মণিপুর ও দিল্লি অধ্যাদেশ ইস্যুতে আজও সংসদে হট্টগোল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিরোধী জোটের নেতারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে মণিপুর নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবেন। এর মাঝেই সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে দিল্লির আমলাদের নিয়োগ এবং বদলি সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে একটি বিল পেশ করতে চলেছে। এর আগে বিলটি একটি অধ্যাদেশ আকারে এনেছিল সরকার। যার তীব্র বিরোধিতা করেছে দিল্লির ক্ষমতাসীন আপ সরকার। পাশাপাশি আজ মণিপুর ইস্যু নিয়ে আজও সংসদ উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মণিপুর ইস্যুতে বিজেপি সাংসদ প্রবেশ ভার্মা বলেছেন, 'বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সদস্যরা মণিপুর ইস্যুতে রাজনীতি করছে, অথচ তারা রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং বাংলা নিয়ে নীরব। দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মণিপুর ইস্যুতে অবিরাম কথা বলছেন এবং বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কখন কথা বলবেন আর কখন বলবেন না তা বিরোধীরা ঠিক করে দিতে পারে না। আজ তারা সবাই একত্রিত হচ্ছেন কারণ সকলেই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এবং সকলের ভয় যে মোদী সরকার যদি ফিরে আসে… তাদের সবাইকে জেলে পাঠাবে"।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, "আমরা বিরোধী জোটের প্রতিনিধি দল নিয়ে মণিপুর গিয়েছিলাম।" প্রধানমন্ত্রীরও উচিত তার নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যদের নিয়ে মণিপুরে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা"। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল বলেছেন, 'বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছে। আমরা তা মেনে নিয়েছি। বিরোধীরা এখন মোদীর বিবৃতির দাবিতে অনড়। বিষয়টির সমাধান হওয়া উচিত। মণিপুর নিয়ে রাজনীতি করছে বিরোধীরা'।
মণিপুর থেকে ফিরে আসা ২১ বিরোধী জোটের প্রতিনিধি দল বিরোধী সংগঠনের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে ইতিমধ্যেই সংসদ ভবনে পৌঁছেছেন। আজ সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদের মণিপুর নিয়ে আলোচনা করতে বলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি বলেন, 'বিরোধীদের উচিত মণিপুর নিয়ে আলোচনা করা। বিরোধীরা অস্থিরতা সৃষ্টির কাজ করছে'। মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধী জোটের সংসদ সদস্যদের দল আজ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাদের রিপোর্ট জমা দেবেন।
মণিপুর হিংসা'র মাঝেই ২০ জুলাই শুরু হয় সংসদের বাদল অধিবেশন। মাঝে দু'দিন বিরতির পর আজ সংসদে মোদী মন্ত্রিসভা দিল্লির আমলাদের নিয়োগ এবং বদলি সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে একটি বিল পেশ করতে চলেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দিল্লি পরিষেবা বিল পেশ করতে পারেন। অন্যদিকে দিল্লির আম আদমি পার্টি এই অধ্যাদেশের বিরোধিতা করছে। এমতাবস্থায় সংসদের উভয় কক্ষে ফের হট্টগোলের সম্ভাবনা রয়েছে। আম আদমি পার্টি এই বিলটি যে কোনও মূল্যে পাস হওয়া থেকে বিরত রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তবে ১৯ মে আনা অধ্যাদেশের তুলনায় এখন বিলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিল আনার আগে কেন্দ্রীয় সরকার 3A এবং 45D ধারায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেছে। ধারা 3A, যা অধ্যাদেশের অংশ ছিল, প্রস্তাবিত বিল থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়েছে।