‘মনে হচ্ছে রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি।’ শুক্রবার বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যে আলোড়িত হয় রাজ্য রাজনীতি। সেই রেশ না কাটতেই শনিবার ফের ফেসবুক পোস্ট করলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এই পোস্টে ক্ষোভ এবং অভিমান উগরে দিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, 'কিছু মানুষ খুব ধুর্ত আর কৌশলি হয়ে উঠেছে। সহজ সরল ভাষা ভাবনাকে বাঁকিয়ে দুমড়ে মুচড়ে একটা অন্য রূপ দিয়ে মা মাটি মানুষের জনপ্রিয় সরকারকে বদনাম করতে চায়, বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলে বিশেষ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায়।' বিধায়ক মনে করেন সমালোচকরা এখনই থামবেন না। তাই আপাতত ফেসবুকে তিনিই থামছেন বলে জানিয়েছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। টিভিতেও কোনও সাক্ষাৎকার দেবেন না বলে দাবি করেছেন বিধায়ক।
সংগ্রামী জীবন। জেলবন্দি দশা। সাইকেল চালিয়ে দিন গুজরান। সেখান থেকে ক্রমেই লেখক হিসাবে পরিচিতি লাভ হয়েছে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর। কুড়িয়েছেন জনপ্রিয়তা। একুশের ভোটে এহেন মনোরঞ্জনকেই বলাগড় থেকে প্রার্থী করে তৃণমূল। নেত্রীর আস্থার মর্যাদা রেখেছেন তিনি। বিধায়ক হয়েই নিজের লকেন্দ্রের মানুষদের সেবায় নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছেন। বলাগড়ে বাড়ি ভাড়া করে থাকছেন, জনসেবায় কিনেছেন টোটো। কিন্তু, শুক্রবার হটাৎই তাঁর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধে। লিখেছিলেন, 'মনে হচ্ছে রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি।’ তাহলে কী ফের তৃণমূলে দমবন্ধ অবস্থা তৈরি হচ্ছে? জল্পনা তুঙ্গে ওঠে।
আরও পড়ুন- “রাজনীতিতে এসে ঠিক কাজ করিনি”, দু’মাসেই ‘হাঁপিয়ে’ উঠেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী
পরে অবশ্য মনোরঞ্জন ব্যাপারী নিজেই ওই লেখার ব্যাখ্যা দেন। বলেন, 'বহু মানুষ আমার থেকে জনপ্রতিনিধি হিসাবে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে থাকেন। কিন্তু আমার ক্ষমতা সীমীত। এই না দিতে পারার বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত বেদনার। যা আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।' অর্থাৎ ওই পোস্টের সঙ্গে দল বা কাজ করতে না পারার কোনও যোগ নেই বলে স্পষ্ট করে দেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। তিনি লিখেছেন, 'যারা এই বিপুল জনাদেশ নিয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে আসা মা মাটি মানুষের দল তৃনমূল দলটাকে যেমন সহ্য করতে পারছে না, আমাকেও সহ্য করতে চাইছে না ছত্রিশ হাজার ভোটে পিছিয়ে থাকা অঞ্চল থেকে নয় হাজার ভোটে আমার জিতে যাওয়া। তাই সময় সুযোগ পেলেই আমাকে নানা কায়দায় বিপাকে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। '
বিধায়ক কাজের মাধ্যমেই সমালোচকদের জবাব দিতে চান। তাঁর কথায়, 'ওরা থামবে না। কিছু না কিছু করতেই থাকবে। তাই মনে হচ্ছে আমার থেমে যাওয়া উচিৎ। লেখা আর বলা আপাতত কিছুকাল বন্ধ থাকুক। এখন কাজ করতে থাকি। দলিত দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে যা করা যায়, সীমিত ক্ষমতার মধ্যে যতটুকু করা যায়। আমার কাজ আমার হয়ে যা বলার তা বলবে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন