কংগ্রেস ছাড়তেই ঘর হারালেন গুলাম নবি আজাদ। কাশ্মীরের প্রবীণ নেতা অভিযোগ করেছেন, তাঁকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এনিয়ে সদ্যপ্রাক্তন দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কংগ্রেস থেকে আজাদ হওয়া এই নেতা। তিনি বলেন, 'আমার ঘর হারানোর ঘটনায় বারবার মোদীর নাম সামনে আসছে। কিন্তু, মোদী একটা অজুহাত মাত্র। জি২৩ নেতৃত্বকে চিঠি লেখার পরই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তারা আসলে চায়, কেউ যাতে তাদের চিঠি না লেখে, তাদের নিয়ে প্রশ্ন না-তোলে। অনেক বৈঠক (কংগ্রেস) হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত একটাও পরামর্শ শীর্ষ নেতৃত্ব মেনে চলেননি।'
তাঁর পদত্যাগপত্রে দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীকে আজাদ ভুরিভুরি অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের তিরে রয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। চিঠিতে আজাদ অভিযোগ করেছেন, রাহুল গান্ধীর জন্যই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে সামগ্রিক আলোচনার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দলের যাঁরা বর্ষীয়ান নেতা, অভিজ্ঞ নেতা, তাঁদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর, তার বদলে দলে অনভিজ্ঞ এবং অনুগত্যে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
কংগ্রেসে রাহুলকে নিয়ে দলের প্রবীণ নেতাদের দীর্ঘদিনের সমস্যা। দলের মধ্যেই রাহুল তাঁর নিজস্ব লবি গড়ে তুলে প্রবীণ নেতাদের কার্যত ক্ষমতাচ্যুত করে তুলেছিলেন। এই অভিযোগে কংগ্রেসের শীর্ষ প্রবীণ নেতারা জি২৩ গোষ্ঠী গড়ে তুলেছেন। সেই গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে আগেই কপিল সিবাল, জিতিন প্রসাদ ও যোগানন্দ শাস্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আজাদ তালিকায় চতুর্থ নাম।
তবে, গুলাম নবি আজাদ যেভাবে তাঁর পদত্যাগপত্রে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, বাকি তিন নেতাকে তেমনটা করতে দেখা যায়নি। এর আগে দলত্যাগী কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে এমনভাবে রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছে হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি অবশ্য কপিল সিবাল বা গুলাম নবি আজাদের মত সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতা ছিলেন না। আর, কংগ্রেস ছাড়ার পরই হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে দেখা গিয়েছে বিজেপিতে যোগ দিতে। আজাদও কি তাহলে হিমন্ত বিশ্বশর্মার পথ ধরেই বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন? অথবা, বিজেপির ঘনিষ্ঠ কোনও রাজনৈতিক দল গড়াই কি তাঁর লক্ষ্য?
আরও পড়ুন- বুলবুলির পিঠে চেপে জেল থেকে বেরোতেন সাভারকর, কর্ণাটকের স্কুল পাঠ্যবইয়ে আজব কাহিনি
সেই প্রশ্ন কার্যত যেন তুলে দিয়েছেন আজাদ নিজেই। আজাদের নাম না-করে রাহুল গান্ধী আগে অভিযোগ করেছেন, দলের কেউ কেউ বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁরা কংগ্রেস ছাড়লে দলের কোনও অসুবিধা হবে না-বলেই জানিয়েছিলেন রাহুল। আজাদও তারপর তাঁর বক্তব্যে মোদীর ভূয়ষী প্রশংসা করেছেন। জানিয়েছেন, মোদী সম্পর্কে আগে তাঁর মন্দ ধারণা ছিল। পরে, তিনি বুঝতে পেরেছেন, সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ছিল।
Read full story in English