বয়স ৫০ ছুঁইছুঁই। ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা টেনিস খেলোয়াড়। জীবনে খ্যাতি-যশ কোনও কিছুই পাওয়ার বাকি নেই। সেই লিয়েন্ডার পেজ কিছুদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। টেনিসকে বিদায় জানিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ঘাসফুল পতাকা নিয়ে নয়া কোর্টে নেমেছেন লিয়েন্ডার। এবার নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।
সংবাদসংস্থআ পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লি বলেছেন, সমাজ ধর্মীয় মেরুকরণ এবং জাতিবিদ্বেষের কারণে ভাগ হয়েছে। এর পরিবর্তন ঘটাতে চান তিনি। লিয়েন্ডারের কথায়, "আমি সবসময় দেশের সেবা করতে চেয়েছি। যে কোনও ভাবেই হোক। তিরিশ বছর আগে টেনিস খেলতে শুরু করেছিলাম। তখন আর এখন আমার লক্ষ্য একই রয়েছে। দেশের সেবা করা। শুধু মাধ্যমটা পাল্টেছে।"
তৃণমূলে যোগ দিয়েই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ লি। মমতাকে জন্মগত নেত্রী বলেছেন তিনি। যিনি যেটা ভেবে নেন, সেটা করে দেখান। লিয়েন্ডার বলেছেন, "২০১৪ সালে আমি বলেছিলাম, আমি রাজনীতিতে যোগ দিতে চাই। অনেক অল্প বয়স থেকেই আমি দেশের সেবা করতে চেয়েছি। দেশকে গর্বিত করতে চেয়েছি। খেলোয়াড় হিসাবে বিশ্বমঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছি ৩০ বছর। এখন আমি মনে করেছি, এটাই সঠিক সময় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার।" সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য মমতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন লি।
লিয়েন্ডার আরও বলেছেন, "এখন আমার সময় আছে আমার প্যাশন, এনার্জি দিয়ে রাজনীতিতে আমার যাত্রায় ফোকাস করার। মমতা দিদির সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কারণে এই স্বস্তিজনক পরিস্থিতিতে নয়া অধ্যায় শুরু করলাম।" দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে লি বলেছেন, এখন রাজনীতি দেশের মানুষকে ধর্ম এবং জাতিতে ভাগ করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে। একইরকম ভাবে বংশপরিচয় নিয়েও কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুন শুভেন্দুকে ‘শকুন অধিকারী’ কটাক্ষ, শান্তিপুরের ফলাফল নিয়ে কড়া তোপ কুণালের
"যখন দেখি বিভেদের রাজনীতি করে সমাজকে ধর্ম, জাতি, বর্ণে ভাগ করা হয় তখন খুব দুঃখ হয়। আমি নিজে অনেকবার আমার বংশপরিচয় নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছি। আমি বাঙালি মা এবং গোয়ানিজ বাবার সন্তান। কিন্তু আমি একজন ভারতীয়। আমি মনে করি রাজনীতি সুদক্ষ প্রশাসনের লক্ষ্যে করা উচিত। কারণ সুস্থ, সুখী মানুষই একটা ভাল দেশ তৈরি করতে পারে।"
১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম, পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত লিয়েন্ডারকে প্রশ্ন করা হয় তিনি পরের বছর গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছেন কি না। তার উত্তরে তিনি বলেছেন, "আমি একজন টিমম্যান। আমরা আলোচনা করি, ভাবনা জানাই, কথাবার্তা হয়, আর সিদ্ধান্তও টিম হিসাবেই হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের টিমের ক্যাপ্টেন। তিনি যদি আমাকে প্রার্থী করতে চান তাহলে তিনি সেটা আমাদের সবাইকে জানাবেন।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন