এ যেন একই যাত্রায় পৃথক ফল। একদিকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া মাত্রই তাঁকে বিদ্যুতের গতিতে সাংসদ হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা হল। অথচ, গুজরাটের এক বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হল না। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল, আমরেলির বিজেপি সাংসদ নারানভাই ভিখাভাই কাছাড়িয়াকে স্থানীয় আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।
তার ১৬ দিন পর, তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ পেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের কার্যালয় আমরেলির ওই বিজেপি সাংসদকে 'অযোগ্য ঘোষণা' করার কোনও চেষ্টাই করেনি। শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৬৮ বছরের নারানভাই ভিখাভাই কাছাড়িয়া বিজেপির টিকিটে আমরেলি থেকে পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন। গুজরাটের কৃষক ও পাতিদার সম্প্রদায়ের নেতা কাদাদিয়া ২০০৯ সাল থেকে সাংসদ নির্বাচনে জিতে আসছেন।
অথচ, রাহুল গান্ধীকে মানহানির মামলায় দুই বছরের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ার একদিন পরেই লোকসভার সাংসদ পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি যেহেতু দুই বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন, সেই কারণে সাংসদ হিসেবে তাঁর অপসারণের প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবেই শুরু করা হয়েছে। মঙ্গলবার, লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী কাছাড়িয়ার মামলার উল্লেখ করে রাহুলের অযোগ্যতার ব্যাপারে আলোচনা চেয়ে স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দেন।
সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত একজন দলিত ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে কাছাড়িয়াকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। আদালত তাঁকে উচ্চ আদালতে শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন করার জন্য ৩০ দিন সময় দিয়েছিল। আমরেলির সাংসদ প্রথমে গুজরাট হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। কিন্তু, গুজরাট হাইকোর্ট কাছাদিয়ার সাজায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় স্থগিতাদেশ দেয়নি। তারপরই উচিত ছিল, কাছাড়িয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার। কিন্তু, তা করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালের ২৯ এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কাছাড়িয়া স্বস্তি পান।
আরও পড়ুন- দু’মাস আগেই বিজেপির সঙ্গে মতপার্থক্যের কথা বলেছিলেন, সেই দলেই অ্যান্টনির ছেলে
লোকসভা সচিবালয় স্বীকার করে নিয়েছে যে ২০১৬ সালে গুজরাটের সাংসদ কাছাড়িয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে বিলম্ব হয়েছিল। যদিও গুজরাটের কংগ্রেস নেতারা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে কাছাড়িয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু, কিছুতেই কিছু হয়নি।