কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বড়সড় অভিযোগ সামনে এনেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা বন্ধ করার জন্য করোনাকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া চিনের করোনা-বিস্ফোরণের মাঝে দেশের স্বার্থে রাহুল গান্ধীকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে গতকালই একটি চিঠি লিখেছেন। রাহুল গান্ধী হরিয়ানার নুহতে এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিপ্তে অভিযোগ করেন, তাঁর এই সফর বন্ধ করার জন্য কেন্দ্র করোনাকে ঢাল হিসাবে সামনে আনছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও আনেন কংগ্রেস সাংসদ। রাহুল বলেন, এই সফরের সাফল্য দেখে বিজেপি ভয় পাচ্ছে। এর আগে অনেক কংগ্রেস নেতা বলেছিলেন যে ‘ভারত জোড় যাত্রা ‘বন্ধ করতে করোনার ভয় দেখানো হচ্ছে।
নুহতে ভারত জোড়ো যাত্রার সময় জনগণের উদ্দেশে রাহুল গান্ধী বলেন, 'বিজেপি ভারত জোড়ো যাত্রা বন্ধ করতে অভিনব একটি কৌশল সামনে এনেছে। আমাকে একটি চিঠি লিখে বলা হয়েছে কোভিডে চোখরাঙানিতে ভারত জোড়ো যাত্রা বন্ধ করুন’। বিজেপি কংগ্রেসের শক্তি এবং সত্যকে ভয় পেয়ে এই ধরণের অজুহাতকে খাড়া করছে।
আরও পড়ুন: < কোভিড আতঙ্কে ফিরল চেনা ছবি, মাস্ক পরেই সংসদে হাজির মোদী >
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, ভারত জোড়ো যাত্রা ১০০ দিনের বেশি অতিক্রান্ত। এতে হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান, সব বর্ণ-ধর্মের মানুষ সামিল হয়েছেন। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়া যাত্রা ২১ ডিসেম্বর মেওয়াতের নুহ হয়ে হরিয়ানায় প্রবেশ করে। ২৩ ডিসেম্বর যাত্রা ফরিদাবাদ হয়ে দিল্লি পৌঁছাবে। ২৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে প্রবেশ করবে যাত্রা। আর হরিয়ানায় ভারত জোড়ো যাত্রার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ৬ জানুয়ারি।
কোভিড সংক্রমণের বিষয়ে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডাভিয়া রাহুল গান্ধীকে একটি চিঠি লিখে যাত্রা বন্ধ করার আবেদন করেছিলেন। এনিয়ে সালমান খুরশিদ বলেছেন, যাত্রা বন্ধ করা হবে না। সাংবাদিক বৈঠকে খুরশিদ বলেন, 'কংগ্রেস ভারত জোড়ো যাত্রায় সকল প্রকার কোভিডবিধি মেনে চলবে, কিন্তু যাত্রা কোনভাবেই বন্ধ করা হবে না’। খুরশিদ বলেন, 'গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রত্যেক দল ও ব্যক্তির নিজের মনের কথা বলার অধিকার রয়েছে। কংগ্রেসের এই সফরে সরকার আতঙ্কিত, তাই বিভিন্ন নির্দেশ ও চিঠি দেওয়া হচ্ছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে খুরশিদ বিজেপি সরকার যদি প্রশাসনের মাধ্যমে 'ভারত জোড় যাত্রা' বন্ধ করার চেষ্টা করে, তাহলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে এর জবাব দিতে হবে। সংসদে মুখোশ বাধ্যতামূলক করা এবং প্রধানমন্ত্রী মুখোশ পরে সংসদে পৌঁছানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে খুরশিদ বলেছিলেন, "প্রধানমন্ত্রী মোদী একজন খুব ভাল অভিনয় জানেন"।
উত্তরপ্রদেশে যাত্রার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গাজিয়াবাদের লোনি এলাকা থেকে ৩ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশে প্রবেশ করবে ভারত জোড়া যাত্রা। উত্তর প্রদেশে 'ভারত জোড়ো যাত্রা'-এর প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিলেন, 'অন্তত ১১ হাজার দলীয় কর্মী যাত্রায় অংশ নেবেন এবং তারা পুরো যাত্রায় পা মেলাবেন। কৃষক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন এবং তাঁতি সংগঠনকেও যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। এছাড়াও সমাজসেবক, লেখক, কবি ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বদেরও যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।