Advertisment

বুয়ার পথেই বাবুয়া? হাত ছাড়তে চায় সাইকেলও!

কংগ্রেসের 'দীর্ঘসূত্রিতা'য় বিরক্ত হয়ে মুখ খুললেন অখিলেশ। তিনি বলেন, "কংগ্রেস আমাদের দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করিয়েছে"। ফলে, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে হাত-সাইকেল জোট কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

হাত ছাড়ার ইঙ্গিত

তিন রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-বসপা জোট হচ্ছে না, সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন 'ক্ষুব্ধ' মায়াবতী। এবার 'বুয়া'র সেই ঘোষণার চার দিনের মাথায় কংগ্রেসের 'দীর্ঘসূত্রিতা'য় বিরক্ত হয়ে মুখ খুললেন 'বাবুয়া'। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ সিং যাদব এদিন বলেন, "কংগ্রেস আমাদের দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করিয়েছে"। ফলে, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে হাত-সাইকেল জোট কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনে ৬ সপা প্রার্থীর নাম ঘোষণার পাশাপাশি এদিন অখিলেশ জানান, জোটের বিষয়ে তাঁর দল বরং মায়বতীর সঙ্গে কথা বলবে।

Advertisment

সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে গন্ডোয়ানা গণতন্ত্র পার্টি (জিজিপি) ও বসপা-র সঙ্গে জোট করতে আগ্রহী মুলায়ম-পুত্র। উল্লেখ্য, জিজিপি-র সঙ্গে অতীতেও জোট করেছে সপা। তবে, এ ক্ষেত্রে সপা-বসপা জোটের সম্ভবনাকেই সবচেয়ে তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। চলতি বছরে উত্তরপ্রদেশের একাধিক লোকসভা ও বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে সপা-বসপা জোটের 'ম্যাজিক' চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছে রাজনীতির কারবারিদের। খোদ যোগী আদিত্যনাথ ও কেশব প্রসাদ মৌর্যের লোকসভা আসনেও লজ্জার হার স্বীকার করতে হয়েছে বিজেপি-কে। ফলে, উত্তরপ্রদেশ রাজনীতির দুই সাবেক যুযুধান যদি একসঙ্গে লড়ে তাহলে কী ফল হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে বুঝেছে গেরুয়া শিবির। এদিকে, সপা-বসপার এই যৌথ সাফল্য শুধু উত্তরপ্রদেশেই সীমাবদ্ধ খাকবে বলেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না বিজেপি। কারণ, মধ্যপ্রদেশে মোট জনসংখ্যার একটা বৃহত্ অংশ দলিত সম্প্রদায়ভুক্ত। ফলে, সেখানে মায়াবতীর দল বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে। আর এরসঙ্গে সপা যোগ দিলে সংখ্যালঘু ভোটের একটা বড় অংশও চলে যাবে সে দিকে। এছাড়া, সার্বিক প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া-সহ ব্যাপম কেলেঙ্কারি, কৃষক অসন্তোষের মতো ইস্যুগুলিও একটানা তিন বার ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।

উত্তরপ্রদেশের গত বিধানসভা নির্বাচনে অখিলেশের সপা-র সঙ্গে জোট বেঁধেছিল কংগ্রেস। নির্বাচনের ফলে সেই জোট সাফল্য না পেলেও পরবর্তীকালে উপনির্বাচনে সপা-বসপার অসাধারণ সাফল্য উত্সাহিত করেছিল রাহুল গান্ধীর দলকে। এই পরিস্থিতিতেই আঞ্চলিক দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে অ-বিজেপি মহাজোটের স্বপ্ন দেখেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কিন্তু, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে নিজেদের 'যথেষ্ট শক্তিশালী' মনে করায়, সেখানে বসপা-কে বিধানসভা নির্বাচনে আসন ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস। অন্যদিকে, বসপা নেত্রী মায়াবতীও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সবকটি রাজ্যে আসন সমঝোতা আ হলে তবেই তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে রাজি। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের ২৩১টি আসনের মধ্যে ৪০টি আসন দাবি করেছিল মায়াবতীর দল। পাশাপাশি, রাজস্থানের ক্ষেত্রেও যে অনুরূপ 'প্যাকেজ ডিল' করতে হবে, সে কথা স্পষ্ট করে দেন 'বহেনজি'। কিন্তু, এই প্রস্তাবে বেঁকে বসে রাজস্থান কংগ্রেস। তারা জানিয়ে দেয়, এই সমঝোতা হলে বসাপা-ই কেবলমাত্র লাভবান হবে। কারণ, রাজস্থানে এই মুহূর্তে নিজের ক্ষমতায় কুর্সি দখলের আশায় বুঁদ কংগ্রেস। আর তাই মায়াবতীকে আসান ছাড়তে নারাজ তারা। এরপরই এই তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসর সঙ্গ ত্যাগের কথা জানিয়ে দিয়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন মায়াবতী। ইতিমধ্যে ছত্তিশগড়ে, কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত নেতা অজিত যোগীর সঙ্গে জোটের কথাও ঘোষণা করে দেন তিনি। তবে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জোটের দরজা একেবারে বন্ধ করে দেননি মায়াবতী। এমতাবস্থায় প্রায় একই সিদ্ধান্ত নিলেন অখিলেশ সিং যাদবও।

কর্ণাটকে 'ছোট শরিক' জনতা দল সেকুলার-কে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিয়ে কংগ্রেস দেশের অ-বিজেপি আঞ্চলিক দলগুলিকে যে বার্তা দিতে চেয়েছিল, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহে তা ফের গুলিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। কংগ্রেস এখনও 'বড় দা' মানসিকতা থেকে বেরতে পারেনি বলেই মনে করছেন তাঁরা। আর সে জন্যই মায়বতীকে আসন ছাড়তে আপত্তি ও অখিলেশকে কতগুলি আসন দেওয়া যায়, তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থ কংগ্রেস। তবে, মায়াবতী এই বিধানসভায় কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগের কথা ঘোষণা করার পর রাহুল গান্ধী বলেছেন, এ সবই বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেওয়া সিদ্ধান্ত। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এই সিদ্ধান্তের কোনও প্রভাব পড়বে না। এখন দেখার, রাহুলের এই মূল্যায়ন সফল হয়, না কি প্রস্তাবিত জোটে এমন ফাটল গেরুয়া শিবিরের মুখের হাসিকেই চওড়া করে।

CONGRESS Madhya Pradesh
Advertisment