শপথ নেওয়ার একদিন পরে, বুধবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্য বিধানসভায় আস্থা ভোটে জয়ী হয়েছে। বিজেপি ও জননায়ক জনতা পার্টির (জেজেপি) মধ্যে জোট ভেঙে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে গতকালই ইস্তফা দেন মনোহর লাল খট্টর। এরপর সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ৫৪ বছর বয়সী ওবিসি নেতা নায়েব সিং সাইনি। তিনি বর্তমানে কুরুক্ষেত্রের বিজেপি সাংসদ। এই আসন থেকে ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন সাইনি।
উল্লেখ্য, জেজেপি তার বিধায়কদের অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য অনুপস্থিত থাকার জন্য একটি হুইপ জারি করা সত্ত্বেও, দেবেন্দর বাবলি, রাম কুমার গৌতম, ঈশ্বর সিং এবং যোগী রাম সিহাগ সহ চার জেজেপি বিধায়ক এদিন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন। বিরোধীরা গোপন ভোটের দাবি জানায়। কিন্তু স্পিকার তা অস্বীকার করেন।
হরিয়ানার নতুন মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং কুরুক্ষেত্র লোকসভা আসনের বিজেপি সাংসদ। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের অক্টোবরে, দল তাকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসাবে মনোনীত করে। সাইনি ১৯৯৬ সালে রাজনীতিতে প্রথম পা রাখেন। ২০০২, সাইনি আম্বালায় যুব শাখার জেলা সাধারণ সম্পাদক হন। ২০০৯ সালে, তাকে হরিয়ানায় বিজেপি কিষাণ মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত হন। সাইনি ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো আম্বালার নারায়ণগড় বিধানসভা থেকে বিধায়ক হন। ২০১৬ সালে, তাকে হরিয়ানা সরকারের শ্রম-কর্মসংস্থান মন্ত্রী করা হয়। সাইনিকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই মনে করা হয়। সাইনি ২০১৯ সালে কুরুক্ষেত্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং জিতেছিলেন।
৯০-সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির ৪১ জন বিধায়ক রয়েছে এবং সাত স্বতন্ত্র বিধায়কের মধ্যে ৬ বিধায়কের সমর্থনের পাশাপাশি হরিয়ানা লোকহিত পার্টির একমাত্র বিধায়ক গোপাল কান্দার সমর্থন রয়েছে বিজেপিতে। অন্যদিকে জেজেপির ১০ জন বিধায়ক রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের ৩০ জন বিধায়ক রয়েছে, যেখানে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদলের একজন বিধায়ক রয়েছেন।
হরিয়ানার নতুন মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনির নেতৃত্বাধীন সরকার বিধানসভায় আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করেছে। হরিয়ানা বিধানসভায় কণ্ঠভোটে আস্থা প্রস্তাব পাস হয়। মঙ্গলবার নবাব সিং সাইনির নেতৃত্বে হরিয়ানায় একটি নতুন সরকার গঠিত হয়। এর ঠিক একদিন পর বুধবার বিধানসভার একদিনের অধিবেশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে সরকার।
বিধানসভায় আস্থা ভোট নিয়ে আলোচনা চলাকালীন, নবাব সিং সাইনি বলেছিলেন, 'এটা তাঁর সৌভাগ্য যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বিধানসভায় এসেছেন'। হরিয়ানায় মিত্র দল জেজেপির সাথে জোট ভাঙার পরে, মনোহর লাল মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর সন্ধ্যায় হরিয়ানার বিজেপি সভাপতি নায়েব সিং সাইনিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়।
হরিয়ানা বিধানসভায় আস্থা ভোট পেশ করার পরে আলোচনার সময় মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি বলেছিলেন যে দলের পক্ষ থেকে আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আমি তা পালন করছি। বিজেপির কাজ দেখে মানুষ আবার বলছে ২৪-এ ফের 'মোদী সরকার'। তিনি বলেন, 'গত সাড়ে নয় বছরে হরিয়ানায় মনোহর লাল সরকার খুব ভালো কাজ করেছে'।