আর কয়েক দিনের মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরে পৌঁছবে 'ভারত জোড়ো যাত্রা'। তার আগেই কংগ্রেসের বিরটা সুখবর। কংগ্রেস ত্যাগী গুলাম নবি আজাদের দল ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি ছেড়ে ফের হাত ধরলেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তারা চাঁদ সহ একাধিক শীর্ষ নেতা। শুক্রবার কংগ্রেসের সাংগঠনের দায়িত্বেপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ এবং এআইসিসি রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত রজনী পাতিলের উপস্থিতিতে গুলাম নবি আজাদ ঘনিষ্ঠ তারা চাঁদ, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পীরজাদা মোহাম্মদ সাঈদ, মনোহর লাল এবং বলওয়ান সিংয়ের ঘরওয়াপসি ঘটে।
গুলাম নবি আজাদের অনুগত হিসাবে তারা চাঁদ, পীরজাদা মোহাম্মদ সাঈদ, মনোহর লাল এবং বলওয়ান সিং পরিচিত। গত অগাস্টে আজাদের সঙ্গেই কংগ্রেস ছেড়েছিলেন এঁরা। সেই সময়, রাহুল গান্ধীরও প্রবল সমালোচনা করেছিলেন। তবে, আজাদ ডিসেম্বরে মাসেই তারা চাঁদ, মনোহর লাল এবং বলবন সিংকে 'দলবিরোধী কার্যকলাপ'এর অভিযোগে ডেমোক্র্যাটিক আজাদ পার্টি থেকে বহিষ্কার করেছিলেন।
ঘরওয়াপসি হওয়া নেতাদের দলে স্বাগত জানিয়ে কে সি বেণুগোপাল বলেছেন, ' ভারত জোড়ো যাত্রার আগেই জম্মু-কাশ্মীরে দলের জন্য এটা আনন্দের উপলক্ষ ছিল। কারণ উপত্যকার কংগ্রেস নেতৃত্বের ভুল বোঝাবুঝি ছিল। ফলে বেশ কয়েকজন আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফের তাঁরা বাড়িতে ফিরে এসেছেন। আসলে এই নেতারা দুই মাসের জন্য দল থেকে ছুটি নিয়েছেন। এবার ছুটি শেষে ফে তাঁরা দলে ফিরে এসেছেন।' আরও দু'জন দলত্যাগী নেতার ঘরওয়াপসি ঘটবে বলে দাবি করেছেন জয়রাম রমেশ।
তারা চাঁদ, মনোহর লাল এবং বলওয়ান সিং ছাড়াও যাঁরা কংগ্রেসে ফিরেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পিসি-র প্রাক্তন সভাপতি এবং তিনবারের মন্ত্রী পীরজাদা মোহাম্মদ সাঈদ, মহম্মদ মুজাফফর প্যারে, মহিন্দর ভরদ্বাজ, ভূষণ ডোগরা, বিনোদ শর্মা, নরিন্দর শর্মা, নরেশ শর্মা, অম্বরীশ মাগোত্রা, সুভাষ ভগত। , সন্তোষ মানহাস, বদ্রী নাথ শর্মা, বরুণ মাগোত্রা, অনুরাধা শর্মা, বিজয় তারগোত্রা এবং চন্দর প্রভা শর্মা (ডিএপি-র সিনিয়র মহিলা নেত্রী)।
কে সি বেণুগোপালের কথায়, 'উপত্যকার সম সমমনস্ক রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীরা ভারত জোড়ো যাত্রায় অংশ নেবেন। যা দেশে একটি বড় আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। যাত্রা যখন জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবেশ করবে তখন কংগ্রেসের আদর্শে বিশ্বাসী, অখণ্ড ভারতের দাবিদাররা যাত্রায় যোগ দেবে।'
ঘরওয়াপসিকারী তারা চাঁদ বলেন, 'আমরা সারা জীবন কংগ্রেসে কাটিয়েছি। কিন্তু মাঝখানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন আমরা আবেগের বশে হুট করে একটা ভুল পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। যে দলটি আমার মতো একজন দরিদ্র ব্যক্তিকে একটি পরিচয় দিয়েছে, আমাকে একজন বিধায়ক, সিএলপি নেতা, বিধানসভার স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার বানিয়েছে, সেই কংগ্রেস দল আমি আবেগে প্রলুব্ধ হয়ে এবং কারও বন্ধুত্বের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ছেড়েছিলাম। দলত্যাগ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।'
ঘনিষ্ঠরা কংগ্রেসের ফিরলেন, এবার কী ফিরবেন আজাদ? বেণুগোপাল বলেন, 'তিনি নিজেই অস্বীকার করেছেন ফেরার কথা। আমরা বলেছি যাঁরা ভারত জোড়া যাত্রার আদর্শে বিশ্বাসী তারা ভারত জোড়ো যাত্রায় যোগ দিতে পারেন। সকলকে স্বাগত।'
এ বছরই জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হতে পারে। কংগ্রেস ছেড়ে উপত্যাকার রাজনীতিতে তাক লাগানোর চেষ্টায় ছিলেন গুমা নবি আজাদ। কিন্তু প্রায় সকল ঘনিষ্ঠদের দলত্যাগে আজাদের রাজনৈতিক দলের শক্তি নিয়েই কার্যত প্রশ্ন উঠছে।