Advertisment

হিজাব বিতর্ক, নেপথ্যে গভীর পরিকল্পনা?

কর্নাটকের তরুণ বিজেপি তেজস্বী সূর্য। তাঁর একাধিক তির্যক মন্তব্য নানা সময় নানা বিতর্ক তৈরি করেছে। তিনিও হিজাব ইস্যুতে সংসদে চুপ ছিলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Girls barred from class, Unease in BJP section, attempt to dial down

হিজাব বিতর্ক নিয়ে ভাগ গেরুয়া শিবিরে।

হিজাব বিতর্ক নিয়ে ভাগ গেরুয়া শিবিরে। একটি সূত্র বলছে, যে কর্নাটক সরকার এবং রাজ্য বিজেপির একটি অংশ উদুপির কয়েকটি সরকারি কলেজে হিজাব নিয়ে ছোট-ছোট দলে বিক্ষোভকে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় মদত দিয়েছে। এমনকী বিষয়টি উচ্চ আদালতে পৌঁছনোর পক্ষেও সায় ছিল পদ্ম নেতাদের ওই অংশের। বিতর্কটি জাতীয় স্তর পর্যন্ত যাতে পৌঁছতে পারে সেব্যাপারেও চেষ্টা ছিল ওই নেতাদের। এর পিছনে কারণ ছিল অবশ্য ভিন্ন।

Advertisment

হিজাব বিতর্ক নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে। হিজাব ইস্যুতে অনেক তরুণীর সঙ্গে বা তাঁদের পিছনে থাকা প্রতিবাদী পুরুষদের ভিড়ও চোখে পড়েছে। সেই ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। স্কুলছাত্রী এমনকী শিক্ষিকরাও তাঁদের মাথার স্কার্ফ খুলে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন। কাউকে কাউকে স্কুল থেকে বাড়ি যেতে বলা হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে কর্নাটক বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের মধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে। বিশেষ করে মন্ত্রী বিধায়কদের অস্বস্তি বহুগুণে বেড়েছে।

তবে কর্নাটকের এই হিজাব বিতর্কের শেকড় কিন্তু বেশ গভীরে। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "এটি এমন একটি সময়ে হল, যখন আমরা বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও-এর কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী মুসলিম মহিলাদের ক্ষমতায়নের একটি পদক্ষেপ হিসেবে তাঁর সরকারের তিন তালাক নিষেধাজ্ঞাকে তুলে ধরার কথা বলছেন।" হিজাব ইস্যুতে দিল্লিতে বিজেপির সিনিয়র নেতারা মন্তব্য এড়িয়েছেন। লোকসভায় বিরোধীরা বিষয়টি তুলে ধরতে চাইলে কোলার প্রতিনিধি এস মুনিস্বামী ছাড়া বিজেপির অনেক সাংসদ এগিয়ে আসেননি। এমনকী তেজস্বী সূর্য, যাঁর একাধিক তির্যক মন্তব্য নানা সময় নানা বিতর্ক তৈরি করেছে, তিনিও এব্যাপারে শান্ত ছিলেন।

অন্যদিকে, বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরার শিক্ষামন্ত্রীও বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলেছেন। এনডিএ-শাসিত বিহারে, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানান, বিহারে হিজাব কোনও সমস্যাই নয়। সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান করা হয়। বিজেপি শাসিত হিমাচল প্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী গোবিন্দ সিং ঠাকুর বলেন, ''এখনও পর্যন্ত স্কুলগুলিতে অভিন্ন পোশাক বিধির বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে না।'' এক বিজেপি নেতা জানান, দল CAA-বিরোধী বিক্ষোভের মতো হিজাব ইস্যু নিয়েও আন্দোলন সংগঠিত হওয়ার আতঙ্কে ছিল। কারণ, এই বিক্ষোভে মুসলিম মহিলারাই সামনে ছিলেন। তিনি বলেন, "সিএএ নিয়ে প্রাথমিক উত্সাহ এবং প্রচার সত্ত্বেও, সরকার এখনও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পাশ হওয়া আইনের জন্য নিয়ম তৈরি করেনি।''

হিজাব বিক্ষোভের একটি মূল পার্থক্য আছে। CAA সরাসরি বিশ্বাস এবং পরিবারের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু এখন আগের চেয়ে বেশি মুসলিম মেয়েরা স্কুল ও কলেজে যাচ্ছেন। এই ধরনের একটি বিধি সেই প্রবণতাকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন আর এক বিজেপি নেতা। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অবশ্য বলেন, ''কর্নাটকের ইস্যুটির নিরসণের পথ খোঁজা চলছে। মেয়েরা তাঁদের মাথা ঢেকে রাখার জন্য ইউনিফর্মের একটি অংশ দোপাট্টা হিসেবে ব্যবহার করতেই পারে। এব্যাপারে পদক্ষেপ করতে রাজ্যকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দলীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি না রেখে বরং সমস্যা মেটানোর পথ খুঁজছে বলেই মনে হচ্ছে।''

আরও পড়ুন- ইসলাম ধর্মে হিজাব বাধ্যতামূলক নয়, হাইকোর্টে জানাল কর্ণাটক সরকার

এদিকে, হিজাব ইস্যুতে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাইয়ের ঘনিষ্ঠরা কিন্তু তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করা অনুচিত। এর দায়িত্ব পার্টির রাজ্য নেতৃত্বের উপরেই বর্তায়। বোমাই ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, ''তাঁরা এই আগুন নেভাতে কী করেছেন? এমনকী তাঁরা সরকারকে রক্ষা করার জন্যও হাজির হননি।''

এদিকে, বিজেপির রাজ্য মিডিয়া ইনচার্জ লোকেন্দ্র পরাশর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ''মহিলা কী পরতে চান তা নির্ধারণের অধিকার তাঁদের আছে। এটি তাঁদের সমস্যা। ড্রেস কোড ইতিমধ্যেই আছে। আমরা শুধু নারীদের ক্ষমতায়ন করতে চাই। যাতে তাঁরা হিজাব পরা উচিত কি না সে বিষয়ে তাঁরাই একটি স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।… স্কুল এমন কোনও জায়গা নয় যেখানে ধর্মীয় আলোচনার বিষয়বস্তু হওয়া উচিত। স্কুলগুলি শিক্ষা প্রদানের জন্য।''

Read full story in English

bjp karnataka Hijab row
Advertisment