বিজেপি বিরোধী জোটের আওয়াজ তুলেছেন। সাক্ষাৎ করেছেন সোনিয়া-রাহুল গান্ধী সহ বিরোধী দলগুলির প্রধানদের সঙ্গে। গত সংসদ অধিবেশনে নানা ইস্যুতে মোদী সরকারের বিরোধীতায় কংগ্রেস-তৃণমূল সাসংসদদের অধিবেশন কক্ষে একযোগে সরব হতেও দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, এরপর পরিস্থিতি পাল্টেছে। গত কয়েক মাস ধরে নাগাড়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছে জোড়া-ফুল বাহিনী। ত্রিপুরা থেকে গোয়া, মেঘালয় থেকে হরিয়ানা- কংগ্রেস ভাঙছে। নেতারা যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। ফলে এই দুই দলের সম্পর্ক এখন তলানীতে। এর ছায়া আসন্ন সংসদের বাদল অধিবেশেও নজরে পড়তে পারে।
তৃণমূল নেতৃত্ব সাফ জানিয়েছেন যে, সংসদ অধিবেশনের আগে কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠকেই দলীয় সাংসদরা হাজির থাকবে। এমনকী অধিবেশন কক্ষেও কংগ্রেস-তৃণমূল শিবিরের সমন্বয় সাধন হবে না।
বাংলার শাসক শিবিরের মতে, দেশজুড়ে কংগ্রেস ক্ষীণ শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। বিজেপি বিরোধী কোনও আন্দোলনই সংগঠিত করতে ব্যর্থ। ফলে, হাত শিবিরের নেতৃত্বে বিরোধী জোটের বিষয়টি অলীক স্বপ্নের মতো। প্রায় শক্তিহীন একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে বিরোধী বৈঠকে হাজির হওয়া ভুল বার্তার শামিল বলেই মনে করছে তৃণমূল। নেতৃত্বের সাফ দাবি, আরজেডি, শিবসেনা, ডিএমকে কংগ্রেসের সবযোগী। ফলে তাদের সঙ্গে হাত শিবিরের সম্পর্ক এবং তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি পৃথক। মনে রাখতে হবে, কয়েক মাস আগেই বাংলার বিধানসভা ভোটে যখন বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল লড়াই করছে তখন বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে মমতা সরকারের বিরোধীতায় নেমেছিল কংগ্রেস।
তৃণমূলের এক শীর্ষনেতার কথায়, 'কংগ্রেসের এখন শোচনীয় অবস্থা। মেঘালয়ে দল ভেঙেছে। গোয়ায় মাত্র চারজন বিধায়ক এখন কংগ্রেসের। পাঞ্জাবে হাত শিবিরের মধ্যে চরম মতভেদ রয়েছে। একই অবস্থা মধ্যপ্রদেশে। এই অবস্থায় ওরা আমাদের সঙ্গে কী আলোচনা করবে? ওদের সমন্বয় সাধনের কিছু নেই।'
তবে কী ২০২৪-এ বিরোধী ঐক্য দেখা যাবে না? অন্য এক তৃণমূল নেতার কথায়, 'যখন কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে নিয়ে মাত্র কয়েক মাস আগেই আমাদের বিরুদ্ধে বাংলায় লড়াই করল তখন কোথায় ছিল ঐক্য? আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের মত করে লড়াই করছি, করব। ওরা করেনি বলেই বিজেপির এই উত্থান।' কেন ২০১৬ সালে নোটবন্দির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাষ্ট্রপতি ভবন যাত্রার সময় কংগ্রেস সঙ্গ দেয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এই নেতা।
তৃণমূলের জাতীয় মুখপত্র তথা রাজ্যসভায় দলের নেতা ডেরেক ও'হ্রায়েন বলেছেন, 'এই অধিবেশনে কী নিয়ে আলোচনা হবে তা পূর্ব নির্ধারিত। তিন কৃষি আইন, সিবিআই-ইডি অধিকর্তার মেয়াদ বৃদ্ধির অধ্যাদেশ, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উপহাস, রাজ্যে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি, পেগাসা ইস্যু, মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে। এর বাইরে তো আলোচনার কিছু নেই'
এ প্রসঙ্গে অবশ্য দিল্লির কোনও কংগ্রেস নেতা মুখ খোলেননি। দলের রাজ্যসভার উপদলনেতা অনন্দ শর্মা বলেছেন, 'শাসকের মতোই বর্তমানে বিরোধী দল হিসাবেও কংগ্রেসের অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রধান বিরোধী দল হিসাবে সংবিধানের প্রতি আমাদের কর্তব্য রয়েছে। আমরা সতর্ক। জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেস গর্জে উঠবে- দেশবাসী কংগ্রেসের থেকে এই প্রত্যাশা করে।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন