খবর পেতেই ঘোর আতঙ্কে রয়েছেন ফারহাদ৷
আরও পড়ুন- কাবুল ঘিরছে তালিবান, বিনা লড়াইয়েই একের পর এক এলাকা দখল
আফগান এই পড়ুয়া জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেই সে দেশের ছোট্ট একটি শহর থেকে তাঁরা সবাই কাবুলে গিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন৷ কাবুলে থেকেই সরকারি একটি চাকরি খুঁজবেন ভেবেছিলেন তিনি৷ পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বলেই ২০১৯ সালে ভারতের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিলেন ফারহাদ৷ চণ্ডীগড় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর করার জন্য বাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি৷ নিজেদের দেশের এই পরিস্থিতিতে আজ হতাশ তরুণ ফারহাদ৷ তিনি বলেন, “এক বছর আগে আমাকে নিয়ে পরিবারের প্রচুর প্রত্যাশা ছিল৷ তাঁরা চেয়েছিলেন যে আমি আমার পড়াশোনা এখানে শেষ করে যাতে দ্রুত বাড়ি ফিরে যাই৷ তারপর থেকে পরিস্থিতি আমূল বদলে গেছে। এখন ভবিষ্যতকেই আমাদের অতীত বলে মনে হয়৷’’
ভালো করে পড়াশোনা করবেন বলেই দেশ ছেড়েছিলেন ফারহাদ৷ ভারতে এসে লেখাপড়ার পর দেশে ফিরে ভালো চাকরি করতে চান ফারহাদ৷ তবে আফগানিস্তানে ফের তালিবানি-তাণ্ডব মাথাচাড়া দিতেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে ফারহাদের৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন আশা ছিল। বিদেশে কিছু শিখে ফিরে গিয়ে দেশের সেবা করার জন্য আমরা উন্মুখ হয়েছিলাম৷ এটাই ছিল আমাদের প্রজন্মের মূল ইচ্ছা৷ কিন্তু এখন যেন সবই পিছলে যাচ্ছে। ভবিষ্যতকেই অতীত বলে মনে হচ্ছে। লক্ষ-লক্ষ আশা এখন পিছনে পড়ে যাচ্ছে৷ আমরা অনেকেই উন্নত ভবিষ্যতের আশায় দেশ ছেড়েছিলাম৷’’
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন