শুক্রবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাষণে রাহুল গান্ধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে 'গুপ্তচরবৃত্তির' অভিযোগ আনেন। তিনি আরও বলেন, “ভারতীয় গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে। আমরা গণতন্ত্রের ওপর হামলাকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি।” রাহুল গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বলেন, “আমার ফোনেও আড়ি পাতা হয়েছিল। বিপুল সংখ্যক রাজনীতিবিদদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। ফোনে কথা বলার সময় আমাকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল।"
রাহুল গান্ধী তার বক্তৃতায় সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ, নজরদারি, ভয় দেখানো, সংখ্যালঘু, দলিত ও আদিবাসীদের ওপর হামলার অভিযোগ তোলেন। রাহুল গান্ধী তাঁর লন্ডন সফরকালে 'ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের' (IOC)প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন এবং লন্ডনে "ভারতীয় প্রবাসী সম্মেলনে"ও ভাষণ দেবেন।
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “ভারত রাজ্যগুলির মধ্যে ধর্মীয় বৈচিত্র্য রয়েছে। শিখ, মুসলিম, খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ ভারতে বসবাস করেন। কিন্তু মোদীজি তাদের 'দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক' বলে মনে করেন। আমরা কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত 'ভারত জোড়া যাত্রা' করেছি। এই যাত্রার সময়, আমি সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট সমস্যার কথা বোঝার চেষ্টা করেছিলাম। 'ভারত জোড়া যাত্রা'য় মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পা মিলিয়েছিলেন"।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, 'বিরোধীদের কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। বিরোধী দলের নেতা-মন্ত্রীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধেও অনেক 'ফৌজদারি মামলা' দায়ের করা হয়েছে। যেগুলো আদতে ফৌজদারি মামলার আওতায় নেই। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক ভাষণে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেন, তিনিও পেগাসাস হামলার শিকার।
তিনি আরও বলেন, “অনেক রাজনৈতিক নেতাদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। আমার নিজের ফোনেও আড়ি পাতা হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা আমাকে ফোন করে সতর্ক থাকার কথা বলেছিলেন"। রাহুল গান্ধী আরও বলেন, "ভারতে গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। আমি একজন বিরোধী নেতা। আমরা সর্বক্ষণ তা অনুভব করি। সংসদ, সংবাদমাধ্যম, বিচার ব্যবস্থা সমস্ত কিছুকেই প্রভাবিত করা হচ্ছে। ফলে গোড়াতেই আমাদের হাত-পা বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।"
রাহুল গান্ধীর বক্তব্যের পালটা জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তাঁর কথায়, "বিদেশের মাটিতে গিয়ে ভারতের নিন্দা করছেন রাহুল গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে বিশ্বের প্রতিটি দেশ ভারতের উন্নয়নের তারিফ করে। ভারত সম্পর্কে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর কী চিন্তাভাবনা তা একবার রাহুলের শুনে আসা উচিৎ'।