রাজভবন-নবান্ন সংঘাতের মাঝেই ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে টুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিভিন্ন বিল নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে ফাটল আরও চওড়া হল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের। রাজ্যের প্রস্তাবিত বিভিন্ন বিল খতিয়ে দেখে তবেই তিনি অনুমোদন দেবেন বলে এদিন স্পষ্ট করেন ধনকড়। টুইটে রাজ্যপাল জানিয়ে দেন, অন্ধের মত নয়, সংবিধান মেনেই কাজ করবেন তিনি। নিজেকে রবার স্ট্যাম্প বা পোস্ট অফিস ভাবতে নারাজ তিনি।
বুধবার সকালে টুইটে রাজ্যপাল জানান, 'অন্ধের মত কোন সিদ্ধান্ত ননিতে পারি না। রাজ্যপাল হওয়ার দরুন সংবিধান মেনে চলতে হবে। আমি রবার স্ট্যাম্প বা পোস্ট অফিস নই। বিলগুলি সংবিধান সম্মত কিনা তা দেরি না করেই খতিয়ে দেখেছি। এই নিয়ে সরকারের দেরিতে উদ্বিগ্ন।'
জানা গিয়েছে এবার গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল, তফসিলি ও আদিবাসী নির্যাতন বিরোধী বিল, পুর সংশোধনী সহ বেশ কয়েকটি বিল রাজভবনের অনুমোদনের জন্য পাঠান হয়। কিন্তু বিলে রাজ্যপাল সম্মতি দেননি বলে জানা গিয়েছে। ‘রাজ্যপাল বিলে সই করছে না’, এই কারণে মঙ্গলবার বিধানসভা দু’দিনের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভায় অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, “রাজ্যপাল কোনও বিলে সই করছেন না। সেই কারণে আলোচনার কোনও বিষয় না থাকায় বুধবার ও আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভা মুলতুবি থাকবে”।
আরও পড়ুন: ‘সব কথার উত্তরের প্রয়োজন নেই’, মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ ধনকড়ের
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রাজভবনের তরফে বিধানসভার অধ্যক্ষের এই দাবি খণ্ডন করা হয়। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য় মুকুল রায় এই ঘটনার জন্য রাজ্য় সরকারকেই দায়ী করেন। বিষয়টিকে নজীরবিহীন বলে আখ্যা দেয় কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট। বিতর্ক মাথাচাড়া দিতেই অবশ্য টুইটে নিজের বক্তব্য জানিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাতেও বহু নেতার গোপনীয়তা খর্ব হচ্ছে’, বিস্ফোরক রাজ্যপাল ধনকড়
সম্প্রতি সংবিধান দিবস উপলক্ষে বিধানসভায় এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্য়পাল জগদীপ ধনকড়। সেখানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেদিন দু’জনে কথা বলা তো দূরে থাক, কেউ কারও দিকে তাকাননি পর্যন্ত। জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল হিসাবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের সংঘাত ক্রমশ বেড়েছে। কিন্তু বিলে সই না করার অভিযোগে বিধানসভা স্থগিত রাখার ঘটনা আক্ষরিক অর্থেই নজীরবিহীন।
এর আগে হেলিকপ্টার দেওয়া, জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করা, সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর মত একাধিক ইস্যুতে রাজ্যপাল-নবান্ন সংঘাত লক্ষ্য করা গিয়েছে। তবে এবারের বিরোধ রাজ্য রাজনীতিতে আগে কখনও ঘটেনি। যা কার্যত বিরল।