গত বছর লোকসভা নির্বাচনের ঠিক পরেই দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, "দেশ মে মোদী, দিল্লি মে ভাজপা, তভি বনেগি বাত, দিল্লি ভি চলেগি মোদী কে সাথ।"
মঙ্গলবার সকালে যখন দেশের রাজধানীতে ভোটগণনা শুরু হয়, তখনও আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ছে তিওয়ারির ভাবে-ভঙ্গীতে। "আমরা ৫৫টি আসন জিতলে অবাক হবেন না," সমবেত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি। সবে তখন প্রথমদিকের ট্রেন্ড প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।
প্রথম কয়েক রাউন্ড গণনার পর বিজেপির আশা ছিল, গোটা ২০ আসন এলেও আসতে পারে, যদিও ৩৬-এর 'ম্যাজিক ফিগারের' ধারেকাছেও নয় তা। সেই আশা অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। সকাল এগারোটা নাগাদই আরও সুস্পষ্ট হয়ে যায় ট্রেন্ড - নিছক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নয়, আরও অনেক বেশি পেতে চলেছে আম আদমি পার্টি (আপ)।
এতে অবশ্য দমে যাওয়ার পাত্র নন মনোজ তিওয়ারি। ফের একবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন: "অন্তত ২৭টি আসনে ভোটের ব্যবধান ৭০০ থেকে ১,০০০।" ততক্ষণে দিল্লির রোজ অ্যাভিনিউয়ে আপ-এর সদর দফতরে মিষ্টি বিতরণ শুরু হয়ে গিয়েছে, যদিও মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কড়া নির্দেশে বাজি পোড়ে নি একেবারেই।
আরও পড়ুন: অনুরাগ, পরবেশদের প্ররোচনামূলক প্রচারের বিধানসভাগুলোয় খাবি খাচ্ছে বিজেপি
একে একে নিভতে থাকল আশার প্রদীপ। যেসব আসনে ভোটের ব্যবধান ক্ষীণ, সেগুলিতে গণনার শেষ পর্বে পাল্লা ঝুঁকল আপ-এর দিকে।
বিকেল চারটে নাগাদ দেখা গেল, ৭০টির মধ্যে মোট সাতটি আসনে এগিয়ে বিজেপি, যা ২০১৫-র চারটি আসনের চেয়ে বেশি, কিন্তু সভাপতি মশায়ের ৫৫টি আসনের চিহ্নমাত্রও নেই। বিজেপির পক্ষে একমাত্র আশার আলো - ৩২.২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৮.৭ হয়েছে তাদের ভোটের হার। এতক্ষণে পরাজয় স্বীকার করে কেজরিওয়ালকে অভিনন্দন জানালেন তিওয়ারি।
"দিল্লির সকল ভোটদাতাকে ধন্যবাদ। সকল কর্মীকে তাঁদের পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ... আমরা দিল্লির মানুষের রায় মাথা পেতে নিলাম। অরবিন্দ কেজরিওয়ালজিকে অভিনন্দন," টুইট করেন তিওয়ারি।
এর আগে শনিবার নিজের ভোট দেওয়ার পর তিওয়ারি বলেছিলেন, ২২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে চলেছে বিজেপি। "আমরা গত কয়েক বছর ধরে জয়ের অপেক্ষায় আছি। আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় (সিক্সথ সেন্স) বলছে, দিল্লিতে সরকার গড়বে বিজেপি, ৫০ টিরও বেশি আসনে জিতে।"
বিজেপির পাশাপাশি পরাজয় ঘটল সেই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়েরও।