১৩ই অগাস্ট পর্যন্ত নয়, হয়তো তার আগেই সংসদের বাদল অধিবেশনে ইতি টানা হতে পারে। পেগাসাস, কোভিড মোকাবিলা, মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে সংসদের অভ্যন্তরে কেন্দ্রকে নিশানা করেছে বিরোধী সাসংসদরা। লোকসভা বা রাজ্যসভায় একই ছবি, বিরোধীদের স্লোগান, চেঁচামিচিতে প্রায় প্রত্যেকদিনই ব্যহত হচ্ছে সংসদের কাজ। সূত্রের খবর, এর প্রেক্ষিতেই শাসক শিবির চলতি বাদল অধিবেশন কাটছাঁটের বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।
এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, 'জনস্বার্থের সব ইস্যু নিয়েই সংসদে শাসক পক্ষ আলোচনা চায়। কিন্তু বিরোধিরা তা করতে নারাজ। কোভিড নিয়ে আলোচতনার কথা বলা হলেও বিরোধী দলের সাসংসদরা হইচই করে চলেছেন। এতে সময় ও মানুষের অর্থ নষ্ট হচ্ছে। তাই অধিবেশন ছেঁটে ফেলাই ভালো। চিন্তা ভাবনা চলছে।' তবে, সমসদের কাজ যাতে মসৃণভাবে চলে তার জন্য আগামী সপ্তাহের শুরুতে শাসক শিবির আরও একবার বিরোধীদের বোঝানোর চেষ্টা করবেন বলে ওই মন্ত্রী জানিয়েছেন।
পেগাসাস ইস্যুতে সংসদের উভয় কক্ষে বিরোধিরা আলোচনা চাইলেও তা নাকচ করে দিয়েছে মোদী সরকার। ফলে সংসদজুড়ে প্রবল প্রতিবাদে সোচ্চার বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাসংসদরা। তবে এর মধ্যেই বিরোধী কণ্ঠ রোধ করে সরকার পাঁচটি বিল পাস করিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ কংগ্রেস, তৃণমূল সাংসদের। সরকারকে রুখতে আন্দোলনের বিরোধিরা জোট বেঁধে আন্দোলনের রূপরেখা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। বিপরোধী এক সাসংদের কথায়, 'সংসদে পেগাসাসের আলোচনার অনুমতি ছাড়া কোনওকিছুই মানা হবে না। বিপরোধী শিবির ঐক্যবদ্ধ। এখান তেকে পিছনে যাওয়ার কোনও রাস্তা নেই।'
পেগাসাস ইস্যুতে সংসদের ভিতর-বাইরে সরকারকে বেগ দিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদস্য দিল্লি সফরে গিয়ে সোনিয়া-রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জোটের বার্তা দিয়েছেন। এচাড়াও তিনি বৈঠক করেন একাধিক বিজেপি বিরোধী নেতা-নেত্রীর সঙ্গে। পাগাসাস নিয়ে মোদী সরকারকে সংসেদর উভয় কক্ষে আলোচনায় বাধ্য করতে কংগ্রেস সাসংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গের নেত্বত্বে চলতি সপ্তাহেই বিরোধীদের সংসদীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক হয়েছে।
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী শুক্রবার বলেছেন, 'বিরোধিরা পেগাসাস সহ কৃষি আইন, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সদসদে আলোচনার দাবি করছে। কিন্তু সরকার তা করতে রাজি নয়। মোদী সরাকেরর কেন এই সিদ্ধান্ত?'
পেগাসাস নিয়ে সরকার এখনও নীরব। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী পেগাসাসকে বলেছেন, 'গুরুত্বহীন আলোচনার বিষবস্তু' বলে কটাক্ষ করেছেন। পেগাসাস ছাড়া জনস্বার্থবাহী যেকোনও ইস্যুতে সরকার আলোচনায় রাজি বলে তিনি জানান।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কৌশলে পাগাসাস ইস্যুতে বিরোধীদের উত্তাপ থামাতে ও সংসদ বানচালের দায়ে বিরোধীদের দায়ী করতেই আপাতত লোকসভা-রাজ্যসভার অধিবেশন আগেই বন্ধ করতে চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে গেরুয়া শিবির।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন