Advertisment

তোপের মুখে কম্পিউটার নজরদারি নিয়ে বিবৃতি কেন্দ্রের

শুক্রবার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের বিরোধী দলগুলি, এবং এটিকে মৌলিক অধিকারের ওপর আক্রমণ বলে বর্ণনা করে। একাধিক বিরোধী নেতা বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার ভারতকে একটি নজরদারি রাষ্ট্রে পরিণত করছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দশটি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে বৃহস্পতিবার কম্পিউটার নজরদারির অনুমোদন দেওয়ার পর শুক্রবার দিনভর বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় সরকার। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই নজরদারির বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ওই সংস্থাগুলিকে "কোনো নতুন ক্ষমতা" প্রদান করা হয় নি, এবং এই একই নিয়ম ২০০৯ সালে ইউপিএ সরকারও চালু করে।

Advertisment

কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, নতুন নিয়মে ক্ষমতার অনধিকার প্রয়োগ বন্ধ হবে, এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, নয় সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি লাগবে। তাদের বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, "দ্য টেলিগ্রাফ অ্যাক্টে ইতিমধ্যেই এই ধরনের সংস্থান এবং প্রক্রিয়া রয়েছে, একই রকম রক্ষাকবচ সমেত। গোটা প্রক্রিয়াটি কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয় যেমন টেলিগ্রাফ অ্যাক্টে বলা আছে।"

আরো পড়ুন: কম্পিউটারের ওপর নজরদারি, প্রতিবাদে উত্তাল বিরোধী শিবির

উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের মতে, "এখন অবধি কিছু স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি ছিল, ২০০৯ সালের প্রসিডিওর অ্যান্ড সেফগার্ডস ফর ইন্টারসেপশন, মনিটরিং অ্যান্ড ডিক্রিপশন অফ ইনফরমেশন রুলজ, যা এখন থেকে বিধিবদ্ধ পদ্ধতি হবে।"

নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, "২০ ডিসেম্বর, ২০১৮-এ জারি করা নির্দেশের মাধ্যমে কোনো সুরক্ষা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নতুন কোনো ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয় নি। এই বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী, টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারী, এবং মধ্যস্থতাকারীর উদ্দেশ্যে, বর্তমান নির্দেশগুলিকে বিধিবদ্ধ করার জন্য।"

শুক্রবার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের বিরোধী দলগুলি, এবং এটিকে অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক এবং মৌলিক অধিকারের ওপর আক্রমণ বলে বর্ণনা করে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও একাধিক বিরোধী নেতা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার ভারতকে একটি নজরদারি রাষ্ট্রে পরিণত করছে। তাঁর এক টুইটে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী লেখেন, "ভারতকে পুলিশের দেশ বানিয়ে দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না মোদী জি! ১০০ কোটি মানুষের কাছে এটাই প্রমাণ করছেন, আপনি কতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এক স্বৈরাচারী।"

আরো পড়ুন: ‘নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা’ মোদীকে কী বললেন রাহুল?

এর জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, কংগ্রেস "না ভেবেচিন্তে কথা বলছে"। তাঁর বক্তব্য, "কোনো গোয়েন্দাগিরি করার নির্দেশ দেওয়া হয় নি। রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা এবং আইন শৃঙ্খলার স্বার্থে তথ্য আটক করার সংস্থান তো রয়েছেই। এই নির্দেশে শুধুমাত্র বলা হয়েছে কোন কোন সংস্থাকে এই ক্ষমতা দেওয়া হবে। তাও স্রেফ সেইসব মামলায় যেগুলি আইটি অ্যাক্টের ৬৯ ধারার আওতায় পড়ে। এই ক্ষমতা ইউপিএ সরকারের সময়ও ছিল, এবং তার প্রয়োগও করা হয়।"

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো, নার্কোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস, ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স, সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি, ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং), ডিরেক্টরেট অফ সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স (শুধুমাত্র জম্মু কাশ্মীর, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং আসামের সার্ভিস এলাকার জন্য), এবং দিল্লির পুলিশ কমিশনারের ক্ষেত্রে।

কী কী রক্ষাকবচ রয়েছে? এক আধিকারিকের মতে, "২০০৯ এর আইটি রুলজের রুল নম্বর ২২ অনুযায়ী, ইন্টারসেপশন বা মনিটরিং বা ডিক্রিপশনের ক্ষেত্রে যে কোনো মামলা ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটির সামনে রাখতে হবে, এবং এই কমিটি এইসব মামলার পর্যালোচনা করতে দুমাসে অন্তত একবার বসবে। কোনো রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে এই ধরনের মামলা সংশ্লিষ্ট মুখ্য সচিবের অধীনস্থ একটি কমিটি রিভিউ করবে।"

কেন্দ্রীয় সংস্থাকে এই ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন হলো কেন? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, এর ফলে কোনো কম্পিউটারের তথ্য ইন্টারসেপশন বা মনিটরিং বা ডিক্রিপশনের ক্ষেত্রে সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলা হবে, এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করবে।

Read the full story in English

rahul gandhi narendra modi
Advertisment