Advertisment

কীভাবে কংগ্রেসের ‘৪০ শতাংশ কমিশন’ প্রচার কেড়ে নিল বিজেপির ৪০ শতাংশ আসন

২০১৮ সালের প্রাপ্ত আসনের তুলনায় সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ৪০ শতাংশ আসন হারায় বিজেপি

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
arnataka Polls 2023, Karnataka Assembly election, Karnataka Assembly polls, Karnataka BJP, Karnataka congress, Basavaraj Bommai, K S Eshwarappa, Political Pulse, Indian Express, India news, current affairs

নিজের পদত্যগা পত্র তুলে দিচ্ছে বাসবরাজ বোম্মাই

‘৪০ শতাংশ কমিশনে’ ৪০ শতাংশ আসন হারিয়ে ভরাডুবি কর্ণাটক বিজেপির। ১২ এপ্রিল, ২০২২ মুখ্যমন্ত্রী বোম্মাই সরকারের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ৪০ বছরের সন্তোষ পাটিল যিনি পেশায় এক ঠিকাদার, ‘৪০ শতাংশ কমিশনের’ মারাত্মক অভিযোগ আনেন। ঠিক তার পরেই তাঁকে একটি হোটেলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুখ পুড়েছিল রাজ্য বিজেপির।

Advertisment

নাম জড়ায় পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন মন্ত্রী  কে এস ঈশ্বরাপ্পার। তাঁর বিরুদ্ধে কার্যত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে বোম্মাই সরকার। সদ্য সমাপ্ত বিধান সভা নির্বাচনে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। কিন্তু তা সত্ত্বেও কর্ণাটক বিজেপির সঙ্গে ৪০ শতাংশ কমিশন শব্দটি যেন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে যায়। এনিয়ে কম কটাক্ষ করেনি বিরোধী শিবির। আর ভোটের ফলাফল সামনে আসতেই অবাক করা কাণ্ড।‘৪০ শতাংশ কমিশনের’দলের তকমা পাওয়া কর্ণাটক বিজেপি আগের অর্থাৎ ২০১৮ সালের প্রাপ্ত আসনের তুলনায় ৪০ শতাংশ আসন হারায়।  

শনিবারের ফলাফল অনুসারে বিজেপি ২২৪ আসনের মধ্যে  ঘোষিত মাত্র ৬৫টি আসন পেয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজেপি ১০৪টি আসন জেতে। সেবারের তুলনায় বিজেপি চলতি বিধান সভা নির্বাচনে  40 শতাংশ আসন কম পেয়েছে। নির্বাচনে প্রচারের দৌড়েও '৪০ শতাংশ কমিশনে’ বিজেপিকে বিদ্ধ করেছে কংগ্রেস। আর বিজেপিকে রাজ্য থেকে উৎখাত করেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “  ‘নফরত কি বাজার বন্ধ হো গই হ্যায়, মহব্বত কি দুকান খুল গই হ্যায়। (ঘৃণার বাজার বন্ধ হয়েছে, ভালোবাসার দোকান খুলেছে)।’

কংগ্রেসে যোগদানকারী প্রাক্তন আইএএস আধিকারিক শশিকান্ত সেন্থিলের প্রস্তাবিত এই ধারণার ওপর জোর দিয়েই বিধান সভা নির্বাচনে কংগ্রেসের বাজিমাত। এর মধ্যে সবচেয়ে অভিনব ছিল কংগ্রেসের 'পে সিএম' প্রচারাভিযান। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোম্মাইয়ের ছবি 'PayCM' ট্যাগলাইনে বেঙ্গালুরু শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি হায়দ্রাবাদ পর্যন্ত দলের প্রচারে টানানো বিভিন্ন ব্যানারে লেখা ছিল, "৪০ শতাংশ কমিশন সিএমকে স্বাগতম"।

কর্ণাটক স্টেট কন্ট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ)-এর একাধিক প্রেস মিটে রাজ্য জুড়ে কমিশনের বিষয়টিও কংগ্রেসকে নির্বাচনী ফায়দা তুলতে বহুগুণে সাহায্য করে। ঠিকাদার সন্তোষ পাতিল মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগেই কর্ণাটক স্টেট কন্ট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ)-এর তরফে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে এক চিঠিতে সরকারের দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরা হয়।

মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে দুর্নীতি কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে অধিকাংশ আসনে এটাই ছিল কংগ্রেসের প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকদের টিম প্রাক নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন অধিকাংশ বিধানসভা আসন ঘুরে দেখেন, সাধারণ মানুষের মধ্যেও মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতি ইস্যু একটা নির্বাচনী ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান ডি কে শিবকুমার এবং বিরোধীদলীয় নেতা সিদ্দারমাইয়াও নির্বাচনের প্রচারে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতিকেই হাতিয়ার করে ‘রেট কার্ড’ প্রদর্শন করে ফ্লেক্স, ব্যানারে বিজ্ঞাপন দেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, প্রতি ক্ষেত্রেই কীভাবে কমিশন আদায় করছে বিজেপি সরকার। কংগ্রেসের ডিজিটাল প্রচারের ক্ষেত্রেও বিজেপিকে দুর্নীতির ইস্যুতে নিশানা করা হয়।

কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বি এস শিবনা জোর দিয়ে বলেছেন যে বিজেপির "৪০ শতাংশ কমিশন" –এর প্রচার বিজেপির বিধানসভা হাতছাড়া হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। তিনি বলেন, “জনগণ বিজেপি সরকারের দুর্নীতিতে বিরক্ত। কংগ্রেস জনসাধারণকে বোঝাতে পেরেছে। ৪০ শতাংশ কমিশন" –এর প্রচার সত্যিই বিজেপিকে পরাস্ত করেত দলকে সাহায্য করেছে।”

বিজেপির মুখপাত্র এম জি মহেশ এই ধারণার সঙ্গে একেবারেই একমত নন। তিনি বলেন, জেডিএস-এর ৬ শতাংশ ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে এসেছে। দুর্নীতির বিষয়ে বিজেপি সরকারকে ক্রমাগত নিশানা করা ঠিকাদার সমিতির সভাপতি ডি কেম্পান্না বলেন, ‘বিধান সভা নির্বাচনের ফলাফলে আমি খুশি, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার রাজ্যকে দুর্নীতির আঁতুড়ঘর বানিয়েছিল। এখন দেখার কংগ্রেস সরকার কী করে? যদি কংগ্রেস ও একই কাজ করে তাহলে আমাদের আন্দোলন জারি থাকবে”।

karnataka elections
Advertisment